অতসী মুখোপাধ্যায়, কলকাতা: রাহুল মুখোপাধ্যায়ের (Rahool Mukherjee) সঙ্গে অসহযোগিতার অবস্থানেই অনড় ফেডারেশন (Tolly Federation)। ‘টলিপাড়ার কলাকুশলীদের বঞ্চিত করে শ্যুটিংয়ের বিরোধিতা করছি আমরা। ফেডারেশনকে না জানিয়ে কাজ করলে অসহযোগিতার অধিকার আছে। আমাদের কেউ কাজ না করে চলে যাননি’, দাবি টেকনিশিয়ানদের।
নিজেদের অবস্থানে অনড় ফেডারেশন, পরিচালকের আসনে রাহুলকে চান না তাঁরা
নিষেধাজ্ঞা ওঠার পরেও নতুন করে বাধা, শ্য়ুটিং করতেই পারলেন না রাহুল মুখোপাধ্যায়। ‘ব্যান’ উঠতেই এবার রাহুল মুখোপাধ্যায়ের শ্যুটিং ‘বয়কটে’ টেকনিশিয়ানরা। কী দাবি ফেডারেশনের? টালিগঞ্জের কলাকুশলীদের বঞ্চনা করায় অসহযোগিতা করা হয়েছে বলে দাবি টেকনিশিয়ানদের। রাহুল মুখোপাধ্যায়কে বয়কট-অভিযোগের পাল্টা এমনই দাবি করেছেন টেকনিশিয়ানরা। ‘কাজ বন্ধ করতে চাই না, কারণ এটাই আমাদের রুজি-রুটির সংস্থান’, দাবি টেকনিশিয়ানদের। ‘কিন্তু, ডিরেক্টর রাহুল মুখোপাধ্যায়কে চাই না, উনি ক্রিয়েটিভ প্রোডিউসারই থাকুন’, আইন মেনে কেউ শ্যুটিং করলে আমরাও যোগ দিতে রাজি, জানাল ফেডারেশন।
এদিন ফেডারেশনের তরফে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বলা হয়, ‘একটি ছবিকে কেন্দ্র করে আজ যে পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে, এটার উদ্দেশ্য, আমাদের ফেডারেশনের কলাকুশলীদের যে উদ্দেশ্য, অর্থাৎ আমাদের যে ২৬টা ইউনিয়ন রয়েছে ফেডারেশনের আশ্রয়ে, তাঁদের রুটিরুজির প্রশ্ন। ৭ থেকে ৮ হাজার কলাকুশলী, তাঁরা রোজ আনে রোজ খায়, অর্থাৎ No Work No Pay। যাঁদের এমন অবস্থা, তাঁরা কখনও কাজে কোনওদিন অসহযোগিতা করেনি। তাঁরা কাজ করতেই চান। ফলে তাঁরা ‘কাজ থেকে চলে গেছেন, কাজ করতে চাননি’, এই তথ্য সত্য নয়। আজ যে ছবিকে কেন্দ্র করে এই সমস্ত প্রশ্ন উঠেছে, দেখা দিয়েছে এবং নানারকম বিভ্রান্তিমূলক তথ্য সকলের সামনে আসছে, তাঁদের সত্যিটা জানা উচিত।’
টেকনিশিয়ানরা জানিয়েছেন, যে ছবি নিয়ে এত আলোচনা ‘লহু’, তার রেজিস্ট্রেশন হয় ইম্পায়, গত বছর নভেম্বরে। কলকাতায় ছবিটির শ্যুটিং শুরু হয়েছিল। কলাকুশলীদের কারও কোনও অসুবিধা ছিল না। তাঁরা ফ্রিল্যান্স কাজ করেন, ফলে ১০-১২ দিনের কাজের শিডিউল পেলে, সেই মতো প্রস্তুতি নেন। হাতে অন্য কোনও কাজ নেন না। কিন্তু এক্ষেত্রে অদ্ভুত ভাবে চার দিন কলকাতায় শ্যুটিং হওয়ার পর তা চলে গেল বাংলাদেশে। নিজেদের দাবি প্রমাণ করতে প্রোডাকশন ম্যানেজারকে পাঠানো প্রযোজকের একটি নথিও তুলে ধরেন টেকনিশিয়ানরা, যাতে কাঁচাবাড়ি, হাওড়া হাউজ, চায়না টাউন, তালতলা, গোয়াবাগান, খেয়াদহ, বানতলা, টিটাগড় জুটমিল, নিউ আলিপুর বাড়িতে শ্যুটিংয়ের শিডিউল রয়েছে। সেখানে কাউকে কিছু না জানিয়ে, চার দিন শ্যুটিং করে বাংলাদেশ চলে যাওয়া হল। বেশ কিছু দিন পরে অন্য লোকের মাধ্যমে তাঁরা জানতে পারেন, বাংলাদেশে ছবির কাজ সম্পূর্ণ করে চলে এসেছেন রাহুল। সেই নিয়ে গিল্ডের কাছে গেলে চিঠি ধরানো হয় ছবির পরিচালককে। ১০ জুলাই চিঠিতে ‘অপরাধ’ করেছেন বলে স্বীকারও করেন রাহুল। এরপরেই ‘কর্মবিরতি’র সিদ্ধান্ত গিল্ডের সঙ্গে আলোচনা করে, দাবি এমনই। তাঁরা কাউকে নিষিদ্ধ করতে বলেননি, বরং সাময়িক কর্মবিরতির কথা বলেছিলেন, দাবি টেকনিশিয়ানদের।
আরও পড়ুন: New Movie Update: আদিত্য ধরের পরিচালনায় এক পর্দায় সঞ্জয়-রণবীর-মাধবন-অক্ষয়-অর্জুন, অপেক্ষায় দর্শক
এরপরই সেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, SVF-এর নতুন ছবির পরিচালনার দায়িত্ব নেবেন সৌমিক হালদার, রাহুল সেখানে ক্রিয়েটিভ প্রোডিউসার। ফেডারেশনের দাবি, ‘আমাদের সেখানে কোনও আপত্তি থাকার কথা নয়। আমাদের কোনও কলাকুশলী একবারও বলেননি যে কাজ করব না। এটা অফিশিয়ালি জানানো হয়। কিন্তু আজ কাজ করতে এসে আমরা পরিচালক হিসেবে সৌমিক হালদারকে দেখতে পাইনি। তাই আমাদের কলাকুশলীরা কাজ থেকে চলে গেছে।’ টেকনিশিয়ানদের দাবি, সৌমিক হালদার পরিচালক হিসেবে এলে তবে কাজ করবেন তাঁরা।
আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।
আরও দেখুন