কলকাতা: নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের করা মন্তব্য নিয়ে মুখ্য নির্বাচন কমিশনারকে চিঠি। মুখ্য নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ কুমারকে চিঠি দিলেন শুভেন্দু অধিকারী। ‘মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর মাননীয় সচিবকে করে দেওয়া হয়েছে মুখ্য নির্বাচন কমিশনার’। টোটালটাই বিজেপির লোক দিয়ে ভরা, গতকাল কর্মিসভায় এই মন্তব্য করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মন্তব্যের জেরে নির্বাচন কমিশনের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হয়েছে, এই অভিযোগে মুখ্য নির্বাচনী কমিশনারকে চিঠি বিরোধী দলনেতার।
কারচুপির অভিযোগে কাঠগড়ায় তুললেন নির্বাচন কমিশনকে
বাংলা দখল করতে ভোটার তালিকায় ভুয়ো ভোটার ঢোকাচ্ছে বিজেপি। তালিকায় ঢোকানো হচ্ছে হরিয়ানা, রাজস্থান, বিহার, পাঞ্জাবের বাসিন্দাদের নাম। নেতাজি ইন্ডোরে দলের সাংগঠনিক বৈঠক থেকে এমনই অভিযোগ করলেন মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়। কারচুপির অভিযোগে কাঠগড়ায় তুললেন নির্বাচন কমিশনকে।ঘুরিয়ে প্রশ্ন তুললেন, মুখ্য় নির্বাচন কমিশনারের নিরপেক্ষতা নিয়ে। ভুয়ো ভোটার খুঁজতে কমিটি গড়ে দিয়েছেন তৃণমূলনেত্রী। স্বচ্ছ ভোটার তালিকা চেয়ে সুর চড়িয়েছে বিজেপিও।
ভুয়ো ভোটার ঢোকানোর অভিযোগ জোরালভাবে তুললেন মমতা
মুখ্য়মন্ত্রী মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায় বলেন, একই এপিক নম্বরে বাংলার ভোটারের যেখানে নাম আছে, সেখানে হরিয়ানা, পাঞ্জাব, রাজস্থান, বিহার, সব নাম ঢুকিয়েছে। রাজ্য়সভার সাংসদ বিজেপি নেতা শমীক ভট্টাচার্য বলেন, বিজেপিও বদ্ধপরিকর পশ্চিমবঙ্গের ভোটার তালিকা পরিচ্ছন্ন করতে।’তেনাদে’র নিয়ে তরজা আরও তুঙ্গে। নেতাজি ইন্ডোরের মেগা সাংগঠনিক বৈঠক থেকে ফের একবার বাংলার ভোটার তালিকায় ভিন রাজ্য় থেকে ভুয়ো ভোটার ঢোকানোর অভিযোগ জোরালভাবে তুললেন মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়।
‘বুঝতে পারছেন খেলাটা? মাথায় কিছু ঢুকল?’
মুখ্য়মন্ত্রী বলেন, ধরুন একটা নাম মুর্শিদাবাদের রানিনগরে বাড়ি মহম্মদ শাহিদুল ইসলাম, এর এপিক কার্ড নম্বর যেটা আছে পশ্চিমবঙ্গে, তাঁর সঙ্গে নাম যুক্ত করেছে সোনিয়া দেবী। তাঁর বাড়ি কোথায়, তাঁর বাড়ি হচ্ছে হরিয়ানা। মহম্মদ আলি হোসেন, রানিনগরে বাড়ি তাঁর সঙ্গে নাম তুলেছে কার,মনজিৎ, তাঁর বাড়ি হরিয়ানা। বানেরা বিবি, রানিনগর তাঁর সঙ্গে নাম তুলেছে কার, দীপক। বাবার নামও আছে। বাড়ি কোথায়? হরিয়ানা। তাহলে পশ্চিমবঙ্গ ভোট দেবে না হরিয়ানা ভোট দেবে, পশ্চিমবঙ্গে? বুঝতে পারছেন খেলাটা? মাথায় কিছু ঢুকল?
‘বিজেপির যেখানে সরকার, বিজেপি সেখানে তারা কারচুপি করে’
সরকার যার, কারচুপির ক্ষমতা তো তার। মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়কে পাল্টা খোঁচা দিয়ে মন্তব্য় অধীর চৌধুরীর। প্রাক্তন কংগ্রেস সাংসদ অধীর চৌধুরী বলেন, ‘যাদের সরকার তাদের দায়িত্ব এটা। কারচুপি করার ক্ষমতা তাদের আছে, যাদের সরকার, বিজেপির যেখানে সরকার, বিজেপি সেখানে তারা কারচুপি করে। পশ্চিমবঙ্গ যাদের সরকার তারা কারচুপি করছে।’সিপিএম রাজ্য় সম্পাদক মহম্মদ সেলিম বলেন, গ্রামে যেমন ভূত ধরতে ওঝা ডাকা হয়, তেমনই ভোটার তালিকায় ভুয়ো ভোটার ধরতে একটা কমিটি গঠন করে দিয়েছেন মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়। সুব্রত বক্সীর নেতৃত্বে এই কমিটিতে তিনি রেখেছেন অভিষেক বন্দ্য়োপাধ্য়ায়, কল্য়াণ বন্দ্য়োপাধ্য়ায়, ফিরহাদ হাকিম, অরূপ বিশ্বাসের মতো নেতাকে।
‘..টোটালটাই বিজেপির লোক দিয়ে ভরা’
মুখ্য়মন্ত্রী মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায় বলেন, একজনের নামে যদি ২টো এপিক কার্ড থাকে, ২ জনের নামে একটা কার্ডে, তাহলে কী হবে? তাহলে আপনাকে ছাঁটাই করে দিতে এক সেকেন্ড লাগবে। আর এটা করছে খোদ ইলেকশন কমিশনের আশীর্বাদে, ডেটা অপারেটরদের লক্ষ্য় রাখুন। আপনারা কি জানেন, সদস্য নির্বাচন কমিশনার হয়েছেন কে? মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর যিনি মাননীয় সচিব ছিলেন দফতরের, কো-অপারেশন দফতরের, তার সেক্রেটারিকে করে দিয়েছেন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার। টোটালটাই বিজেপির লোক দিয়ে ভরা। মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়কে পাল্টা চ্য়ালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছে বিজেপি। শমীক ভট্টাচার্য বলেন, প্রমাণ করুন। রাজনৈতিক দল, গণতান্ত্রিক দেশ, প্রত্য়েকের অধিকার আছে অভিযোগ করার। নির্বাচন কমিশনে গিয়ে প্রমাণ করুন। একাল কি সেকাল…তৃণমূল কী বিজেপি…দূর্ভাগ্য়ের বিষয় হল, ভুতুড়ে ভোটারের অভিযোগ বঙ্গ রাজনীতির পিছু ছাড়ে না।
আরও দেখুন