NOW READING:
ভোর ৪টেয় ৪ অভিযুক্তকে নিয়ে কসবার কলেজে তদন্তকারীরা, ৪ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে ঘটনার পুনর্নির্মাণ
July 4, 2025

ভোর ৪টেয় ৪ অভিযুক্তকে নিয়ে কসবার কলেজে তদন্তকারীরা, ৪ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে ঘটনার পুনর্নির্মাণ

ভোর ৪টেয় ৪ অভিযুক্তকে নিয়ে কসবার কলেজে তদন্তকারীরা, ৪ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে ঘটনার পুনর্নির্মাণ
Listen to this article


সুকান্ত মুখোপাধ্যায়, কলকাতা : কসবা ‘গণধর্ষণ’কাণ্ডে মনোজিৎ মিশ্র সহ ৪ অভিযুক্তকে ল’ কলেজে নিয়ে গেল পুলিশ। গোটা ঘটনার পুনর্নির্মাণ করা হয়। মনোজিৎদের নিয়ে যাওয়া হয় ইউনিয়ন রুম ও গার্ডরুমে। আজ ভোর ৪টে নাগাদ মনোজিৎ মিশ্র, জেব আহমেদ, প্রমিত মুখোপাধ্য়ায় ও নিরাপত্তারক্ষী পিনাকী বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে যাওয়া হয় কলেজে। মনোজিৎদের জিজ্ঞাসাবাদ করেন পুলিশের শীর্ষ আধিকারিকরা। গত ২৫ তারিখ কসবায় কলেজের মধ্যে ছাত্রীকে গণধর্ষণের অভিযোগ ওঠে।

বিস্তারিত…

এদিন ভোর ৪টের কিছু পরে চার অভিযুক্তকে আনা হয়। প্রথমে তিন অভিযুক্তকে নিয়ে যাওয়া হয়। মনোজিৎ মিশ্র, প্রমিত মুখোপাধ্যায় ও জেব আহমেদকে। তাদের আনার ১০ মিনিট পর অর্থাৎ ঘটনার দিন অর্থাৎ ২৫ তারিখে রাত ৮টা থেকে পরের দিন সকাল ৮টা পর্যন্ত ডিউটিতে থাকা সেই সিকিউরিটি গার্ড পিনাকী বন্দ্যোপাধ্যায়কেও নিয়ে যাওয়া হয়। এই চারজনকে নিয়ে ৪টে থেকে ৮টা ২১ মিনিট পর্যন্ত, অর্থাৎ চার ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে ঘটনার পুনর্নির্মাণ করা হয়। এরপর তদন্তকারীরা অভিযুক্তদের নিয়ে বেরিয়ে যান। প্রসঙ্গত, কসবা গণধর্ষণকাণ্ডের তদন্তভার প্রথমে থানা দেখছিল। দিন দু’য়েক আগে এর তদন্তভার কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ নেয়। সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে এই পুরর্নির্মাণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এজন্য যে, এই ধরনের গণধর্ষণের ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে পারিপার্শ্বিক তথ্যপ্রমাণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়। নির্যাতিতার বয়ান, সেই বয়ানে যে ধরনের ঘটনা প্রবাহ থাকে সেটাকে ঘটনার পুনর্নির্মাণের মাধ্যমে একবার খতিয়ে দেখেন তদন্তকারীরা।  

জনস্বার্থ মামলা

কসবার আইন কলেজে প্রথম বর্ষের ছাত্রীকে গণধর্ষণের মতো ভয়ঙ্কর অভিযোগ ঘিরে তোলপাড় পড়ে গিয়েছে রাজ্যে। কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি সৌমেন সেন ও বিচারপতি স্মিতা দাস দে-র বেঞ্চে দায়ের হয়েছে ৩টি জনস্বার্থ মামলা। একজন প্রাক্তনী কিভাবে কলেজে প্রবেশাধিকার পান ? কলেজের সময় শেষ হওয়ার পরেও কেন তাঁরা সেখানে উপস্থিত ছিলেন? অনধিকার প্রবেশ আটকাতে কলেজে কী ব্যবস্থা আছে? আগে অভিযোগ জানানো হলেও কেন কলেজ এবং পুলিশ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করেনি? CCTV বা অন্য নজরদারি ব্যবস্থায় কেন খামতি ছিল? এই সব প্রশ্ন তুলে কলকাতা হাইকোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতির নজরদারিতে তদন্তের আর্জি জানিয়েছেন মামলাকারীরা।

মামলাকারীদের অভিযোগ, একাধিক কলেজে প্রায় প্রতিদিন আসছেন কিছু প্রাক্তনী। কলেজ কীভাবে চলবে, ছাত্রছাত্রীরা কীভাবে চলবেন তা নির্ধারণ করে দিচ্ছেন তাঁরা। ইউনিয়ন রুমকে অবৈধ কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। পড়াশোনা করার জন্য আসা জুনিয়রদের ওপর অত্যাচার চালানো হচ্ছে। প্রাক্তনীরা এতটাই প্রভাবশালী যে ভয়ে কার্যত সিঁটিয়ে থাকে কলেজ কর্তৃপক্ষ। ওই প্রাক্তনীদের সঙ্গে কলেজের কর্মীদের একাংশের যোগ রয়েছে।

জনস্বার্থ মামলাগুলিতে যে সব অনিয়ম ও অবৈধ কাজের অভিযোগ করা হয়েছে, তার প্রেক্ষিতে সরকার বা কলেজ কর্তৃপক্ষ কী পদক্ষেপ করেছে? এ নিয়ে সরকার ও কলেজ কী ভাবছে? সাউথ ক্যালকাটা ল’ কলেজে ছাত্রী-ধর্ষণের অভিযোগের মামলায় এই প্রশ্ন তুলে রাজ্য সরকার ও কলেজ কর্তৃপক্ষের কাছে হলফনামা তলব করেছে কলকাতা হাইকোর্ট। আদালত জানিয়েছে, তদন্তের অগ্রগতি রিপোর্টের পাশাপাশি, কার কার গোপন জবনাবন্দি নেওয়া হয়েছে, গোপন জবানবন্দিতে তাঁরা কী বলেছেন, সব কিছু খতিয়ে দেখবে আদালত। তারপর দেওয়া হবে প্রয়োজনীয় নির্দেশ। 

নির্যাতিতার পরিবারের আইনজীবী এদিন আদালতে জানান, পুলিশের SIT-র কাছ থেকে সব রকম সাহায্য পাচ্ছেন। আস্থা রয়েছে SIT-এর ওপর। তাঁর আবেদন, আদালতে দায়ের হওয়া সব মামলায় পরিবারকে যুক্ত করা হোক। 

মামলার পরবর্তী শুনানি আগামী বৃহস্পতিবার।



Source link