কলকাতা: একের পর এক ঘটনায় রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। তৃণমূলের কাউন্সিলর সুশান্ত ঘোষের উপর হামলার পর শাসকদলের নেতারাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতে থাকা পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। দলের বিধায়ক হুমায়ুন কবীর আবার একধাপ এগিয়ে পুলিশমন্ত্রী বদলের দাবি তুলেছেন। অভিষেককে এখনই পুলিশমন্ত্রী করা হোক বলে মন্তব্য করেছেন তিনি। হুমায়ুনের মন্তব্যে এবার মুখ খুললেন রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। অভিষেক সঠিক সময়ে দায়িত্ব হাতে নেবেন, সেই নিয়ে কাউকে মাথা ঘামাতে হবে না বলে কড়া বার্তা দিলেন তিনি। একই সুর ধরা পড়েছে রাজ্যের মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়ও। (Firhad Hakim)
কসবায় সুশান্তর উপর হামলার পর পুলিশের ভূমিকা নিয়ে সরব হয়েছিলেন খোদ ফিরহাদ। মুখ খুলেছিলেন সৌগত রায়ের মতো সাংসদও। তাঁদের থেকে এক কদম এগিয়ে হুমায়ুন আবার অভিষেককে পুলিশমন্ত্রী করার দাবি তোলেন। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পাশাপাশি, পুলিশমন্ত্রীও এই মুহূর্তে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাই হুমায়ুন কি মমতার পরিবর্তে অভিষেককে চাইলেন, তা নিয়ে জোর চর্চা শুরু হয়। (Abhishek Banerjee)
সেই নিয়ে কাটাছেঁড়ার মধ্যেই মঙ্গলবার হুমায়ুনের মন্তব্য কার্যত খারিজ করে দেন ফিরহাদ। তাঁকে বলতে শোনা যায়, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলিষ্ঠ নেতৃত্ব দিতে সক্ষম। বলিষ্ঠ নেতৃত্ব দিচ্ছেন উনি। একটা-আধটা অপরাধমূলক ঘটনা সারাজীবনই ছিল। বুদ্ধবাবু, জ্যোতিবাবু, সিদ্ধার্থ রায়ের সময়েও ছিল এমন। কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আমনলেই কেন্দ্রীয় সরকারের রিপোর্টে সবচেয়ে নিরাপদ শহরের তকমা পায় কলকাতা। তাই উনি নেতৃত্ব দিতে সক্ষম। কাউকে এটা নিয়ে মাথা ঘামাতে হবে না।”
মমতার জায়গায় অভিষেককে আনার যে দাবি তুলেছেন হুমায়ুন, সেই প্রসঙ্গে ফিরহাদ বলেন, “অভিষেক আমাদের সন্তান। ঠিক সময়ে আসবে। কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সব করতে পারেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি লাগিয়ে জিতি আমরা। যারা বড় বড় কথা বলে, তাদের বলব, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি সরিয়ে একটা নির্বাচন জিতে দেখাও।”
এ ব্যাপারে ফিরহাদের সুরই ধরা পড়ে শোভনদেবের গলায়। তিনি বলেন, “আমি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের যোগ্যতার প্রশংসা করি। কিন্তু কাকে কোথায় বসানো হবে, তা ঠিক করার লোক রয়েছে। আমি এমন মন্তব্য করি না, যা নিয়ে উত্তর দিতে পারব না পরে।” স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “এটা ওঁর (হুমায়ুন) ব্যক্তিগত অভিমত। এব্যাপারে দলই সিদ্ধান্ত নেবেন। এমন কোনও মন্তব্য করার অর্থ আছে বলে মনে করি না।” দলের শীর্ষ নেত়ৃত্ব যদিও হুমায়ুনের দাবি খণ্ডন করে দিয়েছেন, কিন্তু যেভাবে অভিষেককে দায়িত্বে আনার দাবি তুলতে শুরু করেছেন তৃণমূলের একাংশ, তাতে দলের অন্দরে নেতৃত্ব নিয়ে ফের বিভাজন তৈরি হয়েছে কি না, সেই নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে।
আরও দেখুন