Weather Update: বঙ্গোপসাগর থেকে উত্তরমুখী নিম্নচাপ এগোচ্ছে স্থলভাগের দিকে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় তা পরিণত হবে গভীর নিম্নচাপে। শুক্র এবং শনিবার কলকাতা সহ রাজ্যে প্রবল বৃষ্টির সম্ভাবনা। দক্ষিণ ২৪ পরগনায় হতে পারে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি। পরিস্থিতি মোকাবিলায় জেলায় জেলায় খোলা হয়েছে কন্ট্রোল রুম। চলছে মাইকে প্রচার। ক্রমেই উত্তাল হয়ে উঠছে সমুদ্র। বাঁধ উপচে জল ঢুকছে লোকালয়ে। দুর্যোগের ভ্রুকুটিতে আশঙ্কিত দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিস্তীর্ণ অঞ্চলের বাসিন্দারা। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে শুরু হয়েছে মাইকে প্রচার। উপকূলবর্তী এলাকায় প্রবল ঝড়বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে উত্তাল হতে পারে সমুদ্র। মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যাওয়ায় নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে। পর্যটকদেরও সতর্ক করা হয়েছে।
আলিপুর আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, সাব হিমালয়ান ওয়েস্ট বেঙ্গল এবং সিকিমে ২৯ ও ৩০ তারিখে বিক্ষপ্ত জায়গায় ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হতে পারে। কয়েক জায়গায় হাল্কা থেকে মাঝারি বৃষ্টির সম্ভাবনাও রয়েছে বেশিরভাগ জায়গায়। গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গেও হবে বৃষ্টি। নিম্নচাপের প্রভাবে পশ্চিমবঙ্গের সব জেলায় ঝড়বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। বঙ্গোপসাগরে গভীর নিম্নচাপের কারণে আগামী ৩ দিন সমুদ্র উত্তাল থাকবে এবং প্রবল বৃষ্টিপাত হবে।
রাজ্যে চলছে প্রাক্ বর্ষার বৃষ্টি। আগামী ২-৩ দিনের মধ্যে বর্ষা ঢুকে পড়তে পারে উত্তরবঙ্গে। এরই মধ্যে বঙ্গোপসাগরের তৈরি হয়েছে নিম্নচাপ। আলিপুর আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, নিম্নচাপটি অবস্থান করছে উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরের ওড়িশা উপকূলের কাছে। সমুদ্র থেকে উত্তরমুখী নিম্নচাপ এগোচ্ছে স্থলভাগের দিকে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় সেটি শক্তি বাড়িয়ে সুস্পষ্ট ও গভীর নিম্নচাপে পরিণত হবে। রবিবার পর্যন্ত উত্তরবঙ্গের সব জেলায় ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হবে। উত্তরবঙ্গের নদীগুলিতে জল বাড়বে। পাহাড়ি এলাকায় ধস নামার আশঙ্কা রয়েছে। বৃহস্পতিবার কমলা সতর্কতা জারি করা হয়েছে জলপাইগুড়ি, কোচবিহার আলিপুরদুয়ারে। শুক্রবার আলিপুরদুয়ারে জারি করা হয়েছে লাল সতর্কতা। শনি ও রবিবারও ভারী বৃষ্টির সতর্কতা রয়েছে উত্তরবঙ্গে।
নিম্নচাপের প্রভাবে রাজ্যের সব জেলায় বৃষ্টির সম্ভবনা রয়েছে। পূূর্বাভাসে বলা হয়েছে, দক্ষিণবঙ্গে বুধবার ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে উপকূলের জেলাগুলিতে। উত্তর ও দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুরে, নদিয়ায় ভারী বৃষ্টি হতে পারে। বাকি সব জেলায় বজ্রবিদ্যুৎ সহ বৃষ্টির সঙ্গে ৩০ থেকে ৪০ কিমি বেগে বইবে দমকা বাতাস। শুক্রবার ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হতে পারে উত্তর ও দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা, নদিয়া, মুর্শিদাবাদে। সঙ্গে ৪০ থেকে ৫০ কিলোমিটার গতিবেগে এবং সর্বোচ্চ ৬০ কিলোমিটার বেগে দমকা বাতাস বইতে পারে। কলকাতা সহ বাকি জেলাতে ভারী বৃষ্টি ও ৩০-৪০ কিলোমিটার বেগে ঝোড় হাওয়ার পূর্বাভাস।
নিম্নচাপের দোসর হয়েছে অমাবস্যার ভরা কটাল। যার প্রভাবে বুধবার থেকেই উত্তাল হয়ে উঠেছে সমুদ্র। আকাশে দুর্যোগের ঘনঘটা। মৎস্যজীবীদের গভীর সমুদ্রে যেতে নিষেধ করা হয়েছে। বকখালি, ফ্রেজারগঞ্জ, তাজপুর থেকে মৌসুনি দ্বীপ প্রায় পর্যটকশূন্য। যে সব পর্যটক রয়েছেন, তাঁদেরকেও নদী বা সমুদ্রে নামতে নিষেধ করা হয়েছে। উপকূলবর্তী এলাকায় প্রবল বৃষ্টি ও ঝোড়ো হাওয়া সম্ভাবনা রয়েছে। সেই সঙ্গে সমুদ্র উত্তাল হতে পারে। সেই কারণে সমস্ত এলাকাবাসীকে সতর্ক থাকার জন্য আবেদন জানানো হয়েছে। মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে মাছ ধরতে যেতে নিষেধ করা হয়েছে। আগত পর্যটকদের বলা হচ্ছে, সমুদ্র উত্তাল থাকলে কেউ যেন সমুদ্রে স্নান করতে না নামেন।
দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলায় জারি হয়েছে হলুদ সতর্কতা। আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস, সুন্দরবন উপকূলে ঝড় ও বৃষ্টির পরিমাণ বেশি হবে। নামখানা, সাগর, কুলতলি, গোসাবা, কাকদ্বীপের নদী ও সমুদ্র বাঁধের কানায় কানায় জল। পাথরপ্রতিমার জি-প্লট, দুর্বাচটিতে সমুদ্র ও নদীর জল বাঁধ টপকে লোকালয়ে ঢুকতে শুরু করেছে। প্রশাসন সূত্রে খবর, উপকূলবর্তী এলাকা মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। জায়গায় জায়গায় খোলা কন্ট্রোল রুম। পরিস্থিতি মোকাবিলায় শুকনো খাবার, পানীয় জল ও ত্রিপল মজুত রাখা হয়েছে।
আরও দেখুন