কলকাতা : বাংলাদেশে ক্রমাগত হিন্দু নিপীড়ন চলছে। অত্যাচারের মাত্রা কমা তো দূরঅস্ত, দিন দিন তা বাড়ছে। ওপার বাংলায় সংখ্যালঘুদের ওপর অত্যাচারের প্রতিবাদে সরব হয়েছে এ বঙ্গ-সহ গোটা ভারত। সন্ন্যাসী চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতারির প্রতিবাদ আগেই কড়া বিবৃতি জারি করেছে ভারতের বিদেশ মন্ত্রক। স্বভাবতই এই ইস্যুতে বাংলাদেশের উপর বাড়ছে চাপ। যদিও, সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচারের ঘটনা কমার লেশমাত্র চিহ্ন নেই। উল্টে বাংলাদেশের তরফেও সুর চড়ানো হচ্ছে। এবার ভারতের উদ্দেশে হুঁশিয়ারি দিয়ে রাখলেন BNP নেতা রুহুল কবীর রিজভি। তাঁর বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে এদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের পর্যবেক্ষণ, ‘জামাতের ভাষায় কে কথা বলতে পারছে, বাংলাদেশে তার প্রতিযোগিতা চলছে।’
কী বলেছেন BNP নেতা ?
ওই নেতা রুহুল কবীর রিজভির হুঁশিয়ারি, ‘ভারতের শাসক গোষ্ঠী যদি মনে করে, আমরা সম্প্রসারণ চালিয়ে বাংলাদেশ, নেপাল, ভুটান এবং অন্যান্য আশেপাশের দেশ আমরা কব্জা করে নেব। এটা কিন্তু, আপনারা বোকার স্বর্গে বাস করছেন। আপনাদের যদি অশুভ ইচ্ছে থাকে, আমরাও তাহলে বলব আমাদের যে নবাবের এলাকা বাংলা, বিহার, ওড়িশা আমরা সেটা দাবি করব, যদি আপনারা একইরকমভাবে একের পর এক বাংলাদেশের বিরুদ্ধে আগ্রাসী ভূমিকা পালন করেন।’
এ প্রসঙ্গে রাজনৈতিক বিশ্লেষক বিশ্বনাথ চক্রবর্তী বলছেন, “মৌলবাদী যারা তাঁরা ধর্মীয় হতে পারেন, রাজনৈতিক মৌলবাদী হতে পারেন, তাঁদের আচরণ কিন্তু সর্বত্র এক। তাঁরা গণতন্ত্রের ভাষা শুনতে পারেন না। গণতান্ত্রিক পরিবেশ দেখতে পারেন না। বহুত্ববাদ পছন্দ করেন না। ধর্মীয় মৌলবাদীর মতো কথা বললেন বিএনপি নামক এক পুরনো দল। এটা কেন উনি বললেন ? আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, উনি সারা বিশ্বের ইসলামিক মৌলবাদী প্রোজেক্ট হিসাবে বাংলাদেশকে আফগানিস্তান তৈরি করছে, তাদের কাছে মার্কস বাড়াতে চাইছেন। অর্থাৎ এই সুমন দে নামটা যদি বলি। ভারত-বিদ্বেষী অবস্থান নিই, এবিপি আনন্দকে বিদ্বেষ করি, তাহলে জামাত নেতাদের কাছে প্রিয় হব। জামাতের ভাষায় কে কথা বলতে পারছে, বাংলাদেশে তার প্রতিযোগিতা চলছে। অত্যন্ত উগ্র ভাষায় কে কথা বলতে পারছেন। উগ্র ইসলামিক ভাষায় কে কথা বলতে পারছেন। ফলে, তাঁর রেটটা বাংলাদেশে তত বেশি হচ্ছে।”
এ প্রসঙ্গে ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে তিনি তাঁর আতঙ্কের কথাও শুনিয়েছেন। পাশাপাশি এবিপি আনন্দ-র সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট সুমন দে-র নাম করে বিএনপি নেতা যেভাবে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তা নিয়েও তিনি চিন্তিত। ‘ঘণ্টাখানেক সঙ্গে সুমন’-এর অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখার সময় তিনি রাজ্য সরকারের উদ্দেশে সুমন দে-র নিরাপত্তা দাবি করেন।
তিনি বলেন, “আমি পরিষ্কার একটা কথা বলছি, আমার ভয় একটা জায়গায় আছে। বাংলাদেশে পুলিশ জানিয়েছে, ১৭৩ জন জঙ্গিকে তারা ছেড়েছে। মোট ২২০০ কয়েদি বেরিয়েছিল ৫ অগাস্টের ওই সময়টায়। জেল ভেঙে বেরিয়ে এসেছিল ২২০০ কয়েদি। তারমধ্যে ১৫০০-কে বলেকয়ে ঢোকানো গেছে। বাদ বাকি নানা জঙ্গি সংগঠনে ছড়িয়ে আছে। এই যে রিজভির সাহেবের মতো লোকের প্ররোচনামূলক কথাগুলো বলছেন, আমার ভয় হয়, এপার বাংলায় এসে আপনার (এবিপি আনন্দ-র সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট সুমন দে) উপর আক্রমণ না করে বসে। আমি রাজ্য সরকারের কাছে করজোড়ে অনুরোধ করব, আপনার নিরাপত্তা দেওয়া উচিত। পরিস্থিতি এটা ডিমান্ড করে।”
আরও পড়ুন ; ‘কত টাকা পেয়েছেন?’ বাংলাদেশ থেকে সরাসরি হুঁশিয়ারি এবিপি আনন্দকে; ‘সত্যিটাকে তুলে ধরবই’, জবাব সুমন দে-র
আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে
আরও দেখুন