# Tags
#Blog

রাত পেরোলেই মাধ্যমিক, ভাঙা পড়ল অবৈধ বাড়ির ছাদ, শীতে খোলা আকাশের নিচেই প্রস্তুতি পরীক্ষার্থীর

রাত পেরোলেই মাধ্যমিক, ভাঙা পড়ল অবৈধ বাড়ির ছাদ, শীতে খোলা আকাশের নিচেই প্রস্তুতি পরীক্ষার্থীর
Listen to this article


অরিন্দম সেন, আলিপুরদুয়ার: রাত পেরোলেই মাধ্যমিক পরীক্ষা। জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষা নিয়ে কম বেশি চিন্তা তো রয়েছেই রাজ্যের সকল পরীক্ষার্থীদের। এদিকে সরস্বতী পুজোর পর ফের ফিরে এসেছে শীত। এদিকে এমন একটা মুহূর্তে খোলা আকাশের নিচে চাদর টানিয়ে প্রবল শীতে প্রস্তুতি নিতে হচ্ছে মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর ! এই ছবি আলিপুরদুয়ারের। 

মূলত রেলের জমিতে বাংলার আবাস প্রকল্প নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে আলিপুরদুয়ারে। এদিকে আবাস যোজনার টাকায় ছাদ বানিয়েও তা রেলের বাধায় খুলতে বাধ্য হয়েছেন। ফলে মাথার উপর কাপড়ের চাদর টানিয়েইই প্রবল শীতে প্রস্তুতি নিতে হচ্ছে মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর। রেলের জমিতে বাংলার আবাস যোজনার একাধিক উপভোক্তাদের এমনই অসহায় ছবি আলিপুরদুয়ার জংশন এলাকায়। যা নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক বিতর্ক। 

জানা গিয়েছে, উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের আলিপুরদুয়ার ডিভিশনের অন্তর্গত আলিপুরদুয়ার জংশন রেল  এলাকায় বেশ কয়েকমাস যাবত রেলের জমিতে অবৈধভাবে বসবাসকারীদের উচ্ছেদের নোটিশ দেওয়ার কাজ চলছে। এমতাবস্থায়, সেইসব নাগরিকদের মধ্যে অনেকেই আবার রাজ্যের আবাস যোজনার উপভোক্তার তালিকায়।

ফলে, রেলের জমিতে বসবাসকারী সেই সব উপভোক্তাদের ব্যাঙ্ক একাউন্টে আবাস যোজনার প্রথম কিস্তির ৬০ হাজার টাকা ঢোকার পর আরও বেশি  চাপে পরতে হচ্ছে বলে অভিযোগ উপভোক্তাদের। কারণ, তাদের অনেকেরই পুরনো বাড়ি ভেঙে ফেলতে হয়েছে। এবার আবাসের প্রথম কিস্তির টাকায় কংক্রিট নির্মাণ শুরু করতেই রেলের তরফে আসছে বাধা এবং উচ্ছেদের নোটিশ। সময়সীমা বেধে সতর্ক করেও দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ। 

এমতাবস্থায় সাধারন উপভোক্তারা মহা সমষ্যায় পড়েছেন বলে অভিযোগ। যেমন, বিবেকানন্দ-২ নং ব্লকের উত্তর-জিতপুরের ইন্দিরা বস্তির বাসিন্দা চন্দনা সাহানীর বাসস্থান এখন ছাদহীন। আবাসের টাকায় পুরনো ঘড় ভেঙে, খুটি দিয়ে নতুন কাঠামো বানিয়ে টিনের ছাদ দেবার চেষ্টা করেছিলেন। অভিযোগ, রেলের তরফে এসে তা খুলে ফেলতে বাধ্য করা হয়। এখন ছাদহীন ঘড়ে চাদর টানিয়েই রাত্রিযাপন করতে হচ্ছে। খোলা আকাশে করতে হচ্ছে রান্না। অথচ দুদিন বাদে মেয়ের মাধ্যমিক পরীক্ষা। প্রবল ঠান্ডায় খোলা আকাশের তলে মেয়েকে পড়তে হচ্ছে। মেয়ে-সহ তার নবম শ্রেনীর পড়ুয়া সন্তানের শরীরও খারাপ হয়ে গেছে। কী করবেন বুঝে উঠতে পারছেন না। 

একই সমস্যায় পড়েছেন সত্তোর্ধ বয়ষ্ক দম্পতি ভোপাল দাস ও তার স্ত্রী মনি দাস। ভোপাল দাস এই বয়সেও রিক্সা চালিয়ে জীবিকা চালান। দাবী, দীর্ঘদিন ধড়েই তারা বসবাস করছেন এখানে। এই প্রথম আবাস যোজনার টাকা ঢোকায় বাড়ি নির্মানের আশায় বুক বেধেছিলেন। কিন্তু রেলের তরফে বাধাদান ও উচ্ছেদের নোটিশে তারা এখন প্রবল বেকায়দায়। যা নিয়ে জেলা প্রশাসনকেই দায়ি করেছে জেলা বিজেপি নেতৃত্ব।

জেলা বিজেপির সাধারন সম্পাদক মিঠু দাস বলেন, জেলা প্রশাসন নিজেই প্রতিদিন তাদের সরকারি জমিতে অবৈধ নির্মান ভাঙছে। অথচ রেলের জমিতে রাজ্য সরকারি প্রকল্প নির্মানে উৎসাহিত করছে। এটা দ্বিচারিতা। ফলে, মানুষকে বিপদে ফেলে বোকা বানাচ্ছে। দায়ী তৃণমূলের জেলা প্রশাসন। 

আলিপুরদুয়ারের বিধায়ক তথা রাজ্য বিধানসভার পিএসি কমেটির চেয়ারম্যান সুমন কাঞ্জিলাল বলেন, ‘রেল গরিব মানুষের উপর বুলডোজার চালাচ্ছে। এটা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। মানবাধিকার উলঙ্ঘন করছে। রেলের খাস জমিতে দীর্ঘদিন বসবাস করা দরিদ্র মানুষের ঘড় সংষ্কারের জন্য মূখ্যমন্ত্রী বাংলার আবাস প্রকল্পের টাকা দিয়েছে। তাতে জমির চরিত্র বদলে যাবেনা। বিজেপি কি চাইছে সোজাসুজি বলুক !  তারা হাতে না মেরে ভাতে মারতে চাইছে গরীবকে।’ 

আরও পড়ুন, ‘কুপ্রস্তাবে’ অরাজি, ICDS কর্মীকে অ্যাসিড নিক্ষেপ ! কতটা জোরে চিৎকারে পার হওয়া যাবে এ যন্ত্রণা ? 

উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের আলিপুরদুয়ার ডিভিশনাল ম্যানেজার অমরজিৎ গৌতম বলেন, ‘প্রত্যেক দপ্তরের কিছু নিজস্ব সম্পত্তি হয়। রেকর্ড অনুযায়ি তা রেলের হলে আমাদের অধিকার আছে নোটিশ দেওয়া,  জমি আপনার নয় আপনি জমি খালি করুন। এবং এই ব্যাপারে রাজ্য সরকারের সহযোগিতা নিয়েই তা করা হয়। যাতে দখলদারদের সমস্যা না  হয়।’এই ব্যাপারে জেলা প্রশাসনসূত্রে জানাযায়, বিষয়টি তাদেরও নজরে এসেছে। ক্ষতিয়ে দেখে উপযুক্ত ব্যাবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

আরও দেখুন



Source link

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Review Your Cart
0
Add Coupon Code
Subtotal