কলকাতা: রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের জেরে আচমকা ব্য়বসা বন্ধ হয়ে যায় ট্য়াংরার দে পরিবারের। বিপুল দেনা চেপে যায় দুই ভাইয়ের কাঁধে। চেক বাউন্স হতে শুরু করে। বাড়তে থাকে পাওনাদারদের চাপ। পাহাড় প্রমাণ দেনার চাপেই কি চরম সিদ্ধান্ত? উঠছে প্রশ্ন।
প্রতিদিনই সন্ধেয় ছাদে উঠে আরতি করতেন দুই বউ। সোমবারও তাঁদের দেখা গেছিল। কিন্তু, যে রাতে নেমে এল অন্ধকার, অর্থাৎ 0সেই মঙ্গলবার গোটা দিন এই বাড়িতে আর আলো জ্বলেনি। কেউ ঘুণাক্ষরেও টের পাননি, এইভাবে গোটা একটা পরিবারে নেমে আসবে বিপর্যয়। কিন্তু কী কারণে দে পরিবারের এই ভয়ঙ্কর পরিণতি হল? প্রাথমিকভাবে পুলিশের অনুমান, নেপথ্য়ে থাকতে পারে প্রণয় ও প্রসূন দুই ভাইয়ের চর্ম ব্য়বসায় লোকসান।
পুলিশ সূত্রে খবর, দুই ভাইয়ের চামড়ার সামগ্রীর ব্য়বসা। কোম্পানির নাম প্রোটেকটিভ লেদার গ্লাভস প্রাইভেট লিমিটেড। পুলিশের দাবি, বয়ানে এক ভাই জানিয়েছেন, ব্য়বসায় ক্ষতির জন্য়ই আত্মহত্য়ার সিদ্ধান্ত নেন তাঁরা। এই কোম্পানির গেটেও বুধবার সকাল থেকে তালা ঝুলতে দেখা যায়। নিরাপত্তারক্ষী হাফিজ মণ্ডল বলেন, “কাল অবধি কাজ হয়েছে। আজ সকালে দেখলাম তালা. লেবাররা ভিড় করেছিল। বলল দুর্ঘটনা হয়েছে। কোম্পানি বন্ধ আজ।” পুরসভার নথি বলছে, সংস্থার কর্ণধার হিসেবে নাম রয়েছে প্রণয়কুমার দে ও প্রসূনকুমার দে-র। সংস্থার ট্রেড লাইসেন্স শেষবার রিনিউ করা হয়েছিল ২০২৩-২৪ সালে। ২০২৪-এ ট্রেড লাইসেন্স ক্লোজ করে দেওয়া হয়। সূত্রের খবর, রাশিয়া ও জার্মানিতে চামড়ার সামগ্রী রফতানি করত দে পরিবারের কোম্পানি। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের সময় ব্যবসা বন্ধ হয়ে যায়। আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়ে বাজারে প্রচুর ধার-দেনাও হয়েছিল। পাশের বাড়ির কেয়ারটেকার জানিয়েছেন, মঙ্গলবার দিনভর বাড়ির বাইরে পাওনাদারদের আনাগোনা লেগে থাকলেও, কেউ দরজা খোলেননি। কলকাতা পুলিশ কমিশনার মনোজ ভার্মা জানিয়েছেন, “কোনও সুইসাইড নোট পাওয়া যায়নি। ওখানে কিছু কিছু মোবাইল পাওয়া গেছে। আমার দেখছি মোবাইলে কার কার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে।”
এদিকে ট্যাংরায় ৩ জনের রহস্যমৃত্যুর ঘটনায় এবার খুনের মামলা রুজু করল পুলিশ। মৃত গৃহবধূ রোমি দে-র বাবার দাবি, তাঁর মেয়েকে খুন করা হয়েছে। ট্যাংরা থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন তিনি। তার ভিত্তিতেই অজ্ঞাতপরিচয়ের বিরুদ্ধে খুনের মামলা রুজু করেছে পুলিশ।
আরও পড়ুন: Hooghly News: স্কুলের সহপাঠীকে হঠাৎ ঘুষি, ছাত্রের মৃত্যুতে উত্তপ্ত হুগলির চাঁপদানি
আরও দেখুন