পিয়ালি মিত্র: ট্যাংরা কাণ্ডে চার্জশিট পেশ। শিয়ালদহ আদালতে চার্জশিট পেশ পুলিসের । খুন এবং খুনের চেষ্টার ধারায় অভিযুক্ত ২ ভাই প্রণয় দে ও প্রসূন দে। মোট ৪ জনের গোপন জবানবন্দি নেওয়া হয়েছে। যারমধ্যে রয়েছে প্রণয় দে, বাড়ির নাবালক ছেলে, দে পরিবারের এক আত্মীয় এবং অন্য আরেকজন। সাক্ষী হিসেবে নাম রয়েছে বড় ভাইয়ের নাবালক ছেলের। নাবালক ছেলের সাক্ষীতেই ‘খুনি’ সাব্যস্ত কাকা-বাবা।
খুনের মোটিভ
খুনের মোটিভ সম্পর্কে চার্জশিটে পুলিসের দাবি, ব্যবসায় ক্ষতির পর আর্থিক অনটন চলছিল। আগের মতো আভিজাত্য ধরে রাখতে না পারায় তাঁদের পরিবারের লোকের সামনে ছোটো হতে হচ্ছিল। হীনমন্যতায় ভুগছিলেন ২ ভাই। সেই কারণে ২ ভাই পরিবারের সকলকে সরিয়ে দিতে চেয়েছিলেন। ছোটো ছেলেকেও মেরে ফেলার পরিকল্পনা ছিল। সেই কারণেই তাঁকে গাড়ির বাঁদিকে বসানো হয়। গাড়ি বাঁদিকে গিয়ে মেট্রোর পিলারে ধাক্কা মারে।
ময়নাতদন্তের রিপোর্ট
প্রসঙ্গত ট্যাংরাকাণ্ডে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট উঠে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য। সিলমোহর পড়ে খুনের তত্ত্বে। রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়, অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের জেরে মৃত্যু হয়েছে সুদেষ্ণা দে ও রোমি দে-র। ওদিকে বিষক্রিয়ায় মৃত্যু কিশোরীর। রোমি দে-র দুই কবজিতেই বাইরের দিকে (Anterior Part) ক্ষতচিহ্ ছিলন। গলাতেও ক্ষত ছিল। বাঁদিক থেকে ডানদিকে আঘাতের চিহ্ন ছিল গলায়। সুদেষ্ণা দে-র ক্ষেত্রেও রিপোর্টে দুই কবজিতে ক্ষতচিহ্নের উল্লেখ ছিল। প্রধান শিরাতে চোট লাগে সুদেষ্ণা দে-র। গলাতেও ক্ষতচিহ্ন। প্রথমে স্ত্রী রোমির হাতের শিরা ও গলার নলি কাটা হয়। পরে বউদি সুদেষ্ণার হাতের শিরা কাটেন প্রসূন। আওয়াজ যাতে না বেরোতে পারে, তাই শিরা কাটার সময় মুখে বালিশ চাপা দিয়ে দেওয়া হয়।
ওদিকে কিশোরীর বুক, দু পা, ঠোঁট সহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে বলে রিপোর্টে উল্লেখ ছিল। আঘাতের চোটে নিহত কিশোরীর মস্তিষ্কেও রক্ত জমাট (scalp hematoma) বেঁধে যায়। হাত ও পায়ের পাতা নীলচে বেগুনি রং (Cyanosis) ধারণ করেছিল। পাকস্থলীতে মেলেছ হালকা হলুদ রঙের পরিপাক হওয়া খাবার। সঙ্গে ওষুধের গন্ধ যুক্ত সাদা গুঁড়ো গুঁড়ো দানা। পরে জানা যায়, ‘বিষ প্রয়োগে’ কিশোরীকে খুন করা হয়েছে। পায়েসে কড়া ডোজের ওষুধ মিশিয়ে সেই ‘বিষ’ তৈরি করা হয়েছিল। গন্ধ ঢাকতে দেওয়া হয়েছিল তুলসি পাতা।
গাড়ি দুর্ঘটনা ও হাড়হিম ট্যাংরাকাণ্ড
একটি গাড়ি দুর্ঘটনাকে কেন্দ্র করে সামনে আসে ট্যাংরার হাড়হিম ঘটনা। দুর্ঘটনাগ্রস্ত গাড়ির সওয়ারিদের ঠিকানায় পরিবারের লোকজনদের খোঁজ করতে গিয়ে বাড়িতে ২ মহিলা ও এক নাবালিকার নিথর দেহ উদ্ধার করে পুলিস। দুর্ঘটনায় গুরুতর জখম হন নাবালক সহ ২ ভাই। খানিক সুস্থ হওয়ার পর নাবালক-ই প্রথম জানায় যে, কাকা প্রসূন-ই খুনি। মা-কাকিমাকে খুন করেছে কাকা-ই। তারও হাতের শিরা কাটার চেষ্টা করা হয়েছিল কিন্তু সে বেঁচে যায়। এরপর হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েই থানায় পৌঁছন প্রসূন দে। স্ত্রী-বউদিকে খুনের দায়ে ট্যাংরাকাণ্ডে গ্রেফতার করা হয় ছোটোভাই প্রসূন দে-কে।
আরও পড়ুন, Memari Shocker: ছুরি নিয়েই নামাজে! মেধাবী পড়ুয়া আশিক-ই বাবা-মায়ের খুনি! মেমারি হত্যাকাণ্ডে ভয়ংকর সত্যি সামনে…
আরও পড়ুন, Deep Depression: রায়দিঘিতে ঢুকল গভীর নিম্নচাপ! দাপট শুরু বাংলায়, ২০০ মিলিমিটার পর্যন্ত বৃষ্টিতে প্রবল দুর্যোগের পূর্বাভাস…
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)