‘রিঙ্গার ল্যাকটেটে কোনও গলদ নেই,’ স্যালাইন বিতর্কে মন্তব্য মমতার

কলকাতা: মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে প্রসূতি মৃত্যুর ঘটনায় নিষিদ্ধ রিঙ্গার ল্যাকটেট স্যালাইন দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল। যা নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়ে রাজ্যের স্বাস্থ্য ব্য়বস্থা। এই আবহে এবার মুখ্যমন্ত্রী দাবি করলেন, গুণগত মানে কোনও গলদ নেই সংশ্লিষ্ট স্যালাইনের।
মেদিনীপুর মেডিক্যালে প্রসূতির মৃত্যুতে কাঠগড়ায় ‘পশ্চিমবঙ্গ ফার্মাসিউটিক্য়াল’-এর তৈরি রিঙ্গার ল্যাকটেট স্যালাইন। পরিবার সূত্রে খবর পাওয়া যায়, ৮ জানুয়ারি রাতে মেদিনীপুর মেডিক্য়াল কলেজে, সুস্থ সন্তানের জন্ম দেন চন্দ্রকোণার বাসিন্দা, মামণি রুইদাস। পরিবারের অভিযোগ, স্য়ালাইন দেওয়ার পরই প্রসূতির শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে। ৯ জানুয়ারি রাতে মৃত্য়ু হয়। প্রসূতিদের রক্তক্ষরণ বন্ধে ব্য়বহার করা হয় ‘রিঙ্গার ল্যাকটেট স্যালাইন’। সামনে আসে ‘রিঙ্গার ল্যাকটেট স্যালাইনে’র পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার জেরেই মৃত্যু হয়েছে প্রসূতির। ঘটনার এক মাসেরও বেশি সময় পেরিয়ে গিয়েছে। এদিন মুখ্যমন্ত্রী দাবি করলেন, স্যালাইনে কোনওরকম গলদ নেই। এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “বিরোধীরা স্যালাইন-ইস্যু তুলেছেন…জানিয়ে দেবেন, মেদিনীপুর মেডিক্যালে যে ব্যাটের রিঙ্গার ল্যাকটেট ব্যবহৃত হয়েছিল তা স্টেট ড্রাগ কন্ট্রোল এন্ড রিসার্চ ল্যাবরেটরি টেস্ট করা হয়। তার গুণগত মানে গলদ নেই। সঠিক মানের স্যালাইনই হাসপাতালে পাঠানো হয়েছিল। সঠিক মানের ওষুধের প্রোটোকল রয়েছে, তাতে খারাপ মানের ওষুধ সরবরাহ করা অসম্ভব। সেন্ট্রাল মেডিক্যাল স্টোর হাসপাতালে স্যালাইন পাঠানোর আগে প্রতিটি ব্যাচ আলাদা করে পরীক্ষা করে দেখা হয়। এমনকী NABL থেকেও পরীক্ষা করানো হয়। হাসপাতাল সার্টিফিকেট দেখেই তবে সাপ্লাই রিসিভ করে।”
যদিও এর আগে স্বাস্থ্য় ভবনে পেশ করা তদন্ত কমিটির ৫ পাতার রিপোর্টে বলা হয়, ‘রিঙ্গার ল্যাকটেট’ বিশুদ্ধ না হওয়াই বিপত্তির কারণ বলে তাদের সন্দেহ। রিপোর্টে বলা হয়েছে,প্রসূতিদের অসুস্থতার কারণ হিসেবে, ‘RL ইনফিউশন’ এবং ‘অক্সিটোসিন ইঞ্জেকশনে’র ভূমিকা উড়িয়ে দেওয়া যায় না, তদন্ত কমিটির কাছে মেদিনীপুর মেডিক্য়ালের চিকিৎসকরা জানিয়েছেন। এখানেই কমিটির তদন্তে এও উঠে আসে যে, মেডিসিন বিভাগের রোগীদের ক্ষেত্রেও RL স্যালাইন প্রয়োগের পরই জ্বর এবং কাঁপুনি সমস্যা দেখা গেছে। সূত্রের খবর, তদন্ত কমিটির রিপোর্টে এও বলা হয়েছে, প্রসূতিদের সমস্যা বাড়িয়েছে ‘অক্সিটোসিনে’র অতিরিক্ত ব্যবহার। ৫ জন রোগীর ক্ষেত্রেই নিয়ম বহির্ভূতভাবে অতিরিক্ত মাত্রায় ‘অক্সিটোসিন’ দেওয়া হয়েছে।
এখানেই শেষ নয়, প্রসূতি মৃত্যুর ঘটনার জন্য় চিকিৎসকদের দায়ী করে রাজ্য সরকার। ১৩ জন চিকিৎসককে সাসপেন্ড করে স্বাস্থ্য দফতর। যার জল গড়িয়েছে আদালত পর্যন্তও। এই সাসপেন্ডেড চিকিৎসকদের মধ্য়ে একজন, সিনিয়র রেসিডেন্ট চিকিৎসক পল্লবী বন্দ্যোপাধ্যায় হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন। আদালতে পল্লবী দাবি করেছেন, তিনি প্রসূতিদের অ্যানাস্থেশিয়া করেছিলেন। অ্যানাস্থেশিয়ার কারণে প্রসূতির মৃত্যু হয়নি। তাঁকে অহেতুক সাসপেন্ড করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: Maha Kumbh 2025:”বড়লোকদের জন্য লক্ষ টাকার ক্যাম্প, আর গরিবদের জন্য…” মহাকুম্ভে বিপর্যয় নিয়ে আক্রমণ মমতার
আরও দেখুন