আশাবুল হোসেন, শিবাশিস মৌলিক ও উজ্জ্বল মুখোপাধ্যায়, কলকাতা: দিঘায় জগন্নাথ মন্দির উদ্বোধনের পর শুক্রবার প্রথম রথযাত্রা। তার আগে দিঘায় পৌঁছে গেলেন মুখ্যমন্ত্রী। সৈকত-শহরে এখন সাজো-সাজো রব।। অন্যদিকে, রথে নিজের কর্মসূচি ঘোষণা করে মুখ্যমন্ত্রীকে পাল্টা চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিলেন বিরোধী দলনেতাও। এ নিয়ে একে অপরকে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি কোনওপক্ষই।
রথের রশিতে টান পড়বে শুক্রবার। আর আগামী বছর বিধানসভা ভোটের আগে জগন্নাথদেবের কৃপাদৃষ্টির জন্য় মরিয়া বাংলার শাসক-বিরোধী সব পক্ষ! দিঘায় নবনির্মিত জগন্নাথ মন্দিরের রথযাত্রার তদারকির জন্য বুধবারই পৌঁছে গেলেন মুখ্যমন্ত্রী। তার আগে শুভেন্দু অধিকারীর গড় বলে পরিচিত কাঁথির রাস্তায় সারলেন জনসংযোগ। অন্যদিকে, রথযাত্রা উপলক্ষ্য়ে একাধিক কর্মসূচির ঘোষণা করেছেন শুভেন্দু অধিকারীও।কলকাতা থেকে দিঘা, রথযাত্রাকে কেন্দ্র করে কার্যত পোস্টার-ব্যানারে ছেয়ে দিয়েছে তৃণমূল আর বিজেপি! কোথাও দিঘার মন্দির ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি দিয়ে তৃণমূলের পোস্টার!আবার কোথাও পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের ছবি দেওয়া পোস্টার। তাতে নরেন্দ্র মোদি, শুভেন্দু অধিকারীর ছবি। কোলাঘাট, থেকে নন্দকুমার, কাঁথি , সর্বত্র ধরা পড়ল একই ছবি!
রথে কী কী পরিকল্পনা আপনার বা বিজেপির? সাংবাদিকের তরফে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেন, (শুক্রবার) বেলা ১২টার সময় কলকাতা। বিকেল ৪টের সময় ইসকন মেচেদার রথযাত্রা, ১ লক্ষ লোক নিয়ে হবে। আমার, মাসির বাড়িতে রথ যতদিন থাকবে গোটা বাংলায় ডাক আছে। মালদার মথুরাপুর, মানিকচকেরও ডাক আছে। দুনিয়ার ডাক আছে। আমরা বরাবর করি, নতুন করব। কারণ হালি হিন্দু সাজার জন্য মমতা কী করবে তার খবর রাখুন। ‘ তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেন, কেন হিন্দু ভোট টানতে যাবে। লক্ষ লক্ষ মানুষ ভক্তিতে যাচ্ছে। এখানে রাজনীতির কিছু নেই। উল্টে দিঘায় উন্নয়ন হয়েছে। বিজেপি এটা নিয়ে রাজনীতি করছে। এটা রিজেক্ট করবে মানুষ। অযোধ্যায় রামের মন্দির আছে বলে কি আর অন্য কোথাও রামের মন্দির হবে না?
সূত্রের দাবি, রথযাত্রার আগে বৃহস্পতিবার দিঘার জগন্নাথ মন্দিরে ‘নেত্র উৎসবে’ যোগ দেবেন মুখ্যমন্ত্রী। পুরীর রথযাত্রার মতোই দিঘাতেও সোনার ঝাড়ুতে রাস্তা পরিষ্কার করে শুরু হবে জগন্নাথ-বলরাম-শুভদ্রার রথযাত্রা। ইতিমধ্যে ব্যক্তিগত টাকা থেকে দিঘার মন্দির কর্তৃপক্ষকে সোনার ঝাড়ু দান করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। শুক্রবার সেই সোনার ঝাড়ু দিয়ে রাস্তা পরিষ্কার করে রথের রশিতে টান দিয়ে রথযাত্রার সূচনা করবেন মুখ্যমন্ত্রী। প্রদেশ কংগ্রেসের মুখপাত্র সৌম্য আইচ রায় বলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রী এখন বড় হিন্দু সাজার প্রতিযোগিতায় নেমেছেন। আসলে বার্তা দিচ্ছেন RSS-কে দেখ, আমি তোমাদের শেখানো সিলেবাসেই আছি। রাজ্যের অর্থনীতি উচ্ছন্নে যাক, বেকার ছেলেমেয়েদের চাকরি উচ্ছন্নে যাক, আমি তোমাদের যে হিন্দুত্বের স্ট্র্যাটেজি, সেটাতেই থাকব। ‘ রথ-রাজনীতি ২০২৬-র ভোটে কার নবান্নে যাওয়ার রাস্তা প্রশস্ত করে, তার উত্তর ভোটের ফলাফলেই মিলবে!