জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: বার্ড ফ্লু এবার বাংলায়। আক্রান্ত রাজ্যের ৪ বছরের এক শিশু। ২০১৯ সালে দেশে একজনের শরীরে মেলে বার্ড ফ্লুর ভাইরাস। তার পর বাংলায় ওই ৪ বছরের শিশুর শরীরে মিলেছে H9N2 ভাইরাস। এনিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।
আরও পড়ুন-অবৈধ নিয়োগ নিয়ে আন্দোলন রুখতে ১২ জনকে চাকরি! চাঞ্চল্যকর দাবি ইডির
কী উপসর্গ? হু জানাচ্ছে গুরুতর শ্বাসকষ্ট, জ্বর ও পেটে ব্যথা নিয়ে ওই শিশুটি গত ফেব্রুয়ারি মাসে হাসপাতালে ভর্তি হয়। পরিস্থিতি এমনটাই ছিল যে তাকে আইসিইউতে রাখতে হয়। টানা ৩ মাস চিকিত্সার পর ছাড়া হয় ওই শিশুকে।
প্রাথমিকভাবে জানা যাচ্ছে ওই শিশুটি বাড়িতে পোলট্রির সংস্পর্শে এসেছিল। সম্ভবত সেখান থেকেই সে বার্ড ফ্লুর ভাইরাসে আক্রান্ত হয়। শিশুটির শরীরে জ্বর, পেটব্যথা, শ্বাসকষ্টের মতো উপসর্গ দেখা দিলেও তার পরিবারের কারও মধ্যে কোনও উপসর্গ দেখা যায়নি। শিশুটি আগে থেকে কী ধরনের টিক নিয়েছিল তার বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা।
উল্লেখ্য, গত ২৬ জানুয়ারি শিশুটিকে একজন শিশুরোগ চিকিৎসকের কাছে নিয়ে আসা হয় জ্বর নিয়ে। ২৯ ফেব্রুয়ারি ফের ওই একই চিকিৎসকের কাছে বাচ্চাটিকে জ্বর না কমায় নিয়ে আসা হয়। পরবর্তীকালে জ্বরের সঙ্গে শ্বাসকষ্ট এবং তলপেটে খিচুড়ি ধরায় তাকে হাসপাতালে ভর্তি করার পরামর্শ দেন ওই শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ। প্রথমে ইনফ্লুয়েঞ্জা টেস্ট করলে তা পজিটিভ আসে। মার্চ মাসের ৩ তারিখ প্রবল শ্বাসকষ্ট নিয়ে বাচ্চাটি আবার হাসপাতালে আসে তখন ৫ মার্চ তার সওয়াব টেস্ট করা হয়। কিন্তু তাতেও ইনফ্লুয়েঞ্জা পজিটিভ আসে। ২৬ এপ্রিল পুনের ন্যাশনাল ভাইরোলজি ইনস্টিটিউটে ওই একই সোয়াব পাঠানো হয়। তাতেই রিপোর্ট আসে বার্ড ফ্লু ভাইরাস রয়েছে শিশুটির শরীরে।
বাংলায় ওই বার্ড ফ্রুল কেস পাওয়ার পর এটি হল ভারতে আক্রান্ত বার্ড ফ্ুলর দ্বিতীয় কেস। ২০১৯ সালেই দেশে এ ব্য়ক্তির শরীরে H9N2 ভাইরাস দেখা যায়। সেই ঘটনার ৫ বছর পর বাংলায় নতুন একটি কেস ধরা পড়ায় বাড়ছে উদ্বেগ।
অ্যাভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা তথা বার্ড ফ্লুতে অন্তত চারটি রাজ্য আক্রান্ত হয়ে প়ড়েছে। যা নিয়ে নড়েচড়ে বসেছে খোদ প্রশাসনও। আপাতত চারটি রাজ্য। সেই রাজ্যগুলি হল-অন্ধ্রপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র, ঝাড়খণ্ড, কেরালা। অন্ধ্রপ্রদেশের নেল্লোর জেলায়, মহারাষ্ট্রের নাগপুর জেলায়, ঝাড়খণ্ড রাঁচি জেলায়, কেরালা আলাপ্পুঝা, কোট্টায়াম, পাথানামথিত্ত জেলায়।
এইচ৫এন১ ভাইরাস পাখির দেহ থেকেই মূলত ছড়ায়। তা থেকে ছড়ায় মানবদেহেও। তা ক্রমে বিপজ্জনক দিকে চলে যেতে পারে। তবে এই চার রাজ্যের ক্ষেত্রে সেটা যাতে না হয়, সেটাই আগে থেকে দেখে নেওয়ার পরামর্শ সংশ্লিষ্ট রাজ্যগুলিকে দিয়েছে কেন্দ্র।
সম্প্রতি মার্কিন প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছিল, তাদের দেশে পাস্তুরাইজ বা প্রক্রিয়াজাত গরুর দুধে বার্ড ফ্লু ভাইরাসের অস্তিত্ব পাওয়া গিয়েছে। হাইলি প্য়াথোজেনিক এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা (HPAI) আমেরিকার বিভিন্ন প্রদেশের গরু প্রতিপালন কেন্দ্রে ও বিভিন্ন গোয়ালে ছড়িয়ে পড়েছিল। লক্ষাধিক মুরগির মৃত্যু হয়েছে সেখানে। জানানো হয়েছিল, গরু আক্রান্ত হলেও, সেই অসুস্থতা তখনও তেমন গুরুতর আকার ধারণ করেনি। বার্ড ফ্লু বা এইচ৫এন১ ভাইরাস প্রথম পাওয়া গিয়েছিল ১৯৯৬ সালে। আর এই ২০২৪ সালের মার্চে গরু-ছাগলের দেহেও এই ভাইরাসের অস্তিত্ব পাওয়া গিয়েছিল।
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)