কলকাতা : কসবাকাণ্ডে আজও প্রতিবাদের ঢেউ। বিজেপির প্রতিবাদ মিছিল ঘিরে ধুন্ধুমার কাণ্ড বাঁধল গড়িয়াহাটে। গড়িয়াহাটে মিছিল শুরু হওয়ার আগেই তাদের আটকে দেয় পুলিশ। বিজেপি কর্মীরা ব্যারিকেড ভাঙতেই অ্যাকশনে নেমে পড়ে পুলিশ। একের পর এক বিজেপি নেতা-কর্মীকে পাকড়াও করা হয়। আটক করা হয় সুকান্ত মজুমদারকেও। প্রিজন ভ্যানে তোলা হয়েছে রাজ্য বিজেপির সভাপতিকে। বিজেপির বিক্ষোভ ঘিরে ধরপাকড়ে কার্যত অবরুদ্ধ হয়ে রয়েছে গড়িয়াহাট মোড়।
আর জি করকাণ্ড নাড়িয়ে দিয়ে গেছে গোটা রাজ্যকে। তার রেশ কাটতে না কাটতেই কসবার কলেজে ছাত্রীকে গণধর্ষণের অভিযোগ সামনে এসেছে। দক্ষিণ কলকাতার ল কলেজের এই ঘটনা ঘিরে গতকাল থেকেই প্রতিবাদ শুরু হয়েছে। এদিন গড়িয়াহাট-কসবা প্রতিবাদ মিছিল ডাকে বিজেপি। সেই লক্ষ্যে জমায়েত শুরু করেন বিজেপি কর্মী-সমর্থকরা। কিন্তু, তাঁদের ঠেকাতে তৎপর ছিল পুলিশ। প্রায় এক ঘণ্টা ধরে গড়িয়াহাট মোড়ে মোতায়েন ছিল পুলিশ। প্রচুর সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়। প্রতিবাদ মিছিলে শামিল হতে সুকান্ত মজুমদারের গাড়ি আসতেই তার অনতিদূরে ব্যারিকেড করে দেওয়া হয় পুলিশের তরফে। যদিও সেই ব্যারিকেড ভেঙে এগনোর চেষ্টা করেন বিজেপি কর্মী-সমর্থকরা। সেই সময় পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি হয় তাঁদের। সেই সময় সুকান্ত মজুমদার, জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায় ও তমোঘ্ন ঘোষদের আটকে দেওয়া হয়। তাঁদের যেতে দেওয়া হয়নি। তা সত্ত্বেও থানার সামনে পর্যন্ত যাওয়ার চেষ্টা করছিল বিজেপি। সেখানে তাঁদের একটা মিছিল ছিল। কেন পুলিশ তাঁদের আটকাচ্ছে ? জানতে চান সুকান্ত মজুমদার। সেই সময় চরম উত্তেজনা ছড়ায় গড়িয়াহাট মোড়ে। কার্যত অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে ব্যস্ত ওই এলাকা। এরপর একে একে বিজেপি নেতা-কর্মীদের ধরে প্রিজন ভ্যানে তোলে পুলিশ। সুকান্ত মজুমদারকেও আটক করে প্রিজন ভ্যানে তোলা হয়। ‘মমতা ব্যানার্জি হায় হায়’ বলে স্লোগান তোলেন সুকান্ত। তিনি বলেন, “পুলিশের আচরণ গণতন্ত্রের হত্যাকারীর আচরণ। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই রাজ্যকে কিম জং উনের উত্তর কোরিয়াতে পরিণত করেছেন। প্রয়োজনে হাজার বার গ্রেফতার হতে রাজি আছি, কিন্তু বাংলার মেয়েদের ধর্ষণ বন্ধ হওয়া চাই।”
নিজের কলেজেই আইনের ছাত্রীকে গণধর্ষণের অভিযোগ ঘিরে উত্তাল শহর কলকাতা। গ্রেফতার কলেজের প্রাক্তনী, TMCP নেতা মনোজিৎ মিশ্র ও ২ আইন পড়ুয়া প্রমিত মুখোপাধ্যায় ও জেব আহমেদ। গতকাল ঘটনাস্থলে যায় ফরেন্সিক টিম। কলেজের ইউনিয়ন রুম, ওয়াশ রুম এবং গার্ড রুম পরিদর্শন করেন বিশেষজ্ঞরা। সূত্রের খবর, ঘটনাস্থলে ছেঁড়া চুল, ধস্তাধস্তির প্রমাণ মিলেছে। FIR উল্লেখিত হকি স্টিক এবং বেশ কিছু নমুনাও সংগ্রহ করেন ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞরা। নির্যাতিতার অভিযোগে উল্লেখ, ধর্ষণে বাধা দেওয়ায় তাঁকে হকি স্টিক দিয়ে মারার চেষ্টা হয়। এ ছাড়াও ইউনিয়ন রুম থেকে মিলেছে প্লাস্টিক ও কাচের বেশ কিছু বোতল। যেগুলোর কেমিক্যাল পরীক্ষা করা হবে। কসবাকাণ্ডে ঘটনার পুনর্নির্মাণ হওয়ারও সম্ভাবনা রয়েছে।