জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি ইসরায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধতে ইরানকে জয়ী ঘোষণা করেছে। এই যুদ্ধের মাধ্যমে ‘আমেরিকার মুখে কঠিন থাপ্পড় মেরেছে ইরান’- বলেই মন্তব্য করেছেন খামেইনি। যুদ্ধবিরতির পর প্রথমবার মুখ খুলে হুঙ্কার দিলেন ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতোল্লা আলি খামেইনি। পাশাপাশি, তাঁর স্বগর্বে ঘোষণা, ইজরায়েল-ইরান যুদ্ধে তেহরান জয়লাভ করেছে।
তিনি বলেন, ‘ট্রাম্প ইরানকে ‘আত্মসমর্পণের’ আহ্বান জানিয়েছিলেন। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের তুলনায় তা খুব বড় মন্তব্য ছিল যা তাঁর মুখে মানায় না। খামেইনি আরও বলেন, ইরানের মতো একটি মহান দেশ ও জাতির জন্য আত্মসমর্পণের কথা বলাই অপমানজনক। ডোনাল্ড ট্রাম্প দুর্ঘটনাক্রমে একটা সত্য প্রকাশ করেছেন যে আমেরিকানরা শুরু থেকেই ইরানের বিরোধিতা করে আসছে।’
যুদ্ধবিরতির পর প্রথম বক্তব্য খামেইনির:
বৃহস্পতিবার ইরানি রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে প্রচারিত এক ভিডিও বার্তায় তিনি এসব কথা বলেন। ইসরায়েল-ইরান যুদ্ধের পর এই প্রথমবার প্রকাশ্যে মুখ খুললেন ৮৬ বছর বয়সী খামেইনি।
ইসরায়েলের সঙ্গে যুদ্ধে আমেরিকার ভূমিকার তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়ে খামেইনি বলেন, ‘আমেরিকা কেবল এই কারণে হস্তক্ষেপ করেছিল যে, তারা বুঝতে পেরেছিল, যদি হস্তক্ষেপ না করে, তাহলে ইসরায়েলের শাসনব্যবস্থা সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে যাবে। দুর্ভাগ্যবশত এই যুদ্ধ থেকে তারা কিছুই অর্জন করতে পারেনি। , এই যুদ্ধে আমেরিকা কোনও সাফল্য অর্জন করতে পারেনি। ‘ইরানের পরমাণু কেন্দ্রগুলিতে আক্রমণ করেও আমেরিকা কিছুই অর্জন করতে পারেনি। বড়সড় কোনও ক্ষতি আমাদের হয়নি।’
আরও পড়ুন: Iran-Israel War: মধ্যরাতে ট্রাম্পের ঘোষণাকে তুড়ি মেরে উড়িয়ে ইসরায়েলের আকাশে ফের প্রত্যাঘাত ইরানের…
কাতারের মার্কিন ঘাঁটিতে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা:
তিনি আরও বলেন, ইসলামী প্রজাতন্ত্র বিজয়ী হয়েছে এবং প্রতিশোধ হিসেবে আমেরিকাকে চপেটাঘাত করেছে ইরান। তাঁর এই মন্তব্য, সম্ভবত সোমবার কাতারের মার্কিন ঘাঁটিতে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলাকে ইঙ্গিত করেই বলা হয়েছে। এই হামলার পরেই আমেরিকা যুদ্ধে পিছু হটে।
উল্লেখ্য, খামেইনির সর্বশেষ সামনে এসেছিলেন গত ১৯ জুন। এরপর প্রায় এক সপ্তাহ তিনি প্রকাশ্যে আসেননি। যুদ্ধবিরতি ঘোষণার পর এই প্রথম তিনি প্রকাশ্যে এসেই ভিডিও বার্তা নিজের প্রতিক্রিয়া জানালেন।
ইরানের সামরিক ঘাঁটি:
১৩ জুন ইরানে হামলা চালায় ইজরায়েল। সেই সময় থেকেই প্রত্যাঘাতের আশঙ্কা তৈরি হয়েছিল। একদিন পর সেই আশঙ্কা সত্যি করে ইজরায়েলে পালটা হামলা চালায় ইরান। ইরানের সামরিক ঘাঁটি এবং পারমাণবিক অস্ত্রভাণ্ডার লক্ষ্য করে আকাশপথে হামলা চালানো হয়। মৃত্যু হয় ইরান সেনার চিফ অফ স্টাফ মহম্মদ বাঘেরি, রেভোলিউশনারি গার্ডসের কমান্ডার হোসেন সালামি, ইরানের এমার্জেন্সি কমান্ডের কমান্ডার এবং দুই শীর্ষ সেনা আধিকারিকের। প্রাণ হারান ইরানের প্রাক্তন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা আলি শামখানিরও।
ইরানের পারমাণবিক কেন্দ্রে হামলা মার্কিন বায়ুসেনার:
এছাড়াও পারমাণবিক গবেষণাকারী অন্তত ৯ জন বিজ্ঞানীর মৃত্যু হয়ছে বলে জানিয়েছে ইরান। ইরানের প্রত্যাঘাতে বারবার কেঁপে ওঠে তেল আভিভ-সহ গোটা ইসরায়েল। পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয় ২২ জুন। ইরান-ইসরায়েলের যুদ্ধে সরাসরি জড়িয়ে পড়ে আমেরিকা। ইরানের তিন পারমাণবিক কেন্দ্রে হামলা চালায় মার্কিন বায়ুসেনা। জবাবে মিসাইল ছুড়ে ইসরায়েলকে ঝাঁজরা করে দেয় তেহরান।
আরও পড়ুন: Iran warns America for consequence: ‘ট্রাম্প চুক্তিভঙ্গ করে নাক গলিয়েছেন, বোমা ফেলেছেন! এর পরিণাম আমেরিকাকে ভুগতে হবে…
আমেরিকাকে শিক্ষা দিতে সিরিয়া-কাতার-ইরাকের মার্কিন ঘাঁটিতেও হামলা চালায় ইরান। এর মধ্যেই সোমবার ভোর রাতে ইরান-ইসরায়েলের যুদ্ধবিরতির কথা ঘোষণা করেন ট্রাম্প। আর সংঘর্ষবিরতির পর এই প্রথমবার মুখ খুললেন খামেইনি।
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)