জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: ঈশ্বরের প্রতিনিধি হয়ে আমাদের জীবন ও স্বাস্থ্য রক্ষা করেন চিকিত্সকেরা। বলা যেতেই পারে, তাঁরা আমাদের জীবন দেবতা। কিন্তু সেই ভগবান সমতুল্য চিকিত্সক যখন বর্বরের রূপ ধারণ করে, তখন জনসাধারণের ভরসা ভেঙে যায়। এক নামজাদা-ভদ্র চিকিত্সক, কিন্তু মার্জিত মুখের আড়ালে লুকোনো ছিল সম্পূর্ণ ভিন্ন এক চেহারা।
২০ বছর ধরে চিকিৎসার অছিলায় একের পর এক নারকীয় ঘটনা চালিয়ে গিয়েছেন তিনি। এমনটাই অভিযোগ উঠেছে এক স্ত্রীরোগ চিকিৎসকের বিরুদ্ধে। ওই চিকিৎসকের নাম আর্নে বাই। নরওয়ের বাসিন্দা ৫৫ বছরের এই সুদর্শন ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগ, ৮৭ জন নারীকে ধর্ষণ করেছেন তিনি। ভয়াবহ সব অভিযোগ জমা পড়ে আর্নের বিরুদ্ধে। আর্নের ঘটনা প্রকাশ্যে আসতে নড়ে গিয়েছে নরওয়ে প্রশাসন।
নরওয়ের ফ্রোস্টা নামের একটি ছোট্ট গ্রামের বাসিন্দা এই স্ত্রীরোগ চিকিৎসকের বিরুদ্ধে নাবালিকা ধর্ষণের দু’টি মামলা-সহ বেশ কয়েকটি গুরুতর মামলা দায়ের হয়েছে। এই ঘটনাটিকে নরওয়ের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় যৌন কেলেঙ্কারি বলে বর্ণনা করা হয়েছে। আর্নের বিরুদ্ধে মোট ৯৪ জন নারীকে যৌন নিগ্রহ ও ধর্ষণের অভিযোগ আনা হয়েছে। এর মধ্যে ৮৭ জন তার বিরুদ্ধে সরাসরি ধর্ষণের অভিযোগ এনেছেন। টানা দু’দশকের বেশি সময় ধরে তিনি এই কুকীর্তি চালিয়ে যান বলে অভিযোগ।
আরও পড়ুন:World’s Largest Gold Mine: লাখ লাখ কোটি কোটি টাকার সোনা লুকিয়ে! বিশ্বের বৃহত্তম স্বর্ণভান্ডার এটাই…
আরও জানা গিয়েছে, আর্নের শিকারদের মধ্যে সবচেয়ে কমবয়সি ছিল এক ১৪ বছরের কিশোরী। তার যৌন লালসার হাত থেকে রেহাই পাননি এক বৃদ্ধাও। ৬৭ বছর বয়সি এক বৃদ্ধাকে তার লালসার শিকার হতে হয়েছে। গ্রেফতারের সময় আর্নের কাছ থেকে ছ’হাজার ঘণ্টার বেশি ভিডিয়ো ফুটেজ উদ্ধার করেছে পুলিস, যার মধ্যে তার স্ত্রীরোগ সংক্রান্ত পরীক্ষার সমস্ত রেকর্ডিং রয়েছে। রোগীদের অজান্তেই তাদের চিকিৎসার দৃশ্য রেকর্ড হয়ে যেত ক্যামেরায়। রেকর্ডিংগুলো পরীক্ষা করে পুলিস জানিয়েছে, এতে এমন ভিডিও তোলা হয়েছে, যা অত্যন্ত সংবেদনশীল। চিকিৎসকের বাড়ি ও অফিসে তল্লাশি চালিয়ে পুলিস একাধিক ক্যামেরার হদিস পায়।
শুধু তাই নয়, মহিলাদের পরীক্ষা করার সময় নানা উদ্ভট পদ্ধতি বেছে নিতেন আর্নে। সম্পূর্ণ অবৈজ্ঞানিকভাবে নারীদের যৌনাঙ্গ পরীক্ষার জন্য ছোট গোলাকার বোতল এবং নলের মতো বস্তু ব্যবহার করতেন বলে অভিযোগ উঠেছে রোগীদের পক্ষ থেকে। বিগত কয়েক বছর ধরে নিজের গ্রামে বসেই এই কাণ্ড ঘটিয়ে গিয়েছেন এই চিকিৎসক। অন্য এক নারী অভিযোগ এনেছেন, গলায় ব্যথার জন্য আর্নের কাছে গিয়েছিলেন তিনি। পরীক্ষানিরীক্ষার পর জ্ঞান ফিরলে ওই নির্যাতিতা দেখেন, একটি বেঞ্চে অন্তর্বাস পরে শুয়ে রয়েছেন তিনি। যেহেতু আর্নে তাদের গ্রামের চিকিৎসক ছিলেন, তাই তিনি যা যা করার নির্দেশ দিয়েছিলেন তা অক্ষরে অক্ষরে মেনেছিলেন ওই নির্যাতিতা। নিজের চেম্বারে বসেই রোগী দেখার নাম করে যৌন লালসা মেটাতেন অভিযুক্ত চিকিৎসক।
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)