আবির দত্ত, চন্দননগর: রাতের হাইওয়েতে বেলাগাম তাণ্ডব এবং প্রায় ২০ কিলোমিটার পিছু ধাওয়া করে, বার বার গাড়িতে ধাক্কা মারার অভিযোগ। ঘটনার পর একটা দিন কেটে গেছে। এখনও পর্যন্ত গ্রেফতারি শূন্য। একদিকে ২০ কিলোমিটার ধাওয়া করে তরুণীকে কটূক্তি, অশালীন ইঙ্গিত করার অভিযোগ উঠল দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। আরেক দিকে, পুলিশের দেওয়া দুটি গাড়ির মধ্যে রেষারেষির তত্ত্ব। একমাত্র মেয়েকে হারিয়ে শোকে পাথর পরিবার।
২৭ বছরের সুতন্দ্রা চট্টোপাধ্যায়। মাত্র ৮ মাস আগে, মৃত্য়ু হয়েছে ক্য়ানসার আক্রান্ত বাবার। বাড়িতে মা, দিদা ও ঠাকুমা। সবকটা বয়স্ক মানুষ। চোখের জল ধরে রাখতে পারছেন না। সদা হাস্যমুখ মেয়েটা আর নেই তা এখনও বুঝেও বুঝতে চাইছেন না বৃ্দ্ধা ঠাকুরমা। এদিন তিনি বলেন, “আমি চাইছি যাঁরা এই নৃশংস কাজটা করেছে তাঁরা যেন শাস্তি পায়। মৃত্যুদণ্ড হয় যেন। আমার নাতনিটা চলে গিয়েছে। আমার নাতনি… কোথায় তদন্ত? কিছুই তো আসেনি। কেউ আসেনি। আমার নাতনিটা চলে গেল, আসছি ঠাম্মি বলে চলে গেল। পরের দিন সকালে বডি এল।”
ছোট থেকে নাচে, গানে পারদর্শী। বরাবরই নিজে কিছু করে দেখানোর চেষ্টা। সেখান থেকেই নিজের নাচের ট্রুপ। নিজের ইভেন্ট ম্য়ানেজমেন্ট সংস্থা। তাঁর ভরসাতেই চলত সংসার। সেই মেয়েটার এমন ভয়ঙ্কর পরিণতি, বিশ্বাস নিতে পারছেন না কেউ। পানাগড়ের এই ঘটনা ফের একবার প্রশ্নের মুখে ফেলে দিল নারী নিরাপত্তাকে। এরই মধ্যে রেষারেষির তত্ত্ব খাড়া করেছে পুলিশ। যা নিয়ে সরব হয়েছে মৃতার পরিবার।
পুুলিশের তত্ত্ব খারিজ করে পানাগড়ে গাড়ি উল্টে মৃত সুতন্দ্রা চট্টোপাধ্যায়ের মা বলেন, গাড়ির রেষারেষি নয়, মত্ত যুবকদের অশালীন আচরণ আর গাড়ির ধাক্কাতেই মেয়ের মৃত্যু হয়েছে। প্রশ্ন তুলেছেন, এ রাজ্যে মহিলাদের নিরাপত্তা নিয়েও। তিনি বলেন, “আমার মেয়ের গাড়ি চালক রেষারেষি করবে না। ওরা ধাওয়া করাতেই এই ঘটনা ঘটেছে। পরের পর মদের দোকান খুলছে, মত্ত দুষ্কৃতীদের দাপট তো বাড়বেই। কন্যাশ্রী আছে, কিন্ত কন্যারাই থাকছে না। হাজার টাকার লক্ষ্মীর ভাণ্ডার কাদের জন্য? আমার মেয়ে ছিল পরিবারের একমাত্র রোজগেরে, ওর ওপর নির্ভরশীল আমি, আমার মা ও শাশুড়ি। আমার পরিবারটা তো ভেসে গেল, এর দায় কে নেবে?”
আরও পড়ুন: West Burdwan Accident: নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সজোরে ধাক্কা, ফের দুর্ঘটনার কবলে কুম্ভগামী গাড়ি
আরও দেখুন