জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: ইরানের পারমাণবিক সমৃদ্ধিকরণ (Iran Nuclear Programme) মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। যে কারণে ইরানের পারমাণবিক কেন্দ্রগুলি লক্ষ্য করে ইসরায়েল শুরু করে ‘অপারেশন রাইজিং লায়ন’ (Operation Rising Lion)। ইসরায়েলের পর আমেরিকাও ইরানের বিরুদ্ধে মিসাইল দেগেছে (US attack Iran)। ইরানের পারমাণবিক ঘাঁটিগুলি লক্ষ্য করে ভয়ংকর বাঙ্কার বাস্টার বোমা নিক্ষেপ করেছে আমেরিকা। মার্কিন হামলার পরই ইরান পালটা ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে ১৫ ব্যালিস্টিক মিসাইল ছোঁড়ে। যার কিছু আয়রন ডোমের রক্ষণ ভেদ করে আছড়ে পড়ে জেরুজালেমে। উত্তর ইসরায়েলে ঘন ঘন বাজছে সাইরেন। ইরানের হামলার পরই ইসরায়েল আবার পালটা ইরানের (Iran Israel War) এভিন প্রিসন পরমাণু কেন্দ্র উদ্দেশ করে হামলা চালিয়েছে। মধ্যপ্রাচ্য অশান্ত ইরানের পরমাণু কর্মসূচি ঘিরে। কেন?
ইরানের হাতেই বিশ্বের বাছাই পরমাণু অস্ত্র!
বলা হচ্ছে, ইরানের হাতেই নাকি আছে বিশ্বের সবচেয়ে বাছাই করা পারমাণবিক অস্ত্রের সম্ভার! ইরান সরকার যদিও দাবি করে যে এর সবটাই বেসামরিক এবং শান্তিপূর্ণ ব্যবহারের উদ্দেশ্যে, কিন্তু বিশ্বের বহু দেশের দাবি, ইরান গোপনে পারমাণবিক অস্ত্র বানিয়ে চলেছে। ১৯৫০-এর দশকে পাহলভি রাজবংশের অধীনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তায় ইরানের প্রথম পারমাণবিক কর্মসূচি শুরু হয় । এরপর ১৯৭০-এর দশকে বিদ্যুৎ চুল্লির পরিকল্পনার মাধ্যমে এই কর্মসূচি সম্প্রসারিত হয়। ১৯৭৯ সালের ইরানি বিপ্লবের পর যে কর্মসূচি স্থগিত করা হয়। কিন্তু ১৯৮০-এর দশকে ইরান-ইরাক যুদ্ধের সময় থেকে গোপনে পুনরায় ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি চালু হয় বলে অভিযোগ। ২০০২ সালে নাতানজ ও আরাকে অঘোষিত ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কেন্দ্রের কথা সামনে আসে। এরপর ২০০৯ সালে সামনে আসে ফোরডো-র ভূগর্ভস্থ জ্বালানি সমৃদ্ধকরণ কেন্দ্রের কথা। ফোরডোর যে ভূগর্ভস্থ কেন্দ্রে সোমবার হামলা চালিয়েছে আমেরিকা।
১ মাসে ৭টি পরমাণু বোমা তৈরি করতে পারে ইরান!
২০০৩-এ ইরান যদিও দাবি করে যে সে তার সমস্ত আনুষ্ঠানিক পারমাণবিক অস্ত্র কর্মসূচি স্থগিত করেছে, কিন্তু আন্তর্জাতিক পারমাণবিক শক্তি সংস্থা (IAEA) তাতে আশ্বস্ত হয়নি। জানা গিয়েছে, ২০২৪-এর মে পর্যন্ত ইরান ৬০% বিশুদ্ধতা সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম উৎপাদন করে ও আরও উন্নত সেন্ট্রিফিউজ স্থাপন করে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি ত্বরান্বিত করে বলে খবর। এও বলা হয় যে, ইরান এক মাসের মধ্যে ৭টি পরমাণু বোমা তৈরি করে ফেলতে পারে! ইরানের পরমাণু কর্মসূচি নিয়ন্ত্রণে ২০১৫ সালে স্বাক্ষর হয় জয়েন্ট কম্প্রিহেনসিভ প্ল্যান অফ অ্যাকশন (JCPOA)। কিন্তু ২০১৮ সালে সেই চুক্তি থেকে সরে দাঁড়ায় আমেরিকা। নতুনভাবে চুক্তি করার আহ্বান জানায়।
JCPOA সীমার চেয়ে ২২ গুণ ইউরেনিয়াম মজুত ইরানের!
আর ২০১৮ সাল থেকেই ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নাটকীয়ভাবে বৃদ্ধি পায়। ২০২৩-এর অক্টোবরের IAEA রিপোর্ট অনুসারে, ইরান ২০১৫ সালের সম্মত JCPOA সীমার চেয়ে ২২ গুণ বাড়িয়েছে ইউরেনিয়াম মজুতের পরিমাণ। এখন ইরানের এই পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যেই ২০২৫ সালের এপ্রিল থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইরানের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক আলোচনা শুরু করে। কিন্তু ইরানের নেতারা ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ বন্ধ করতে অস্বীকার করে। এরপর ১২ জুন IAEA ২০ বছরের মধ্যে প্রথমবার ইরানকে পরমাণু চুক্তি লংঘনের দায়ে ‘দোষী’ সাব্যস্ত করে। আর তার একদিন পরই ইসরায়েল শুরু করে ‘অপারেশন রাইজিং লায়ন’। ইরানের নাতাঞ্জে পারমাণবিক ঘাঁটি লক্ষ্য করে হামলা চালায় ইসরায়েল। মৃত্য়ু হয় ইরানের প্রথম সারির বেশ কয়েকজন পরমাণু বিজ্ঞানীর।
আরও পড়ুন, US Attack Iran: তেহরানের রাস্তায় শত শত মানুষের মৃত্যু, ‘কোড নেমে’ মার্কিন-ব্রিটিশ যৌথ অপারেশন! পতন ঘটল…
আরও পড়ুন, Flight Mystery Real Story: মাঝ-আকাশে হঠাৎ বিকল ৪ ইঞ্জিন, ২৪৮ জন যাত্রী নিয়ে দ্রুত পড়ছে বিমান! ক্যাপটেন ঘোষণা করলেন… শেষপর্যন্ত…অবিশ্বাস্য!
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)