জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: রাজস্থানে মিলল সাড়ে চার হাজার বছর আগে সভ্যতার চিহ্ন। মরুরাজ্যে নতুন সভ্যতার মরুদ্য়ান? প্রায় তাই। আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়া তথা এএসআই (ASI) রাজস্থানের ডিগ জেলার (Rajasthan Deeg District) বহজ গ্রামে খননকার্য চালিয়ে এই সভ্যতার হদিশ পেয়েছে। এর সঙ্গে ঋগ্বেদে (Rig Veda Era Civilization) উল্লিখিত সরস্বতী নদীর যোগ রয়েছে বলেও মনে করছেন বিশেজ্ঞরা।
আরও পড়ুন: Zealandia: ৫০ লক্ষ বর্গ কিমি আয়তন, ৪৩০০ কিমি দীর্ঘ! ১০ কোটি বছর আগের ভয়ংকর এক ম্যাগমা-তাণ্ডবে মহাসমুদ্রের নীচে…
আরও পড়ুন: 1031 Earthquakes: ১০৩১টি ভূমিকম্প! তাতসুকি আর বাবা ভাঙ্গার ৫ জুলাই ভবিষ্যদ্বাণী তাহলে মর্মান্তিক ভাবে সত্য হল? কোমর ভেঙে গেল…
মাটির পাত্র, ব্রাহ্মী লিপিতে লেখা সিল, তামার মুদ্রা এবং
কী কী পাওয়া গিয়েছে ওই জায়গা থেকে? সভ্যতার ওই অঞ্চল থেকে মিলেছে মাটির পাত্র, ব্রাহ্মী লিপিতে লেখা প্রাচীন সিল, তামার মুদ্রা, যজ্ঞকুণ্ড-সহ ৮০০-রও বেশি সামগ্রী। তালিকায় রয়েছে মৌর্য যুগের স্থাপত্য-ভাস্কর্য, শিব-পার্বতীর মূর্তি, হাড়ের তৈরি বিভিন্ন জিনিসপত্র। বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছে, বহজ গ্রামে প্রায় ২৩ মিটার পর্যন্ত গভীর খনন করা হয়।
মহাভারত, মৌর্য, কুষাণ, গুপ্ত
এ পর্যন্ত রাজস্থানে বহু জায়গায় প্রাচীন স্থানের খোঁজ মিলেছে। কিন্তু, এর আগে কোথাও এতটা গভীর করে খোড়া হয়নি। এবার সংশ্লিষ্ট জায়গা থেকে পাঁচটি আলাদা-আলাদা সময়ের বা যুগের নিদর্শন মিলেছে। মিলেছে হরপ্পা পরবর্তী নিদর্শন। মিলেছে মহাভারত, মৌর্য, কুষাণ ও গুপ্তযুগের সময়কার নানা উপকরণ। সেই সমস্ত সামগ্রী পর্যালোচনা করে বিশেষজ্ঞরা নানা জরুরি সিদ্ধান্তে পৌঁছচ্ছেন।
সরস্বতী নদী
কী মনে করছেন ইতিহাসবিদেরা? তাঁরা মনে করছেন, আজকের উত্তর প্রদেশের মথুরার ব্রজধাম এলাকা ধর্মীয়, সংস্কৃতি ও প্রাচীন ঐতিহ্যের প্রাণকেন্দ্র ছিল। কী ভাবে এটা বলছেন তাঁরা? রাজস্থানে এএসআইয়ের সাইট সুপারভাইজার পবন সারস্বত জানিয়েছেন, খননের সময় একটি প্রচীন নদীর খোঁজ মিলেছে। সেটি সম্ভবত ঋকবেদে বর্ণিত সরস্বতী নদী। ওই আধিকারিকের মতে, সেই সময় নদীকে কেন্দ্র করে সভ্যতা গড়ে উঠত। সেই সময় সরস্বতী মথুরা থেকে ব্রজধাম এলাকার মধ্যে বইত।
এবং মহাভারত
সবচেয়ে আশ্চর্যের ওই স্থান থেকে মহাভারতের সময়কার মাটির পাত্র ও যজ্ঞকুণ্ডও মিলেছে! মহাকাব্যে বাসনপত্র ও পোশাকের যে বর্ণনা রয়েছে, তার সঙ্গে বহজে পাওয়া সামগ্রীর প্রচুর মিল পাওয়া গিয়েছে। উদ্ধার হয়েছে ৪০০ খ্রিস্ট পূর্বাব্দের মৌর্যযুগের দেবীমূর্তি। ওই স্থানে গুপ্তযুগের স্থাপত্যের নিদর্শন মিলেছে মাটির দেওয়াল ও পিলারে। তামা ও লোহা ব্যবহারেরও প্রমাণ পেয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। একটি নরকঙ্কালও উদ্ধার হয়েছে। পরীক্ষার জন্য সেটিকে ইজরায়েলে পাঠিয়েছে এএসআই। সংস্থার রাজস্থান শাখার প্রধান বিনয় গুপ্তা জানিয়েছেন, এই খননের ফলে শুধু রাজস্থান নয়, গোটা উত্তর ভারতের প্রচীন ইতিহাসের একাধিক অজানা বিষয় সম্পর্কে জানা যাবে। শীঘ্রই স্থানটিকে সংরক্ষিত এলাকা ঘোষণা করা হতে পারে।
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)