কলকাতা : “আপনার নাকি প্ল্যান এ, বি, সি, ডি… তৈরি আছে। আজ যখন পরীক্ষার সূচি ঘোষণা করলেন, তখন উল্লেখ করলেন না কেন যে, এই ঘোষণা আপনার কত নম্বর প্ল্যানের অংশ?” মুখ্যমন্ত্রীর চাকরির-বিজ্ঞপ্তি ঘোষণার পর এই ভাষায়েই সোশাল মিডিয়ায় সরব হলেন শুভেন্দু অধিকারী। “যে যোগ্য শিক্ষক শিক্ষিকারা চাকরি হারিয়েছেন, তাঁরাই আবার পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে চাকরি ফিরে পাবেন তার কি গ্যারান্টি আছে?”-সহ তিন দফা প্রশ্নও তুললেন বিরোধী দলনেতা।
ফেসবুক পোস্টে শুভেন্দু লেখেন, “আপনি আজও চেষ্টা করেছেন চাকরিহারা যোগ্য শিক্ষক শিক্ষিকাদের বিভ্রান্ত করতে, তবে আর কত দিন ঠকাবেন এই যোগ্য নিরপরাধ চাকরিহারাদের ? আজ তাঁরা আপনার এই ঘোষণাকে ‘মৃত্যুপরোয়ানা’ বলে উল্লেখ করেছেন।”
মুখ্যমন্ত্রীর দেওয়া অপশনের কথা উল্লেখ করে শুভেন্দুর প্রথম প্রশ্ন, “যদি আদালতে পুনর্বিবেচনার আর্জির ফলাফল চাকরিহারা যোগ্য শিক্ষক-শিক্ষিকাদের পুনর্বহাল করার পক্ষে না যায়, তবে আর কোন আইনি পথে এদের সাহায্য করা সম্ভব হবে ? কারণ যোগ্যদের তালিকা আদালতে জমা না দিয়ে আপনি নিজে এদের আইনি সম্ভাবনার সমস্ত দরজার শিকলে তালা দিয়েছেন।”
তাঁর দ্বিতীয় প্রশ্ন, “পুনরায় পরীক্ষায় বসতে বলে যে উপদেশ আপনি দিচ্ছেন, কি গ্যারান্টি আছে, যে যোগ্য শিক্ষক শিক্ষিকারা চাকরি হারিয়েছেন আপনার সরকারের শিক্ষামন্ত্রী, আপনার দলের নেতাদের ও তৎকালীন এসএসসি কর্তাদের দুর্নীতির ফলে, তাঁরাই আবার পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে চাকরি ফিরে পাবেন ?হয়তো সম্পূর্ণ নতুন ব্যক্তিরা চাকরি পেলেন। আপনি দায়িত্ব নিয়ে, ১০০% সুনিশ্চিতভাবে এক জন কারো নাম বলতে পারবেন যিনি চাকরি ফিরে পাবেনই?হয়তো কিছু জন পাবেন, বেশি বা কম, সে তো ফলাফল বেরোলে বোঝা যাবে।”
আরও একটি প্রশ্ন তুলেছেন বিরোধী দলনেতা। ফেসবুকে তিনি লিখেছেন, “যে রিভিউ পিটিশন নিয়ে আপনি এত আশাবাদী এবং চাকরিহারা যোগ্য শিক্ষক শিক্ষিকাদের ভরসা জোগানোর আপনার এক মাত্র সম্বল, সেই রিভিউ পিটিশন দাখিল করার সময়ে কি যোগ্যদের তালিকা জমা দিয়েছেন সাথে ?” এর পাশাপাশি তিনি খোঁচা দিয়ে লেখেন, “এই বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হওয়ার ব্যাপারে সব থেকে খুশি হয়েছে আপনার দলের নেতারা, কারণ তাঁরা আবার লক্ষ লক্ষ টাকায় চাকরি বিক্রি করার সুযোগের সম্ভাবনা দেখতে পাচ্ছেন।” নতুন করে পরীক্ষায় বসতেই হবে চাকরিহারা শিক্ষকদের। ৩০ মে হবে বিজ্ঞপ্তিপ্রকাশ। নতুন করে পরীক্ষায় বসার কথা নিজেই ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সাংবাদিক বৈঠক করে তিনি বলেন, “৩১ মে-র মধ্যেই আমরা সুপ্রিম কোর্টের অর্ডার অনুযায়ী নোটিফিকেশন করব। বিজ্ঞপ্তি আমাদের করতে হবে ৩০ মে। ১৬ জুন পর্যন্ত অনলাইনে আবেদন করা যাবে। এর জন্য শেষ তারিখ ১৪ জুলাই। প্যানেল প্রকাশ হবে ১৫ নভেম্বর। কাউন্সেলিং ২০ নভেম্বর।” সুপ্রিম কোর্টের আগের নির্দেশ মেনে পরীক্ষার ব্যবস্থা করা এবং রিভিউ পিটিশন দু-দিকই খোলা রাখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
আরও দেখুন