আতঙ্ক নিয়ে ফেরা, ভিটেমাটি ছেড়ে আবার এপারে কেউ, বাংলাদেশবাসীর সঙ্গী ভয়

Estimated read time 1 min read
0 0
Listen to this article
Read Time:5 Minute, 19 Second


কলকাতা: বাংলাদেশের বদলে যাওয়া পরিস্থিতিতে আতঙ্কে সেদেশের হিন্দুরা। চিকিৎসা-সহ নানা কাজে ভারতে আসা বাংলাদেশের হিন্দুরা শোনালেন ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা। একজন মুক্তিযোদ্ধা হয়েও কীভাবে ভিটেমাটি ছেড়ে দিয়ে আসতে হচ্ছে, সেকথাও উঠে এল বারবার।

বদলে যাওয়া পরিস্থিতিতে আতঙ্কে: ইউনূস সরকার ক্ষমতায় আসার পর, বাংলাদেশে বেছে বেছে হিন্দুদের ওপর অত্যাচারের এই ছবিই অনেককে মনে করিয়ে দিয়েছে ১৯৭১ সালের ভয়ঙ্কর অত্যাচারের কথা। দু’দিন আগেই ভারতের বিদেশসচিব বিক্রম মিস্রী ঢাকায় দাঁড়িয়ে সেদেশের সংখ্যালঘু অর্থাৎ হিন্দুদের ওপর অত্যাচার নিয়ে কড়া বার্তা দিয়ে এসেছেন। কিন্তু তারপরেও কোন হেলদোল নেই বাংলাদেশের ইউনূস সরকারের। বুধবারও ভারত-বিদ্বেষী মিছিল রয়েছে ঢাকায়। ভারতের বিরুদ্ধে যুদ্ধের জিগিরও উঠেছে। এই অবস্থায় চরম আতঙ্কে রয়েছেন বাংলাদেশের হিন্দুরা। কেউ ওপার থেকে এপারে এসে হাফ ছেড়ে বাঁচছেন। তো কেউ এপার থেকে একরাশ ভয় ও আতঙ্ক বুকে নিয়ে বাধ্য হয়ে বাংলাদেশে ফিরে যাচ্ছেন।  তেমনই একজন হচ্ছেন নীরদ মণ্ডল। বাংলাদেশের সাতক্ষীরায় ছেলে-বউমা-নাতি-নাতনি নিয়ে ভরা সংসার। এপারে মেয়ে-জামাইয়ের বাড়িতে এসেছিলেন। কিন্তু বাংলাদেশে অশান্তির খবর পেয়ে ফিরে যাচ্ছেন। নীরদ মণ্ডল বলেন, “হিন্দুদের ওপর অত্যাচার, বাড়ি ভাঙা চলছে বলে শুনছি। এখানে দাঁড়িয়ে শুনছি। ওখানে আমার ছেলে আছে, বউমা আছে, নাতি আছে। না বাবা দেখিনি, সেই একাত্তরে দেখেছিলাম। আর দেখিনি। একাত্তরের ঘটনা ভাল জানি। তারপর আর কোনওদিন দেখিনি। এখন দেখছি তো তাই।”

১৯৭১ সালে ভারত পাশে না থাকলে জন্ম হত না বাংলাদেশ নামে এই দেশটার। কিন্তু সেবারও কট্টরপন্থী মৌলবাদীদের অত্যাচারের সীমা ছাড়িয়ে গেছিল। তখন চোখের সামনে সেটা দেখেছিলেন সাতক্ষীরা জেলার হাজিপুরের বাসিন্দা গীতা অধিকারী। এপার বাংলায় মেয়ের বাড়িতে কয়েকদিন কাটিয়ে তড়িঘড়ি দেশে ফিরছেন এই প্রৌঢ়া। পুরনো কথা মনে পড়লেই এখনও তাঁর বুক কেঁপে ওঠে। সেই তিনিও বলছেন এখনকার কট্টরপন্থীরা তো আরও ভয়ানক। তাঁর কথায়, “৭১-এ তাও মানুষকে আসা যাওয়া করতে দিয়েছিল। আর এখন মানুষকে আসতে দিচ্ছে না। এরা খুব ভয়ঙ্কর। আমার ছেলে আছে। বই (পাসপোর্ট-ভিসা) করে যে আসবে আসতে দিচ্ছে না। চিন্তা হবে না, ছেলেরা বউয়েরা, বড় বড় মেয়েরা আছে। চিন্তা না হয়ে পারে। এখানে এসেছি ডাক্তার দেখাতে মেয়ের বাড়িতে। বাপের বাড়িও আমার এখানে।”

কেউ একাত্তর সামনে থেকে দেখেছন তো কেউ একাত্তরের মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। ১৯৭১-এ পাকিস্তানের বিরুদ্ধে অস্ত্র তুলে নিয়েছিলেন খুলনার বাসিন্দা নিরঞ্জন রায়। আজ তাঁকেই পালিয়ে আসতে হয়েছে এদেশে। ভিটেমাটি ছেড়ে আসার কষ্ট প্রতি মুহূর্তে কুড়ে কুড়ে খাচ্ছে তাঁকে। তিনি বলেন, “ভিটেমাটি ছেড়ে যাব কোথায়? আমি ওদেশের একজন মুক্তিযোদ্ধা। দেশ স্বাধীন করলাম, পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করলাম। আমি ওখানে সরকারে চাকরি করেছি। সেই দেশ ছেড়ে চলে আসতে হল সেটা তো আমরা ভাবতে পারি না। কষ্ট হয়। আমরা হলাম ওইদেশের ভূমিপুত্র। জঙ্গল কেটে আমরা ওই দেশে বসতি গড়েছি। সেই দেশ ছেড়ে আমদের আসতে হবে ভাবতে পারি না। কষ্টের ব্যাপার। নাড়ির টান।”

আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।  

আরও পড়ুন: Bangladesh News:প্রাণনাশের হুমকিতেও লক্ষ্যে অবিচল, ফের চট্টগ্রাম আদালতে যাচ্ছেন সন্ন্যাসী চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের আইনজীবী

আরও দেখুন



Source link

About Post Author

JagoronBarta

জাগরণ বার্তা হল একটি অগ্রণী অনলাইন সংবাদ পোর্টাল যা পশ্চিমবঙ্গের মানুষের কাছে নিরপেক্ষ, সঠিক এবং সময়োপযোগী সংবাদ পৌঁছে দেওয়ার জন্য নিবেদিত। আমরা এমন একটি প্ল্যাটফর্ম সরবরাহ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ যা বাংলার প্রকৃত কণ্ঠস্বরকে প্রতিফলিত করে এবং স্বাধীন সাংবাদিকতার গুরুত্বকে তুলে ধরে।
Happy
Happy
0 %
Sad
Sad
0 %
Excited
Excited
0 %
Sleepy
Sleepy
0 %
Angry
Angry
0 %
Surprise
Surprise
0 %
JagoronBarta http://www.jagoronbarta.com

জাগরণ বার্তা হল একটি অগ্রণী অনলাইন সংবাদ পোর্টাল যা পশ্চিমবঙ্গের মানুষের কাছে নিরপেক্ষ, সঠিক এবং সময়োপযোগী সংবাদ পৌঁছে দেওয়ার জন্য নিবেদিত। আমরা এমন একটি প্ল্যাটফর্ম সরবরাহ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ যা বাংলার প্রকৃত কণ্ঠস্বরকে প্রতিফলিত করে এবং স্বাধীন সাংবাদিকতার গুরুত্বকে তুলে ধরে।

You May Also Like

More From Author

Average Rating

5 Star
0%
4 Star
0%
3 Star
0%
2 Star
0%
1 Star
0%

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *