কলকাতা: চিৎপুরে প্রবীণ দম্পতিকে খুনের ঘটনায় ফাঁসির সাজা। দোষী সাব্যস্তকে ফাঁসির সাজা শোনাল শিয়ালদা কোর্ট। ২০১৫ সালে চিৎপুরের প্রবীণ দম্পতি খুন হন। সেই মামলায় দোষী সাব্য়স্ত হন সঞ্জয় সেন ওরফে বাপ্পা। নিহত দম্পতির বাড়িতে পরিচারিকা হিসেবে কাজ করতেন সঞ্জয়ের স্ত্রী। শিয়ালদা কোর্টের বিচারক অনির্বাণ দাস এই মামলায় ফাঁসির সাজা শোনালেন। আর জি করে তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণের মামলাতেও তিনি বিচারক ছিলেন। (Sealdah Court)
২০১৫ সালের জুলাই মাসে চিৎপুরের ইন্দ্রালোক আবাসনে খুন হন প্রবীণ দম্পতি। নৃশংস ভাবে খুন করা হয় তাঁদের। সেই মামলার তদন্ত করছিল লালবাজারের হোমিসাইড শাখা। পারিপার্শ্বিক তদন্ত প্রমাণ নিয়ে এতদিন ধরে শুনানি চলছিল। গতকালই দোষী সাব্যস্ত করাহয় সঞ্জয়কে। ১০ বছর পর, ২০২৫ সালের ২ জুলাই দোষী সাব্য়স্ত সঞ্জয়কে মৃত্যুদণ্ডের সাজা শোনাল আদালত। বিচারক জানান, ঘটনার বীভৎসতা এবং নৃশংসতার কথা মাথায় রেখেই ফাঁসির সাজা শোনানো হয়েছে। (Capital Punishment)
এদিন সাজা শোনাতে গিয়ে বিচারক জানান, যেভাবে প্রবীণ দম্পতিকে খুন করা হয়, ঘটনার বীভৎসতা এবং নৃশংসতা বিরলের মধ্যে বিরলতম ঘটনার মধ্যে পড়ে। তাই দোষী ব্যক্তিকে মৃত্যুদণ্ডের সাজা শোনানো হল। এর আগে, আর জি করের ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার শুনানিও করেন বিচারক অনির্বাণ দাস। তিনি সঞ্জয় রায়কে যাবজ্জীবনের সাজা শুনিয়েছিলেন।
১০ বছর আগে চিৎপুরের ফ্ল্যাটে খুন হন যে প্রবীণ দম্পতি, তাঁরা দু’জনই অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক ছিলেন। তদন্তে নেমে সঞ্জয়ের নাম উঠে আসে। নন্দীগ্রাম থেকে তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। জানা যায়, বাড়ির পরিচারিকার উপর নির্ভরশীল ছিলেন প্রবীণ দম্পতি। সঞ্জয়কেও বিশ্বস্ত বলে মনে করতেন। কিন্তু তদন্তকারীরা জানান, লোহার পাইপ দিয়ে প্রবীণ দম্পতির মুখ থেঁতলে দিয়েছিল সঞ্জয়। পুকুর থেকে সেই পাইপ উদ্ধারও করেন তদন্তকারীরা।
সঞ্জয়ের কঠোর শাস্তি দাবি করেন সরকারি আইনজীবী। জানান, পেশায় রিকশাচালক সঞ্জয়কে বিশ্বাস করতেন প্রবীণ দম্পতি। নানা ভাবে তাকে সাহায্য়ও করতেন তাঁরা। ওই দম্পতির একটি ঘরে সঞ্জয় থাকতে চাওয়াতেই অশান্তি শুরু হয়। তাঁদের বিশ্বাসের সুযোগ নিয়ে অপরাধ ঘটায়। ওই দম্পতি কখন পেনশন তুলতে যান, সব জানা ছিল তার। সঞ্জয় ওই দম্পতিকে খুন করে প্রায় ২ লক্ষ টাকা, ৫০ ভরি সোনা নিয়ে পালিয়ে যায়। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। তদন্তে নেমে তাকে ধরে ফেলে পুলিশ।