অভিজিৎ চৌধুরী, মালদা : তৃণমূলের জেলা পরিষদ সদস্য এলাকায় যেতেই ঘরের দাবিতে পা ধরে কেঁদে ফেললেন এক প্রতিবন্ধী ব্যক্তি।কাটমানি দিতে না পারায় নাম বাদ গেছে ! এমনকি ভাতাও পাচ্ছেন না, অভিযোগ জানালেন জেলা পরিষদ সদস্যকে। সমগ্র ঘটনা সামনে আসতেই তৃণমূলকে খোঁচা বিজেপির। পাশে থাকার আশ্বাস দিয়ে সাফাই জেলা পরিষদ সদস্যের।
কাটমানি দিতে না পারায় ‘আবাস’ থেকে মালদার এক প্রতিবন্ধীর নাম বাদ
শারীরিকভাবে প্রতিবন্ধী। অত্যন্ত কষ্টের মধ্যে দিয়ে চলে সংসার। তাই আবাস যোজনার ঘরের জন্য যখন আবেদন করে ছিলেন কাটমানি চাওয়ার জন্য তিনি দিতে পারেননি। যার জন্য নাম বাদ চলে গেছে তালিকা থেকে। এবার এলাকায় তৃণমূলের জেলা পরিষদ সদস্য যেতেই ঘরের দাবিতে অভিযোগ তুলে পা ধরে কেঁদে ফেললেন ওই ব্যক্তি। তাঁর অভিযোগ, ‘নেতারা শুধু ভোটের সময় আসে। কিন্তু তাঁরা এত দুঃস্থ হওয়া সত্বেও কোনও সুবিধা পাচ্ছেন না সরকারের। না মিলছে ভাতা না পেয়েছেন ঘর। এই ঘটনা সামনে আসতে তৃণমূলকে ব্যাপক আক্রমণ বিজেপির। ‘মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ অনুযায়ী প্রত্যেক এলাকায় ঘুরছি দুঃস্থদের পরিস্থিতি দেখছি। তারা যাতে পায় প্রশাসনে কথা বলব’, সাফাই তৃণমূলের জেলা পরিষদ সদস্যের। শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা।’
TMC নেতার পা ধরে কাঁদলেন মালদার বাসিন্দা
মালদা জেলার হরিশ্চন্দ্রপুর ২ নম্বর ব্লকের মালিওর ১ গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত মালিওর গ্রামের বাসিন্দা মুকলেশুর রহমান। শারীরিক ভাবে প্রতিবন্ধী তিনি। ফলে তেমন কোন কাজ করতে পারেন না। সংসারের স্ত্রী এবং তিন সন্তান। বেড়ার দেওয়াল। উপরে ভগ্নপ্রায় টালির চালা।অভাবের অন্ধকার গ্রাস করেছে সংসারকে। কিন্তু পান না প্রতিবন্ধী ভাতা। নাম নেই আবাসের তালিকায়। সরকারি সাহায্য বলতে মিলে শুধু রেশন।তাতেই কোনওক্রমে আধপেটা দিন গুজরান করেন। এদিন ওই এলাকায় কোন কোন দুঃস্থ পরিবার সরকারি সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত সেটা খতিয়ে দেখতে এদিন বাড়ি বাড়ি যান তৃণমূলের স্থানীয় জেলা পরিষদ সদস্য বুলবুল খান। তাকে সামনে পেয়ে ঘরের দাবিতে পা ধরে কেঁদে ফেলেন মুকলেশুর রহমান।
আশ্বাস তৃণমূল নেতার !
বিস্ফোরক অভিযোগ তুলে তিনি বলেন, তাঁর কাছে পঞ্চায়েত সদস্য ছয় হাজার টাকা কাটমানি চেয়ে ছিল তালিকায় নাম তোলার জন্য। তিনি দিতে পারেননি বলে নাম বাদ গেছে। বুলবুল খান তাঁকে আশ্বাস দেন। প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে নিয়ম অনুযায়ী সমস্ত সহযোগিতা করবেন। এদিকে এই ঘটনা সামনে আসতে বিজেপির অভিযোগ,’ আবার প্লাস নিয়ে যে ব্যাপক দুর্নীতি এবং স্বজনপোষণ হয়েছে সেটা বারবার প্রমাণিত।তৃণমূল নেতাদের আত্মীয়দের নাম রয়েছে তালিকায়। কিন্তু এরকম দুঃস্থ মানুষরা বাদ গেছে। আর এখন তৃণমূল নাটক করছে।’
আরও পড়ুন, ক্লাবের দাদাগিরিতে শাটার নামল ‘ভাইরাল চা-ওয়ালি’র দোকানে, এভাবেই স্বপ্ন ভাঙবে উচ্চাকাঙ্ক্ষী পাপিয়ার? ‘
‘ মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ দিয়েছেন..’
যদিও এই নিয়ে সংবাদমাধ্যমের সামনে বুলবুল খানের দাবি,’ মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ দিয়েছেন যাদের কাঁচা বাড়ি যারা দুঃস্থ প্রত্যেককে যাতে ঘর পায়। তাই তিনি এলাকায় এসেছেন। তারা জনপ্রতিনিধি মানুষ তাদের কাছেই দাবি করবেন। কিছু জায়গায় ভুল ভ্রান্তি হতে পারে। তিনি প্রশাসনিক মহলে কথা বলবেন দুঃস্থরা যাতে এভাবে বঞ্চিত না থাকে।’ এমন দৃশ্য সামনে আসতেই শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা।
আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।
আরও দেখুন