জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: ইন্দোরের ব্যবসায়ী রাজা রঘুবংশীর (Raja Raghuvanshi) হত্যার কয়েক ঘন্টা আগে, তাঁকে এবং তাঁর স্ত্রী সোনমকে (Sonam Raghuvanshi) (প্রধান অভিযুক্ত) মেঘালয়ের (Meghalaya Honeymoon Couple) ঘন পাহাড়ের একটি খাড়া চূড়ায় ট্রেকিং করতে দেখা গেছে। ২৩শে মে সকাল ৯:৪৫-এ একজন পর্যটকের তোলা একটি ভিডিয়োতে ‘দুর্ঘটনাক্রমে’ রঘুবংশীদের পাহাড়ে ওঠার দৃশ্য ক্যামেরাবন্দী হয় জনৈক ট্যুরিস্টয়ের ফোনে। সেই দিনই বিকেলে তিনজন- সোনম এবং তার প্রেমিক রাজ কুশওয়াহা এবং আরও দু’জন ভাড়া করা খুনি – রাজা রঘুবংশীকে খুন করে একটি খাদে ফেলে দেয়।
জনৈক ট্যুরিস্টয়ের ফোনের ভিডিয়ো:
পর্যটক দেব সিং ইনস্টাগ্রামে ভিডিয়োটি পোস্ট করেছেন যেখানে সোনম পাহাড়ের উপরে উঠছিলেন এবং রাজা তার ঠিক পিছনেই ছিলেন। সোনম একটি সাদা টি-শার্ট পরেছিল, যা মেঘালয় পুলিশ ঘটনাস্থলের কাছে খুঁজে পেয়েছিল। তার কাছে একটি পলিথিন ব্যাগও ছিল, যার ভেতরে একটি রেইনকোট ছিল বলে জানা গেছে। ঠিক সেই সময় সোনমের তিন ষড়যন্ত্রীকারী সোনম ও রাজকে, অনুসরণ করছিল।
‘গতকাল, আমি ভিডিয়োগুলি দেখছিলাম এবং আমি ইন্দোর দম্পতির একটি রেকর্ডিং পেলাম। আমরা যখন নীচে নামছিলাম তখন সকাল ৯:৪৫, আর দম্পতি উপরে ট্রেক করে উঠছিল। আমার মনে হয় এটিই ছিল দম্পতির শেষ রেকর্ডিং, এবং সোনম একই সাদা টি-শার্ট পরেছিলেন, যা রাজার কাছে পাওয়া গিয়েছিল। আমি আশা করি এটি মেঘালয় পুলিশকেও সাহায্য করবে,’ মিঃ সিং ইনস্টাগ্রামে লিখেছেন।
আরও পড়ুন: Meghalaya Honeymoon Murder: মেঘালয়-কাণ্ডে নয়া মোড়! সোনমের গোপন আস্তনায় অনলাইনে কী পাঠিয়েছিল প্রেমিক-কাম-ষড়যন্ত্রী রাজ?
তিনি আরও বলেন, ‘যখনই আমি ভিডিয়োতে রাজাকে দেখছি, তখনই আমার খুব খারাপ লাগছে। সে তখনও খুব স্বাভাবিক ছিল, কিন্তু তার জন্য কী অপেক্ষা করছে তা জানত না।”
চেরাপুঞ্জিতে ট্রেকিং:
২৩শে মে নৃশংস হত্যাকাণ্ডের ঘটনার সঙ্গে সূত্র থেকে জানা যায় যে, নবদম্পতি ভোর ৫.৩০ মিনিটে নংরিয়াতের শিপারা হোমস্টে হোটেল থেকে বেরিয়ে আধ ঘন্টা পরে চেরাপুঞ্জিতে ট্রেকিংয়ে বেরিয়ে পড়েন। সোনমের তিন সহযোগী, যারা কাছের একটি হোমস্টেতে ছিল, তারাও একই সময়ে চেকআউট করেন। সকাল ১০টায়, সোনম এবং রাজা ট্রেকিং রুটে প্রায় ২০০০ ধাপ ওঠেন এবং তিন খুনি – আনন্দ কুর্মি, আকাশ রাজপুত এবং বিশাল চৌহানের সঙ্গে দেখা করে। স্থানীয় একজন গাইড – পরে পুলিশকে সাহায্য বলেছিল – পাঁচজনকে একসঙ্গে দেখতে পান। সূত্রের মতে, খুনিরা এবং রাজা যখন কথা বলতে শুরু করেন, তখন সোনম ধীরে ধীরে গতি কমিয়ে তাদের পিছনে হাঁটতে শুরু করেন।
হত্যার প্ল্যান:
দুপুর ১২:৩০ মিনিটে, সোনম রাজার মা উমা রঘুবংশীকে ফোন করে জানান যে তিনি ট্রেকিং করার কারণে ক্লান্ত। রাজা তার মায়ের সঙ্গেও কথা বলেন – তাদের শেষ কথোপকথনে। এক ঘন্টা পর, পাঁচজনের দল (রাজা, সোনম এবং তিনজন খুনি) মাওলাখিয়াত থেকে গাড়ি চালিয়ে ওয়েই সাওডং জলপ্রপাতের পার্কিং লটে যায়। পৌঁছনোর পর, খুনিরা রাজাকে হত্যা করে এবং তার দেহ একটি খাদে ফেলে দেয়।
নবদম্পতি প্রথমে ‘নিখোঁজ’ বলে রিপোর্ট করা হয়েছিল পরিবারের তরফে। কিন্তু ২ জুন, পুলিশ রাজার মৃতদেহ খুঁজে পায়, যা নিখোঁজ তদন্তকে হত্যার তদন্তে পরিণত করে। ৭ জুন রাতে, ‘নিখোঁজ’ স্ত্রীকে গাজীপুরের একটি ‘ধাবা’ থেকে অচেতন অবস্থায় পাওয়া যায়। তাঁকে চিকিৎসার জন্য গাজীপুর মেডিকেল কলেজে নিয়ে যাওয়া হয়, এরপর পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করেন এবং পরে তাঁকে হেফাজতে নেওয়া হয়।
আরও পড়ুন: Meghalaya Missing Couple: ‘পারলে আমিই ওকে ফাঁসিতে ঝোলাব!’, ‘স্বামীহন্তা’ সোনমের ভাই গোবিন্দ ফুঁসছে রাগে…
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)