NOW READING:
সেলুলয়েড থেকে স্টার্টআপ: অভিনেত্রী সুস্মিতা রায় এর মিডোকার্ট-এর কো-ফাউন্ডার হয়ে ওঠার উপাখ্যান
July 1, 2025

সেলুলয়েড থেকে স্টার্টআপ: অভিনেত্রী সুস্মিতা রায় এর মিডোকার্ট-এর কো-ফাউন্ডার হয়ে ওঠার উপাখ্যান

সেলুলয়েড থেকে স্টার্টআপ: অভিনেত্রী সুস্মিতা রায় এর মিডোকার্ট-এর কো-ফাউন্ডার হয়ে ওঠার উপাখ্যান
Listen to this article


জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: আজকের কোলাহলপূর্ণ, দ্রুতগতির শহুরে জীবনে, সত্যিই বিশুদ্ধ এবং পুষ্টিকর খাবার খুঁজে পাওয়া একটি দূরবর্তী স্বপ্নের মতো মনে হতে পারে। আর এখানেই আগমন মিডোকার্ট- এর — একটি এমন প্ল্যাটফর্ম যা মানুষকে সেই ধরনের খাবারের সাথে পুনঃসংযোগ করতে উৎসর্গীকৃত যা ভীষণভাবে খাঁটি ও বিশুদ্ধ। পুষ্টিতে সমৃদ্ধ গরুর দুধ থেকে শুরু করে তাজা এবং প্রাকৃতিক ফল ও সবজি, মিডোকার্ট প্রকৃতির সেরা খাবার সরাসরি পৌঁছে দিচ্ছে ঘরে ঘরে। এবং এই অনুভূতিকে যে সবচেয়ে ভালো করে বোঝেন, তিনি হলেন অভিনেত্রী সুস্মিতা রায়।

সুন্দরবনের গোসাবার সবুজ গ্রামে বড় হয়ে ওঠা সুস্মিতার জীবনে ছিল জমির খাঁটি ও সতেজ শাকসবজি, বাগানের ফল, খাঁটি গরুর দুধের স্বাদ — আর এসবেরই অনাবিল আনন্দ। কিন্তু যখন অভিনয়ের খাতিরে তিনি পা রাখেন কলকাতার ঝলমলে জগতে, তখন কোথায় যেন হারিয়ে গেল সেই স্বাদ, সেই স্বাভাবিকতা। “শহরে এসে সবকিছু বদলে গেল — কিন্তু খাঁটি খাবারের প্রতি আমার টান একই রইল,” বলেন সুস্মিতা। “এটা শুধুই স্মৃতি নয়, এটা ছিল শারীরিক ও মানসিক ভাবে ভালো থাকার চাবিকাঠি — যেটা একসময় প্রকৃত খাবারে তৃপ্তি পেত।”

আর সেই খাঁটি স্বাদের আশা যখন তিনি প্রায় ছেড়েই দিয়েছিলেন, তখনি হঠাৎ তিনি খোঁজ পেয়ে গেলেন মিডোকার্ট- এর। গ্রাহক হিসেবে শুরু হয় তার যাত্রা কিন্তু ধীরে ধীরে বিশ্বাস ও ব্রান্ডের ওপর ভালোবাসা থেকে তিনি হয়ে ওঠেন মিডোকার্টের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর এবং পরবর্তীতে কো-ফাউন্ডার। “মিডোকার্ট শুধু একটা প্ল্যাটফর্ম নয় — এটা এক সেতু। আমার শৈশবের গ্রাম্য খাঁটি খাবার আর এখনকার নাগরিক জীবনের মধ্যে এক যোগসূত্র,” জানান তিনি।

অভিনেত্রীর ব্যক্তিগত জীবনের গল্প আমাদের ,মন ছুঁয়ে যায় ঠিকই, তবে সত্যিকারের হিরো হল মিডোকার্ট। আর মিডোকার্ট শুধু একটি ব্র্যান্ড নয়, মিডোকার্ট হলো মানুষের হারিয়ে যাওয়া বিশুদ্ধতা। বিশুদ্ধ স্বাদ ও খাবারে প্রকৃতির ছোঁয়া যেখানে হয়ে যাচ্ছিলো প্রায় বিলুপ্তপ্রায়,যেখানে চারপাশ ভরে আছে প্রক্রিয়াজাত শর্টকাটে, সেখানে মিডোকার্টের হাত ধরে আবার সকলে ফিরে পাবেন সেই বিশুদ্ধতা।

মিডোকার্ট কী?

২০২৩ সালের এপ্রিল মাসে সুভাষিশ দে-র প্রতিষ্ঠিত এবং দেবব্রত রায়, অভিনেত্রী সুস্মিতা রায় ও পরিতোষ ভাট-এর সহ-প্রতিষ্ঠিত মিডোকার্ট হল একটি প্রিমিয়াম প্ল্যাটফর্ম, যা উচ্চমানের দুধ, দুগ্ধজাত পণ্য ও প্রাকৃতিকভাবে উৎপাদিত জৈব খাদ্য সামগ্রীর উপর বিশেষভাবে কেন্দ্রিত। “Pure Goodness, Delivered Sustainably” শুধু এক স্লোগান নয় — এটি মিডোকার্ট-এর মূল দর্শন। সতেজ ও স্বাস্থ্যকর পণ্য সরবরাহের অঙ্গীকারেই তৈরি হয়েছে এই ব্র্যান্ড, যারা প্রতিটি পদক্ষেপে পরিবেশবান্ধব প্যাকেজিং ও টেকসই পদ্ধতি অনুসরণ করে।

কি কি সমস্যা সমাধান করছে মিডোকার্ট?

ভারতে দুধ ও দুগ্ধজাত পণ্য স্থানীয় বিক্রেতাদের থেকে কিনতে গিয়ে সাধারণ ভোক্তারা প্রায়শই পড়েন বিভিন্ন সমস্যায় — ভেজাল, গুণমানের তারতম্য, অনিয়মিত সরবরাহ, দামের ওঠানামা ও স্বাস্থ্যঝুঁকি। অধিকাংশ প্রচলিত বিক্রেতা সঠিক সার্টিফিকেশন, পরিচ্ছন্নতা বা স্বচ্ছতা দিতে ব্যর্থ। মিডোকার্ট এই সমস্যাগুলোরই স্থায়ী সমাধান এনেছে। শুধু ভেজালমুক্ত খাবার বা দুধই নয়, বরং তার পাশাপাশি খাঁটি ও উচ্চমানের দুগ্ধজাত প্রোডাক্ট নিয়ে হাজির হয়েছে মিডোকার্ট।

মিডোকার্ট-এর অভিনব উদ্যোগ

মিডোকার্ট-এর শক্তি শুধুমাত্র তাদের পণ্যের মানে নয়, বরং তাদের উদ্ভাবনী চিন্তাভাবনায়ও:

প্রাকৃতিক পণ্য

প্রত্যেকটি স্বীকৃত এবং বিশ্বস্ত কৃষকদের কাছে থেকে সংগ্রহন করা জৈব পদ্ধতিতে উৎপাদিত পণ্যের উপর প্রবল ভরসা

গ্রাহক-কেন্দ্রিক পরিষেবা

ঝঞ্ঝাটমুক্ত ও সহজভাবে শপিংয়ের অভিজ্ঞতা ও ব্যক্তিগত সহায়তা

সাবস্ক্রিপশন-এর সুবিধা

অন্যতম পরিষেবা হলো ফ্লেক্সিবল সাবস্ক্রিপশন – যেমন ধরুন: ৩ দিনের দুধ কিনলে, পেয়ে যাবেন আরও ৩ দিন ফ্রি!

ইকো-ফ্রেন্ডলি প্যাকেজিং

নিম্ন কার্বন ফু্টপ্রিন্ট নিশ্চিত করতে ইকো-ফ্রেন্ডলি উপায়ে ডেলিভারি।

রিয়েল টাইম ডেলিভারি ট্র্যাকিং

আপনার অর্ডার কোথায় এবং কতদূর পৌঁছেছে, সেটি লাইভ দেখার সুযোগ থাকছে অ্যাপ-এর মাধ্যমে।

হ্যাপি আওয়ার ও দুর্দান্ত অফার

নির্দিষ্ট সময়ে টাটকা সবজি ও ফলের ওপর থাকছে ছাড়, ₹২০০-র বেশি অর্ডারে ফ্রি ডেলিভারি!

দুধ ATM মেশিন

উচ্চ জনবহুল আবাসনে স্থাপন করা হয়েছে দুধের ATM, যাতে গ্রাহকরা পায় আরও বেশি সুবিধা, কম ডেলিভারি খরচে।

স্বাস্থ্য থেকে স্বনির্ভরতা – দেশের যুবসমাজের জন্য মিডোকার্ট নিয়ে এসেছে কর্মসংস্থানের সুযোগ

আজকের দিনে দাঁড়িয়ে যেখানে চাকরি পাওয়া বা কর্মসন্ধান প্রায় এক প্রকার যুদ্ধসমান, সেখানে মিডোকার্ট দিচ্ছে সেই সমস্যার সমাধান। যুবসমাজের কাছে আশার আলো নিয়ে এসেছে মিডোকার্ট। CLEARRCUT-এর মতো স্কিলিং এবং এমপ্লয়মেন্ট ইনিশিয়েটিভের মাধ্যমে মেডোকার্টের ইতিমধ্যেই ১০০০+ লোকের কর্মসংস্থান তৈরি করেছে।

মার্কেটিং, প্যাকেজিং, টেক সাপোর্ট, গ্রাহক সহায়তা থেকে শুরু করে ডেলিভারি বিভিন্ন বিভাগে তৈরি হয়েছে নতুন নতুন কাজের সুযোগ। আর এখানেই শেষ নয়, মিডোকার্ট স্বপ্ন দেখে এবং স্বপ্ন দেখতে সাহায্য করে আর সেই কারণেই আগামী ৫ বছরে প্রায় ৫,০০,০০০ কর্মসংস্থান তৈরি করার প্রচেষ্টা নিয়ে এগিয়ে চলছে। আর এই সমস্ত ভাবনার পেছনে রয়েছে একটি বিশেষ চিন্তাধারা- দেশের বেকারত্বের সমস্যা সমাধান। হাজার হাজার পরিবারে আর্থিক স্থিতিশীলতা এনে দেওয়ার প্রচেষ্টাতেই এই সিদ্ধান্ত।

গ্রামের সাধারণ যুবক থেকে শুরু করে শহরের শিক্ষিত তরুণ-তরুণী—প্রত্যেকেই পাবেন এই উদ্যোগে অংশগ্রহণের সুযোগ। এটি কেবল একটি চাকরি নয়, বরং একটি সামাজিক অঙ্গীকার—একটি সুস্থ, সচেতন ও কর্মচঞ্চল সমাজ গঠনের স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করার মঞ্চ।

ভারতের বাজারে বিশাল সম্ভাবনা

২০২৩ সালে ভারতের দুগ্ধ বাজারের আকার ছিল প্রায় $24.77 বিলিয়ন, যা ২০২৯ সালের মধ্যে $35.96 বিলিয়নে পৌঁছাতে পারে। এই চাহিদাকে কেন্দ্র করেই মিডোকার্ট-এর সাবস্ক্রিপশন মডেল ও টেকসই মানের পণ্য পৌঁছে দিচ্ছে সরাসরি মানুষের দোরগোড়ায়।

এছাড়াও Blinkit, BigBasket ও স্থানীয় দোকানের সঙ্গে B2B পার্টনারশিপের মাধ্যমে দ্রুত এগোচ্ছে মিডোকার্ট।

দুধ, ঘি, খাঁটি মধু, টক দই, ফার্ম ফ্রেশ ডিম, ডিটক্স ওয়াটার, ফল ও সবজি — সবকিছু এক প্ল্যাটফর্মেই সহজলভ্য।

মিডোকার্টের ‘লাস্ট মাইল ফ্র্যাঞ্চাইজি’ উদ্যোগ: গতি ও নির্ভরতা থাকুক ডেলিভারিতে

সমস্ত গ্রাহকদের কথা মাথায় রেখে এবং তাদের কাছে পণ্য আরও দ্রুত ও নিরবচ্ছিন্নভাবে পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্য নিয়ে মিডোকার্ট নিয়ে এসেছে ‘লাস্ট মাইল ফ্র্যাঞ্চাইজি’ মডেল। কলকাতায় ইতিমধ্যেই চালু হয়েছে ৫টি ফ্র্যাঞ্চাইজি, আরও ১২টি বুকিং হয়ে গেছে, এবং চলতি বছরের মধ্যেই ৪৮টি নতুন ফ্র্যাঞ্চাইজি চালু করার পরিকল্পনা রয়েছে।

এই নতুন উদ্যোগের প্রধান লক্ষ্য হল গোটা ডেলিভারি সিস্টেমটিকে আরও নির্ভরযোগ্য এবং শক্তিশালী করে তোলা। প্রত্যেকটি গ্রাহকের ঘরে ঘরে যেন মিডোকার্টের পণ্য পৌঁছে যায় কোনো সমস্যা ছাড়া, সেটির জন্যেই এই ফ্র্যাঞ্চাইজি মডেল।

মিডোকার্ট-এর ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা

প্রাথমিক ₹৫ কোটি টাকার বিনিয়োগের সুযোগকে কাজে লাগিয়ে, কোম্পানির লক্ষ্য:

নতুন অঞ্চলে প্রক্রিয়াকরণ কেন্দ্র ও সংগ্রহ পয়েন্ট স্থাপন

কাঁচামাল সংগ্রহ ও পণ্যের পরিসর বৃদ্ধিতে বিনিয়োগ

ব্র্যান্ড প্রচার ও গ্রাহক সংযোগে জোর

সারা ভারত জুড়ে ব্যবসা সম্প্রসারণ

Meadowkart শুধুমাত্র একটি নাম নয় — এটি এক খাঁটি অঙ্গীকার। আপনি যখন দুধ, জৈব শাকসবজি, বা খাঁটি দুগ্ধজাত পণ্য অর্ডার করেন, আপনি এক বিশেষ মানের ও বিশ্বাসযোগ্যতার অংশ হন।

গোসাবার মাঠ থেকে কলকাতার নাগরিক জীবনে — অভিনেত্রী সুস্মিতা রায়ের স্মৃতির গল্প আসলে লক্ষ লক্ষ মানুষের মনের কথা। আর সেই পুরনো খাঁটি স্বাদই ফিরিয়ে আনছে মিডোকার্ট। কারণ মিডোকার্ট বিশ্বাস করে হেলথ-এর সাথে করা যাবেনা কোনোরকম কম্প্রোমাইস!

বিশদে জানতে এবং বিশুদ্ধ ও খাঁটি খাবারের অর্ডার করতে, ভিজিট করুন: www.meadowkart.com

ডাউনলোড করুন মিডোকার্ট অ্যাপ — App Store ও Google Play-এ উপলব্ধ।

মিডোকার্ট— সুস্বাস্থ্য ও স্বাদের একমাত্র সেতু

(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের AppFacebookWhatsapp ChannelX (Twitter)YoutubeInstagram পেজ-চ্যানেল)





Source link