NOW READING:
কলকাতার একাধিক কলেজ মনোজিৎ-মডেলেই স্থায়ী-অস্থায়ী কর্মী নিয়োগ ! নেপথ্যে মধুভাণ্ডের খেলা ?
June 30, 2025

কলকাতার একাধিক কলেজ মনোজিৎ-মডেলেই স্থায়ী-অস্থায়ী কর্মী নিয়োগ ! নেপথ্যে মধুভাণ্ডের খেলা ?

কলকাতার একাধিক কলেজ মনোজিৎ-মডেলেই স্থায়ী-অস্থায়ী কর্মী নিয়োগ ! নেপথ্যে মধুভাণ্ডের খেলা ?
Listen to this article



<p><strong>কৃষ্ণেন্দু অধিকারী ও দীপক ঘোষ, কলকাতা : </strong>গণধর্ষণে মূল অভিযুক্ত তৃণমূলকর্মী এবং প্রাক্তন TMCP নেতা মনোজিতকে, কসবার কলেজে অস্থায়ী কর্মী হিসেবে নিয়োগের সুপারিশ করে পরিচালন সমিতি। যার মাথায় তৃণমূলেরই বিধায়ক অশোক দেব। তবে এই ঘটনা শুধু এই একটি কলেজের নয়। কলকাতায় আরও একাধিক কলেজ রয়েছে, যেখানে কার্যত মনোজিৎ-মডেলেই স্থায়ী কিংবা অস্থায়ী কর্মী হিসেবে নিয়োগ করা হয়েছে, প্রাক্তন TMCP নেতা অথবা প্রাক্তন GS-দের।</p>
<p>ছাত্রাবস্থা ঘুচেছে বেশ কয়েকবছর আগে। আলিপুর আদালতে প্র্য়াকটিস অবধি করেন! তাও গণধর্ষণে মূল অভিযুক্ত তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রাক্তন নেতা এবং তৃণমূলকর্মী মনোজিৎ মিশ্র কসবার আইন কলেজের অস্থায়ী কর্মীর পদ আঁকড়ে বসে ছিলেন। তৃণমূলকর্মী মনোজিতের নিয়োগে ছাড়পত্র দিয়েছিল যে পরিচালন সমিতি, তার মাথায় রয়েছেন তৃণমূল বিধায়ক অশোক দেব।</p>
<p>মনোজিতের কুকীর্তি সামনে আসার পরই, ফের কলেজে কলেজে রাজনৈতিক মদতে নিয়োগের বিষযটি সামনে আসতে শুরু করেছে। সূত্রের খবর, আশুতোষ কলেজে ছাত্র সংসদের একদা দোর্দণ্ডপ্রতাপ এক তৃণমূল ছাত্র পরিষদ নেতা হেড ক্লার্কের চাকরি পেয়েছেন! এই কলেজেই টিএমসিপি পরিচালিত ছাত্র সংসদের প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক কলেজের হিসেবরক্ষকের চাকরি পেয়েছেন। আশুতোষ কলেজের অধ্যক্ষ মানস কবি বলেন, "ওঁরা অনেক আগে জয়েন করেছেন। আমি সেই সময় চেয়ারে ছিলাম না। আমি ২০২৩ সালে মে মাসে জয়েন করেছি।"&nbsp;</p>
<p>সূত্রের খবর, সুরেন্দ্রনাথে কলেজে এমন ৪ জনকে নিয়োগ করা হয়েছে, যাঁদের মধ্য়ে কেউ ছিলেন তৃণমূলের ছাত্রনেতা, কেউ ছিলেন ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক। সুরেন্দ্রনাথ কলেজের অধ্যক্ষ ইন্দ্রনীল কর বলেন, "আমাদের কলেজে তিন-চারজন আছেন। একজন জিএস ছিলেন। বাকিরা ছাত্রনেতা ছিলেন। অসুবিধা কিছু নয়, তাঁদের দাবি বেশি থাকে কারণ কলেজের ছাত্র। তাঁদের অধিকার একটু বেশি। সুবিধা হচ্ছে, তাঁদের মধ্যে কলেজ নিয়ন্ত্রণ করতে অনেক সুবিধা হয়।"</p>
<p>এখানেই শেষ নয়। সূত্রের খবর, যোগেশচন্দ্র চৌধুরী কলেজে তৃণমূল পরিচালিত ছাত্র সংসদের প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক এখন সেখানকার নন টিচিং স্টাফ। গুরুদাস কলেজে তৃণমূল পরিচালিত ছাত্র সংসদের একদা নেতা এখন শিক্ষাকর্মী। মণীন্দ্র কলেজে ৫ জন অস্থায়ী কর্মীকে নিয়োগ করা হয়েছে, যার মধ্য়ে দু’জন তৃণমূল পরিচালিত ছাত্র সংসদের প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক। আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু কলেজেও শিক্ষাকর্মীর চাকরি পেয়েছেন তৃণমূল পরিচালিত ছাত্র সংসদের প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক। এই সমস্ত নিয়োগই হয়েছে ২০১১ সালের পর। অর্থাৎ তৃণমূলের জমানায়। যিনি ছিলেন কলেজের ছাত্র নেতা কিংবা ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক, তিনিই পরবর্তীকালে হঠাৎ পেয়েছেন ল্য়াব অ্য়াসিস্ট্য়ান্ট কিংবা লিফটম্য়ানের চাকরি!&nbsp;</p>
<p>সূত্রের খবর, কসবার সাউথ ক্য়ালকাটা ল কলেজে তৃণমূলকর্মী মনোজিৎ যে অস্থায়ী পদে চাকরি করতেন, তার বেতন দিনে পাঁচশো টাকা। কিন্তু, যার কলেজের পাট চুকে গেছে, যিনি আইনজীবী হিসেবে প্র্য়াকটিস করেন, তিনি কোন মোহে দৈনিক পাঁচশো টাকার চাকরি আঁকড়ে থাকেন ? অনেকে বলছেন, পাঁচশো টাকা তো নিমিত্ত! আসলে এর পিছনে রয়েছে মধুভাণ্ডের খেলা।</p>
<p>অল বেঙ্গল প্রিন্সিপাল কাউন্সিলের প্রাক্তন সভাপতি পূর্ণচন্দ্র মাইতি বলেন, "ছাত্ররা শুধুমাত্র ওই কলেজে ৫ হাজার, ১০ হাজার টাকা মাইনের জন্য় কলেজে থাকে না। তারা থাকে মূলত ভর্তির মাধ্য়মে মুনাফা অর্জন এবং কলেজে যে কাজকর্মগুলো হয়, অধিক মূল্য়ে সেগুলোকে সম্পন্ন করে, মুনাফা অর্জনের উদ্দেশে তারা কলেজগুলোতে থাকে।"</p>
<p>এতকিছুর পরও এইসব নিয়োগের মধ্য়ে আপত্তির কিছু দেখছে না তৃণমূল। অশোক দেব বলছেন, "আমাদের দলে যারা ছাত্র রাজনীতি করে তারা কি কাজ করবে না ?তারা কি বেকার থাকবে? কাজ পেলে আপত্তি কোথায় ? আজ সরকার আমাদের আছে। স্থায়ী চাকরি তো দিচ্ছি না। অনেক ছেলে সারা জীবন রাজনীতি করছে। সারা বছর রাজনীতি করছে! তাতে আপত্তি?"</p>
<p>পুলিশ সূত্রে খবর, মনোজিত মিশ্রর বিরুদ্ধে এর আগে বিভিন্ন থানা মিলিয়ে ১১টা অভিযোগ দায়ের হয়েছিল! কিন্তু মাথায় ছিল রাজনৈতিক প্রশ্রয়।&nbsp;</p>
<p>তারই পরিণতিই আজ ভুগতে হল এক ছাত্রীকে।&nbsp;</p>



Source link