বার্মিংহাম: ইনিংসের শুরুটা ভালভাবে হয়নি। তবে দিনের শেষটা বেশ ভালই করল ভারতীয় দল। সৌজন্যে শুভমন গিল (Shubman Gill) ও রবীন্দ্র জাডেজা (Ravindra Jadeja)। এক সময় চাপে পড়ে যাওয়া ভারতীয় দলকে উদ্ধার করলেন এই দুই তারকা। পঞ্চম উইকেটে এই দুইজনের লড়াকু ৯৯ রানের পার্টনারশিপেই পাঁচ উইকেটে ৩১০ রান তুলে দিন শেষ করল ভারত। শুরুতে যশস্বী জয়সওয়াল (Yashasvi Jaiswal) অল্পের জন্য শতরান হাতছাড়া করলেও সুযোগ ছাড়েননি গিল। অধিনায়ক হিসাবে নাগাড়ে দ্বিতীয় ও ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে টেস্টে টানা তৃতীয় সেঞ্চুরি এল তাঁর ব্যাট থেকে।
আজ তিন বদল করে মাঠে নেমেছিল ভারত। যশপ্রীত বুমরাকে জল্পনা মতোই বিশ্রাম দেওয়া হয়। বাদ পড়েন শার্দুল ঠাকুর ও সাই সুদর্শনও। বদলে আকাশদীপ, ওয়াশিংটন সুন্দর ও নীতীশ কুমার রেড্ডি দলে ডাক পান। এদিন টস হেরে প্রথমে ব্যাটে নামে ভারতীয় দল। শুরুটা অত্যন্ত রক্ষণাত্মকভাবেই করেছিলেন যশস্বী ও রাহুল। ক্রিস ওকসের দুরন্ত স্পেলে রান করতে বিপাকে পড়ে ভারতীয় দল। শেষমেশ ওকসের বল ডিফেন্ড করতে গিয়েই প্লেডঅন হন রাহুল। মাত্র ১৫ রানে ওপেনিং পার্টনারশিপ ভাঙে। সাই সুদর্শনের অনুপস্থিতিতে এদিন তিন নম্বরে ব্যাট করতে নামেন করুণ নায়ার।
শুরুটা কিন্তু করুণ মন্দ করেননি করুণ। তিনি বেশ দেখেশুনে এগোন। ওকসের স্পেল শেষ হওয়ার পরেই রানের গতিও বাড়ে। বিশেষ করে যশস্বী দলের ইনিংস এগিয়ে যান বেশ দ্রুত গতিতে। করুণ নায়ারও তাঁকে যোগ্য সঙ্গ দেন। দুইজনে মিলে দেখতে দেখতে অর্ধশতরানের পার্টনারশিপ গড়ে ফেলেন।মাত্র ৫৯ বলে হাফসেঞ্চুরি পূরণ করেন যশস্বীও। মনে হচ্ছিল শুরুতে উইকেট হারালেও, তাঁরা লাঞ্চের আগে প্রথম সেশনটা ভারতের নামেই করতে সক্ষম হবেন।
তবে হঠাৎই লাঞ্চের ঠিক কয়েক মিনিট আগে ব্রাইডন কার্সের এক বল গুড লেংথ থেকে দারুণভাবে লাফায়। বল করুণ নায়ারের দস্তানায় লেগে স্লিপে যায়। লোপ্পা ক্যাচ ধরেন হ্যারি ব্রুক। শুরুটা ভাল করেও ৩১ রানেই তাঁকে ফিরতে হয়। যশস্বী ও শুভমন গিল অবশ্য় সেশনে শেষের আগে আর যাতে কোনও উইকেট না পড়ে, তা সুনিশ্চিত করেন।
দ্বিতীয় সেশনে প্রথম ওভারেই যশস্বী ভারতীয় দলকে শতরানের গণ্ডি পার করান। এই সেশনে তিনি ও গিল, উভয়েই ক্রিস ওকসদের বিরুদ্ধে বেশ দেখেশুনেই ইনিংস এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন। যশস্বী নাগাড়ে দ্বিতীয় শতরানের দিকে অগ্রসর হচ্ছিলেন। তবে বেন স্টোকসের বিরুদ্ধে বেশ বাইরের একটি বল মারতে গিয়ে কিপারের হাতে ক্যাচ দেন যশস্বী। ৮৭ রানেই তাঁকে সাজঘরে ফিরতে হয়। বাকি সময়টা গিল ও ঋষভ পন্থ দেখেশুনেই ইনিংসটা এগিয়ে নিয়ে যান। এই সেশনে আর কোনও উইকেট পড়েনি ভারতীয় দল।
তৃতীয় সেশনে ভারতীয় দলের সমথর্করা আশা করেছিলেন পন্থ ও গিল দলের ইনিংসকে এগিয়ে নিয়ে যাবেন। তবে ভারতীয় দল দু’শো রান পার করার পরেই পন্থ বশিরের বিরুদ্ধে বড় শট মারতে গিয়েই ২৫ রানে লং অনে ধরা দেন। মাত্র এক রান করে ক্রিস ওকসের বলে আউট হন নীতীশ কুমার রেড্ডিও। ২১১ রানে পাঁচ উইকেট হারিয়ে ফেলে ভারত। এমন পরিস্থিতিতে আরেক উইকেট পড়লে টিম ইন্ডিয়ার চাপ অনেকটাই বাড়ত। তবে পরিপক্কতা ও দুরন্ত টেকনিকের পরিচয় দেন গিল ও রবীন্দ্র জাজেজা। বাকি দিনে আর কোনও উইকেট পড়েনি।
গিল দেখতে দেখতেই ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে নাগাড়ে তৃতীয় শতরান হাঁকিয়ে ফেলেন। ভারতীয় দলও তিনশো রানের গণ্ডি পার করে। দিনশেষে তিনি ১১৪ রানে অপরাজিত রয়েছেন। জাডেজার সংগ্রহ ৪১ রান। বড় রানের পথে অগ্রসর ভারতীয় দল। দুই উইকেট নিয়ে আজ ইংল্যান্ডের সেরা বোলার কিন্তু ক্রিস ওকস।