কলকাতা: বিশ্ব বঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনে চাঁদের হাট। সেখান থেকে বাংলাকে বিনিয়োগের আদর্শ রাজ্য বলে উল্লেখ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জানালেন, বাংলা ব্যবসার আদর্শ জায়গা। বাংলায় ভয়ের কোনও জায়গা নেই, মাথা উঁচু করে বাঁচা যায় এখানে। আগামী প্রজন্মের স্বার্থে, মানুষের স্বার্থেই বছর বছর বিশ্ব বঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনের আয়োজন করেন তিনি। এ নিয়ে মানুষ ছাড়া কাউকে জবাবদিহির বাধ্যবাধকতা নেই বলেও জানান মমতা। (Mamata Banerjee)
বুধবার অষ্টম বিশ্ব বঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনে মুকেশ আম্বানি-সহ শিল্পপতিরা উপস্থিত ছিলেন। উপস্থিত ছিলেন ৪০ দেশের প্রতিনিধি। সেখানে মমতা বলেন, “বাংলার প্রভূত সম্ভাবনা রয়েছে। বাংলা দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার প্রবেশদ্বার। নারীর ক্ষমতায়নে বাংলা প্রথম। ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পে বাংলা এক নম্বরে, দক্ষতায় নম্বর বাংলায়। বাংলা শিল্প ও ব্যবসার গন্তব্য। সকলকে বলব, বাংলাই আপনাদের গন্তব্য, বাংলায় এলে সুফল পাবেন আপনারা।” (Bengal Global Business Summit)
বিনিয়োগ টানতে বছর বছর বিশ্ব বঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলন নিয়ে বিরোধীদের কটাক্ষ উড়ে আসে। সেই নিয়ে এদিন মঞ্চে দাঁড়িয়েই মুখ খোলেন মমতা। বলেন, “বছর বছর কেন সম্মেলন, জানতে চান অনেকে। আমি বলব, আমরা শুরু করেছিলাম। এখন সব রাজ্য করছে। এতে ভুল কী? যুবসমাজ, আগামী প্রজন্মকে উৎসাহিত করতে হবে। বিনিয়োগ বাড়াতে হবে, কর্মসংস্থান বাড়াতে হবে আমাদের। এগিয়ে যেতে হবে। নইলে যুবসমাজ পেরে উঠবে না।”
মমতা জানান, গত সাত সম্মেলন থেকে বাংলায় মোট ৯০ লক্ষ ৫১ হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগের প্রস্তাব এসেছে। এর মধ্যে ১২ লক্ষ কোটি টাকার প্রকল্প হয়ে গিয়েছে। বাকিগুলি ধাপে ধাপে হচ্ছে। মমতার বক্তব্য, “১৩-১৪ টাকার বিনিয়োগ হয়নি। রাজনৈতিক কারণে কাউকে কৈফেয়ত দেওয়ার নেই আমার। শুধুমাত্র মানুষের কাছে জবাবদিহি করতে বাধ্য আমি। দয়া করে সংখ্যাটা দেখুন। প্রমাণ হাতে নিয়ে বলছি। বাংলার প্রভূত সম্ভাবনা রয়েছে। দেশের মধ্যে বাংলার অর্থনীতি অন্যতম বৃহত্তম। আমাদের ডিজিপি ১৯ লক্ষ কোটি টাকার হয়ে যাবে। দেশের ডিডিপি-র চেয়ে আমাদের জিডিপি বৃদ্ধির গতি বেশি।”
মমতা জানিয়েছেন, রাজ্যের রাজস্ব আয় বেড়েছে ৪ গুণ।, উন্নয়ন প্রকল্পে খরচ বেড়েছে ৭.৮০ গুণ। নারীর ক্ষমতায়নে বাংলা এক নম্বরে রয়েছে। ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডার’ প্রকল্পের আওতায় ২৫ বছর বয়স থেকে সারাজীবন হাতে নগদ পাচ্ছেন মহিলারা। আর কোনও রাজ্যে এমন ব্যবস্থা নেই। ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডার’ প্রকল্প রাষ্ট্রপুঞ্জের স্বীকৃতি পেয়েছে। এছাড়াও কন্যাশ্রী, শিক্ষাশ্রী, যুবশ্রী, ঐক্যশ্রী প্রকল্প রয়েছে, রয়েছে স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড প্রকল্প।
মমতা জানান, বাংলা সর্বধর্ম সমন্বয়ে বিশ্বাসী। সকলকে নিয়ে চলার পক্ষপাতী। সংসদে অনেকে আজকাল নারীর ক্ষমতায়ন নিয়ে অনেক কথা বললেও, তাঁর দল এই কাজ করে দেখিয়েছে। তৃণমূলের টিকিটে জয়ী মহিলা প্রার্থীদের হার ৩৯.৫ শতাংশ। মহিলাদের উন্নয়ন ছাড়া সমাজের উন্নয়ন যেমন সম্ভব নয়, তেমনই নারী-পুরুষ সকলের উন্নয়নের সঙ্গেই দেশের উন্নয়ন জড়িয়ে রয়েছে।
আরও দেখুন
+ There are no comments
Add yours