কলকাতা: রাজ্যের সব মেডিক্যাল কলেজের সিনিয়র শিক্ষক-টিকিৎসক থেকে জুনিয়র ডাক্তারদের ডিউটি রস্টার চেয়ে পাঠাল স্বাস্থ্য দফতর। আগামী এক মাসের ডিউটি রস্টার চেয়ে পাঠানো হয়েছে। সোমবারের মধ্যেই ডিউটি রস্টার জমা দিতে নির্দেশ দিয়েছে স্বাস্থ্য দফতর। চিকিৎসকদের উপস্থিতি যাচাই করতেই এমন নির্দেশ বলে জানা গিয়েছে। চিকিৎসকরা ডিউটি-তে উপস্থিত রয়েছে কি না দেখতে, আচমকা পরিদর্শনেও যেতে পারেন আধিকারিকরা। (West Bengal Department of Health)
চিকিৎকদের ডিউটি রস্টার জমা করতে আপাতত মৌখিক নির্দেশই দিয়েছে স্বাস্থ্য দফতর। রস্টার অনুযায়ী চিকিৎসকরা ডিউটিতে উপস্থিত থাকছেন কি না, তার উপর নজরদারি চালাতেই এমন উদ্যোগ বলে জানা যাচ্ছে। জানা গিয়েছে, এবার থেকে চিকিৎসকদের উপস্থিতি যাচাই করতে আচমকা হাসপাতাল পরিদর্শনে যাবেন স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকরা। সার্জারির সময় সংশ্লিষ্ট সিনিয়র চিকিৎসক আছেন কি না, যাচাই করা হবে। (Doctors’ Duty Roster)
শুধু তাই নয়, স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, সিনিয়র চিকিৎসকের উপস্থিতি যাচাই করতে প্রয়োজনে সিসিটিভি ফুটেজও দেখা হবে। রস্টার অনুযায়ী ডিউটিতে হাজিরা না থাকলে বা কর্তব্যে ত্রুটি দেখিয়েছেন বলে চিহ্নিত করা হবে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকদের। প্রয়োজনে কড়া পদক্ষেপ করা হবে তাঁদের বিরুদ্ধে। সোমবারের মধ্যেই রস্টার জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে স্বাস্থ্য দফতর।
সম্প্রতি মেদিনীপুর মেডিক্যালে কালো তালিকাভুক্ত সংস্থা পশ্চিমবঙ্গ ফার্মাসিউটিক্যালসের তৈরি নিম্নমানের রিঙ্গার ল্য়াকটেট ব্য়বহারের ফলে এক প্রসূতির মৃত্যু ও তিনজনের অবস্থা সঙ্কটজনক হয়ে ওঠার অভিযোগ ওঠে। গোটা ঘটনার জন্য চিকিৎসকদের একাংশের গাফিলতিকেই দায়ী করে রাজ্য সরকার। সিনিয়র ও জুনিয়র মিলিয়ে সংশ্লিষ্ট হাসপাতালের ১৩ জন চিকিৎসককে সাসপেন্ড করে স্বাস্থ্য দফতর।
ওই ঘটনায় চিকিৎসকদের ভূমিকায় প্রশ্ন তোলেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর বক্তব্য ছিল, “এখানে তো ঘটনাটা অন্যরকম ঘটনা ঘটে গিয়েছে। গাফলতি। যারা সিজার করতে জানে না, তাদের সিজার করতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। যাঁদের কাছে মানুষের ভাগ্য নির্ধারিত হয়, যাঁদের হাতে সন্তান জন্মায়, তাঁরা সঠিক ভাবে দায়িত্ব পালন করলে মা এবং সন্তানকে বাচানো যেত।”
এমনকি গাফলতির কথা বলতে গিয়ে চিকিৎসকের নামও উল্লেখ করেন মমতা। তিনি বলেন, “দুই ডাক্তার, দিলীপকুমার পাল, যাঁর কথা নারায়ণ নিগম বললেন, তিনি আরও তিনটি জায়গায় অপারেশন করেছেন। একজন তো শোনা গিয়েছে, ওখান থেকে বসে আরও তিনটি অপারেশন করেছেন না কি!” এতে স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণ নিগম জানান, ডেবরা বালিচকে, প্রায় ৪০ কিলোমিটার দূরে অপারেশন হয়েছে। সেখানকার রেজিস্টারেও নাম পাওয়া গিয়েছে বলে জানান নারায়ণ। চিকিৎসকদের এমন আচরণ নিয়ে মানুষের প্রশ্ন তোলের অধিকার রয়েছে বলে সেই সময় মন্তব্য করেন মমতা। তাই স্বাস্থ্য দফতর যেভাবে চিকিৎসকদের রস্টার চেয়ে পাঠিয়েছে, তা নজরদারির অংশ বলেই মনে করা হচ্ছে।
আরও দেখুন
+ There are no comments
Add yours