শিমলা: ফের প্রকৃতির রোষ আছড়ে পড়ল হিমাচলপ্রদেশে। মেঘভাঙা বৃষ্টিতে বিপর্যয় নেমে এল সেখানে। হড়পা বানে কমপক্ষে ২০ জন ভেসে গিয়েছেন বলে আশঙ্কা। এখনও পর্যন্ত দু’জনের মৃত্যুর খবর মিলেছে। ঘটনাস্থল থেকে যে ছবি ও ভিডিও সামনে এসেছে, তা ভয় ধরায় মনে। ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে। (Himachal Pradesh Floods)
বুধবার মেঘভাঙা বৃষ্টিতে বিপর্যয় নেমে আসে হিমাচলপ্রদেশে। বিশেষ করে কুলুতে হড়পা বানের প্রকোপ দেখা দেয়। পাহাড়ি এলাকায় জলের তোড়ে ভেঙে পড়ে বেসরকারি তাপবিদ্যুৎ প্রকল্পের অস্থায়ী ছাউনি। রাস্তা ধসে গেলে তাদের একটি গাড়িও মাটিতে ঢুকে যায় অর্ধেক। বেশ কিছু জায়গায় নদীর জল সেতু ছুঁয়ে ফেলেছে। (Cloudbursts in Himachal)
স্থানীয় প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, কাংরা জেলার মানুনি খাদ থেকে দু’টি দেহ উদ্ধার করা গয়েছে। ইন্দিরা প্রিয়দর্শিনি জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের জন্য় ১৫-২০ জন শ্রমিক মোতায়েন ছিলেন। তাঁরা হড়পা বানে ভেসে গিয়েছেন বলে আশঙ্কা। মেঘভাঙা বৃষ্টির পর যে হড়পা বানের প্রকোপ দেখা দেয়, তাতে খানিয়ারা মানুন খাদেক জলস্তরও বিপজ্জনক ভাবে বেড়ে গিয়েছে বলে জানা যাচ্ছে।
ভারী বৃষ্টি এবং দুর্যোগের জেরে আপাতত জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের কাজ বন্ধ রাখা হয়েছে। শ্রমিকরা লেবার কলোনির অস্থায়ী শিবিরে বিশ্রাম নিচ্ছিলেন। কিন্তু মানুনি খাদ থেকে বন্যার জল যেমন এসে আছড়ে পড়ে, তেমনই সংলগ্ন এলাকার ড্রেনের জলও লেবার কলোনির দিকে ঘুরিয়ে দেওয়া হয়েছিল বলে দাবি এক আধিকারিকের। আর তাতেই শ্রমিকরা ভেসে গিয়েছেন বলে দাবি করেছেন তিনি।
#WATCH | Himachal Pradesh | Temporary sheds and an emergency response vehicle belonging to a private power project have been damaged in a flash flood triggered by a cloudburst in the Siund of Sainj Valley in Kullu yesterday pic.twitter.com/JH7F1ePMiR
— ANI (@ANI) June 26, 2025
রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী উদ্ধারকার্যে নেমেছে। স্থানীয় প্রশাসন, গ্রাম পঞ্চায়েত এবং রাজস্ব দফতরের আধিকারিকরা ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় রয়েছেন। ওই জলবিদ্যুৎ প্রকল্পে স্থানীয় শ্রমিকরাও কাজ করছিলেন। তারা যদিও নিরাপদে রয়েছেন। ধর্মশালার বিজেপি বিধায়ক সুধীর শর্মা সোশ্যাল মিডিয়ায় ২০ জন শ্রমিকের ভেসে যাওয়ার কথা জানিয়েছেন। এখনও পর্যন্ত তাঁদের খোঁজ মিলেছে বলে জানা যায়নি।
মেঘভাঙা বৃষ্টির পর কুলুর তিন বাসিন্দাও নিখোঁজ বলে জানা গিয়েছে। বেশ কিছু বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে স্কুল, রাস্তাঘাট। প্রশাসন জানিয়েছে, জীবা নালে, রেহলা বিহাল, শিলাগড়ে মেঘভাঙা বৃষ্টিতে বিপর্যয় নামে। বাড়ি থেকে মূল্যবান জিনিসপত্র উদ্ধার করতে গিয়েছিলেন রেহলা বিহালের তিন বাসিন্দা। তাঁদের কোনও খোঁজ পাওয়া যায়নি।
এর পাশাপাশি, মানালি, বঞ্জরে হড়পা বানের প্রকোপ দেখা দিয়েছে বলে জানিয়েছেন কুলুর ADC অশ্বিনী কুমার। মানালি-চণ্ডীগড় জাতীয় সড়কের একটি অংশ জলের তলায় চলে গিয়েছে। বিতস্তা নদীর জল উঠে পড়েছে হাইওয়েতে। ঘোলা জলে গাড়ি ভেসে যেতে দেখা গিয়েছে। বঞ্জর মহকুমার সেতুটি ভেসে গিয়েছে জলের তোড়ে। সরকারি স্কুলে জল ঢুকে গিয়েছে। জলের তলায় চাষের জমিও। বিতস্তা এবং শতদ্রু নদীর জলস্তরও বেড়ে গিয়েছে। লাহৌল-স্পীতির পুলিশ জানিয়েছে, কাজা থেকে সামদো যাওয়ার রাস্তায় জায়গায় জায়গায় ধস নেমেছে, নর্দমার জল রাস্তায় উঠে এসেছে, আবর্জনায় রাস্তা ভরে গিয়েছে বলে সেটি বন্ধ রাখা হয়েছে।
তবে এখনই রেহাই নেই। মৌসব ভবন জানিয়েছে, চাম্বা, কাংরা, মাণ্ডি, শিমলা, সিরমৌরে হড়পা বানের প্রকোপ থাকবে বৃহস্পতিবার বিকেল পর্যন্ত। ২৯ জুন পর্যন্ত ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে সাত জেলায়। ডারি হয়েছে কমলা সতর্কতা।