জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: ইসরায়েলের হামলায় নিহত হয়েছে ইরানের একাধিক জেনারেল ও গোয়েন্দা আধিকারিক। অত্যন্ত শক্তিশালী গোয়েন্দা তথ্যের উপরে ভিত্তি করে নিখুঁত নিশানায় আঘাত হানা হয়েছে তাদের বাসভবনে। এমনকি যেক্ষেত্রে তারা বহুতলে থেকেছেন আক্রমণ হয়েছে একমাত্র নির্দিষ্ট তলেই। এখানেই ইসারায়েলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদ এক কৃতিত্ব। বছরের পর বছরের চেষ্টায় ইরানে ঘাঁটি গেড়েছে মোসাদের গোয়েন্দারা। তার পর সময় বুঝে আঘাত হেনেছে নির্দিষ্ট লক্ষ্যে। কীভাবে সম্ভব হল?
খোদ ইরানের নিরাপত্তা সংস্থাগুলো অনেক আগে থেকেই ইসরায়েলি গোয়েন্দাদের অনুপ্রবেশ নিয়ে আশঙ্কা করেছিল। বিভিন্ন রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, ইরানের গুরুত্বপূর্ণ সামরিক ও পরমাণু কেন্দ্রগুলো, ক্ষেপণাস্ত্র ভাণ্ডার, কমান্ড সেন্টার এবং নির্দিষ্ট ব্যক্তিদের নিশানা করে নিখুঁত হামলা চালানো হয়। এমনকি ইরানের অভ্যন্তরে অস্ত্র চোরাচালান, স্থানীয় এজেন্টদের মাধ্যমে গোপন অস্ত্র সংরক্ষণ এবং ড্রোন তৈরি করা হচ্ছিল মোসাদের ঘাঁটিতে।
ইসরায়েলের মতে ইরাকের মধ্য দিয়ে কনটেইনার, ট্রাক ও স্যুটকেসের মাধ্যমে ছোট আকারের অস্ত্র, ক্যামেরা, ব্যাটারি, ইঞ্জিন ও গাইডেন্স সিস্টেম ইরানে পাচার করা হয়। পরে এসব যন্ত্রাংশ থ্রিডি প্রিন্টারসহ গোপন কর্মশালায় একত্র করে আক্রমণাত্মক অস্ত্র বানানো হয়। তেহরানে তিনতলা একটি ভবনে আত্মঘাতী ড্রোন তৈরির ঘাঁটির খোঁজ পাওয়া গেছে বলেও জানিয়েছে ইরানি বার্তা সংস্থা। সেখানে বিপুল পরিমাণ ড্রোন যন্ত্রাংশ, থ্রিডি প্রিন্টার ও নিয়ন্ত্রণ সরঞ্জাম পাওয়া গিয়েছে।
গত ১৬ জুন মোসাদের দুই এজেন্টকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের কাছ থেকে ২০০ কেজির বেশি বিস্ফোরক, ২৩টি ড্রোন যন্ত্রাংশ, লঞ্চার ও একটি গাড়ি উদ্ধার করা হয়। ইসফাহানেও বিপুলসংখ্যক মাইক্রো ড্রোন তৈরির উপকরণ ধরা পড়ে।
আরও পড়ুন-ইরানের সরকারি টিভির দফতরে আছড়ে পড়ল ইসরায়েলি মিসাইল, পালালেন অ্যাঙ্কর
আরও পড়ুন-পরমাণু যুদ্ধের পরিণতি হবে ভয়ংকর, তারপরেও বেঁচে যাবে এই ৫ দেশ!
ইরানে হামলা চালাতে রিমোট কন্ট্রোলড অস্ত্রের ব্যবহার করেছে ইসরায়েল। ইসরায়েলের ব্যবহৃত স্পাইক মিসাইল লঞ্চার ইন্টারনেট-অটোমেশন ও স্যাটেলাইট গাইডেন্স সিস্টেম দিয়ে নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছিল। রিমোট কন্ট্রোল অস্ত্রের সাহায্যে এক ইরানি পারমাণবিক বিজ্ঞানীকেও হত্যা করা হয়েছিল।
হামলার আগে ইরানের আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা বিকল করে দিয়েছিল ইসরায়েল। ড্রোন,ক্ষেপণাস্ত্র একযোগে ব্যবহার করে ইরানি রেডাপ, প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার উপরে জোরদার আঘাত হানা হয়। উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তা, বিশেষত ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ডের গোয়েন্দা প্রধান মোহাম্মদ কাজমি এবং তাঁর ডেপুটিকে সরাসরি নিশানা করা হয়। হামলার পরই ইরান সরকারের পক্ষ থেকে কর্মকর্তাদের স্মার্ট ডিভাইস ব্যবহারে বিধি-নিষেধ আরোপ করা হয়। জনসাধারণকেও ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যবহার কমানোর পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)