কৃষ্ণেন্দু অধিকারী, অনির্বাণ বিশ্বাস, ও দীপক ঘোষ, কলকাতা: শনিবার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ব্রাত্য বসুকে ঘিরে বিক্ষোভের ঘটনায় ব্যাক্তিগতভাবে তৃণমূল নেতারা প্রতিবাদ করলেও, দলগতভাবে তৃণমূলের তরফে প্রথমে কোনও পোস্ট করা হয়নি সমাজমাধ্যমে। যা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করে বিরোধীরা। অবশেষে ঘটনা ঘটার ২৪ ঘণ্টা পর তৃণমূলের অফিসিয়াল পেজে যাদবপুরকাণ্ড নিয়ে পোস্ট করা হয়। যদিও বিষয়টিকে গুরুত্ব দিতে নারাজ শিক্ষামন্ত্রী। সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী বলেন, ‘আমি বলছি মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী রেসপন্স করুন। ঠিক করেছে? না বেঠিক করেছে? ‘
শিক্ষাঙ্গনে হেনস্থার শিকার হয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী! ব্রাত্য বসুকে ঘিরে বিক্ষোভ হয়েছে। তাঁর গাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে। এখানেই শেষ নয়, পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে, শিক্ষামন্ত্রীকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হয়েছে! হাসপাতালে ব্রাত্য বসুকে দেখতে ছুটেছেন কুণাল ঘোষ, মদন মিত্রের মতো নেতারা। শিক্ষামন্ত্রীকে হেনস্থার প্রতিবাদে পথে নেমেছেন অরূপ বিশ্বাসের মতো তৃণমূলের হেভিওয়েট মন্ত্রী!কিন্তু এতকিছুর পরও, রবিবার বিকেল পর্যন্ত তৃণমূলের অফিসিয়াল ফেসবুকই হোক বা এক্স হ্যান্ডেল, কোথাও ঘটনার উল্লেখ ছিল না! ছিল না কোনওরকম প্রতিবাদ। কিন্তু কেন? তা নিয়েই তৈরি হয়েছে জল্পনা। প্রশ্ন উঠতে শুরু করে, তাহলে কি শনিবার শিক্ষামন্ত্রীর গাড়িতে এইভাবে এক পড়ুয়াকে ধাক্কা মারাকে সমর্থন করছে না তৃণমূলের সর্বোচ্চ নেতৃত্ব?
সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী বলেন,কাঁচা নাটক, ধরা পড়ে গেল। উনি এত অসুস্থ হয়ে গেলেন যে, হাসপাতালে গিয়ে উনি নাকি বিপি মাপা হচ্ছে, উনি ফোন করছেন, বিপি মাপা হচ্ছে। এই যে নাটক সবাই বুঝে গেছে। মানুষ বুঝে গেছে। সবচেয়ে ভাল জানে ব্রাত্য বসু। তৃণমূল জানে। তৃণমূলের অফিসিয়াল পেজে একটা শব্দ নেই। তৃণমূলের অফিসিয়াল পেজ, ট্যুইটার (এক্স) একটা শব্দও উল্লেখ করতে পারলেন না।
শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু বলেন, আমরা হলে নাটক, বিরোধীরা করলে স্বাভাবিক… আসলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়…আমাদের অধ্যাপকরা আক্রান্ত হলে স্বাভাবিক। শনিবার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ব্রাত্য বসুকে ঘিরে বিক্ষোভ বা হেনস্থার ঘটনা নিয়ে তৃণমূলের অফিসিয়াল পেজ থেকে কিছু পোস্ট করা হয়নি ঠিকই, কিন্তু ব্যক্তিগতভাবে কয়েকজন নেতা একাধিক পোস্ট করেছেন। যেমন তৃণমূল কাউন্সিলর অরূপ চক্রবর্তী তাঁদের মিছিলের ছবি পোস্ট করেছেন। এক্স পোস্ট করে ঘটনার সমালোচনা করেছেন তৃণমূল বিধায়ক মদন মিত্র। তৃণমূলের অন্য়তম রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ ব্রাত্য বসুর পাশে দাঁড়িয়ে এক্স পোস্ট করেছেন। বলেছেন, শিক্ষামন্ত্রী এবং তৃণমূল সমর্থক অধ্যাপকরা সংযমের পরিচয় দিয়েছেন। কিন্তু নেতারা ব্যক্তিগতভাবে পাশে দাঁড়ালেও, রবিবার বিকেল পর্যন্ত দলগতভাবে প্রতিবাদ করে কোনও পোস্ট নকরা হয়নি কেন?
আরও পড়ুন, চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের মামলায় এবার পুলিশকর্মীদের CBI তলব, ঘটনার দিন RG Kar আউটপোস্টে কর্মরত ছিলেন এই ১১ জন !
তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেন, হ্যাঁ সেটা করা হয়নি, আজ অথবা কাল করা হবে। শেষমেশ রবিবার বিকেল চারটে ৭ মিনিটে, এক্স হ্যান্ডলে তৃণমূলের অফিসিয়াল পেজে যাদবপুরকাণ্ড নিয়ে পোস্ট করা হয়।SFI-এর দুষ্কৃতীরা ও তাদের কমরেডরা শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর উপর আক্রমণ করেছে। তাঁর গাড়ি ভাঙচুর করার পাশাপাশি হিংসা ছড়ানো হয় এবং যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়কে ব্যক্তিগত যুদ্ধক্ষেত্রে পরিণত করা হয়েছে। গতকালের ‘হার্মাদ’ আজকের ‘জল্লাদ’ হয়ে উঠেছে। এটি ছাত্র রাজনীতি নয়। আইন-শৃঙ্খলা, গুন্ডামি এবং অপরাধ।
আরও দেখুন