কলকাতা: ৩৫ ঘণ্টা পরেও খিদিরপুর বাজারে জ্বলছে আগুন ! ঘটনাস্থলে গিয়ে মার্কেটের বিভিন্ন অংশ ঘুরে দেখেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। প্রথমেই তাঁর মুখে শোনা গেল, ‘ফায়ার ব্রিগেড দাঁড়িয়ে আছে। বলছে জল নেই।’ গতকাল খিদিরপুর বিধ্বংসী অগ্নিকাণ্ডের পর ঘটনাস্থলে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ১ লক্ষ টাকা আর্থিক সহায়তার কথা বলেন। পাশাপাশি বিনা পয়সায় নতুন মার্কেট করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন মমতা। যদিও ক্ষতিপূরণ ঘোষণার পরেও, মুখ্যমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতিতে সন্তুষ্ট নন ব্যবসায়ীরা। আর এরপরেই উঠেছে একের পর এক বিস্ফোরক প্রশ্ন ব্যবসায়ীদের তরফে। তার সারমর্ম এই যে, আগুন লাগার আগেই ‘জায়গাটা ঠিক কী করে হয়ে গেল ?’ আর মঙ্গলবার ঘটনাস্থলে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে তীব্র আক্রমণ শানালেন শুভেন্দু অধিকারী। বললেন, ‘খিদিরপুরে ম্যান মেড অগ্নিকাণ্ড।পরিকল্পনামাফিক আগুন লাগানো হয়েছে ‘ !
আরও পড়ুন, ‘মুখ্যমন্ত্রীর মতো পাকিস্তান প্রীতি নেই, বুকের ভিতরে ভারত আছে’ ! বিধানসভায় মমতার ‘হাফ মন্ত্রী’ কটাক্ষর পাল্টা সুকান্ত
শুভেন্দু বলেন, মুখ্যমন্ত্রী সবার মুখ্যমন্ত্রী হতে পারেননি। মুখ্যমন্ত্রীকে তো বলেছিল ‘বাংলার মেয়ে।’ কেন মুখ্যমন্ত্রীকে কাল ১ হাজার পুলিশ নিয়ে এসে, বক্তব্য রাখতে হয়েছে ? ধমকাতে হয়েছে ? কেন ধমকাবেন ? মুখ্যমন্ত্রী তো সবার। এখানে হিন্দু আছে। মুসলমানও আছে। বিজেপিও আছে। সিপিএমও আছে। টিএমসিও আছে। আমাকে তো কেউ বলেনি, যে আপনি রাজনীতি করতে এসেছেন। মানুষের আস্থা উঠে গেছে। তাই তিনি সকলের মুখ্যমন্ত্রী হতে পারেননি। তিনি গরীব ব্যবসায়ীদের মুখ্যমন্ত্রী হতে পারেননি।’ এরপরেই বিস্ফোরক অভিযোগ বিরোধী দলনেতার, তাঁর কথায়,’ রাত ১টায় আগুন লাগল। দমকল এল ভোর ৪টেয়। প্ল্যানিংটা আপনি জানেন। ..গোটা এলাকা বেচে দিয়েছেন। চিড়িয়াখানা বেচে দিয়েছে। বাকি আছে আপনাদের এই এলাকা।মুখ্যমন্ত্রী কাল এসে প্রথমেই বললেন আপনাদের জন্য তো জায়গা ঠিক করা হয়েছে..।’ এরপরেই পাল্টা হুঁশিয়ারি দিয়ে ক্ষতিগ্রস্থ ব্যবসায়ীদের অভয়বার্তা শুভেন্দুর , ‘ আমি আপনাদের বলে যাচ্ছি জমি রক্ষার আন্দোলনে আমি ডক্টরেট। ‘
সাংবাদিক: ব্যবসায়ীরা বলছেন ২০২২ সালে কর্পোরেশন এটা নিয়েছে। তারপর এখনও তাঁদের বৈধতা..
শুভেন্দু অধিকারী: ৪ বছর নিয়েই সেটেলড হয়ে গেছে। এক্সচেঞ্জ অব স্যুটকেস। ..এরা উঠবে না। অবস্থান ধর্ণা চলবে। আমরা আছি।
সাংবাদিক: ব্যবসায়ীদের অনেকে ষড়যন্ত্রর..
শুভেন্দু অধিকারী: (কথা শেষ করার আগেই) অনেকে না, সবাই বলছে।..মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানলেন কীকরে , আগুন লাগবে ? নতুন জায়গা ঠিক হয়ে গেল ! (ভস্মীভূত দোকানগুলিকে দেখিয়ে ক্ষতিপূরণ প্রসঙ্গ) এই দোকানগুলি ১ লাখ টাকা ? ২৫ লাখ টাকা করে দিন।…(কিছুটা থেমে) তৃণমূলের এখন নতুন নাম টাকা মারা কোম্পানি।
মূলত,খিদিরপুর বাজারে বিধ্বংসী আগুনে প্রায় তেরোশো দোকান ভস্মীভূত হয়ে গেছে বলে স্থানীয়দের দাবি। ক্ষতিগ্রস্থ ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, উনি বলছেন ১ লাখ টাকা করে দেওয়া হবে। যেই দোকান পুরো জ্বলে গিয়েছে। আর যেটা অর্ধেক জ্বলে গিয়েছে, ৫০ হাজার টাকা দেওয়া হবে। এখানে উনি একটা জায়গা ঠিক করে রেখেছেন, সেটা উনি বললেন না। তো আগে থেকে জায়গাটা ঠিক কীকরে হয়ে গেল ? সাহায্য করবেন। করে ছেড়ে দেবেন। বলবেন যে, অন্য জায়গায় চলে যেতে আমরা চলে যাব ? আমাদের জায়গা আমরা ছাড়ব না। পয়সা দিচ্ছে নাকি ভিক্ষা দিচ্ছেন ? কোন দাবি রাখার সুযোগই পাইনি’, বিস্ফোরক অভিযোগ ব্যবসায়ীদের।