পিয়ালি মিত্র: বাংলাদেশী থেকে ভারতীয়। কলকাতা পুলিশের জালে অভিযুক্ত বাংলাদেশি নাগরিক। ভারতে অবৈধভাবে প্রবেশ এবং দেশে বসবাসের জন্য জাল পরিচয়পত্র তৈরি করতে আজাদ শেখ (৪১) নামে একজন অভিযুক্ত বাংলাদেশি নাগরিকের জন্য মাত্র ১৫,০০০ টাকা খরচ হয়েছিল।
১৮ মে নেতাজি নগর থানার একজন এএসআই-এর গাড়িতে ধাক্কা মারে আজাদ শেখ। এরপর গ্রেফতার করা হয় তাকে। গাড়িটি বাজেয়াপ্ত করা হয় এবং অভিযুক্ত আজাদ শেখের ড্রাইভিং লাইসেন্স এবং আধার কার্ড যাচাই করার পর পুলিশ তার সমস্ত নথিপত্র জাল বলে জানতে পারে।
আরও পড়ুন: Cyclone Shakti update: ‘শক্তি’ তাণ্ডব করবে! প্রবল বেগে ধেয়ে আসছে! দক্ষিণের সাগরপার ত্রস্ত, তৎপর প্রশাসন…
বাংলাদেশী গাড়ির চালক আজাদ শেখকে জেরা করে উঠে আসে ভয়ংকর তথ্য। ১৫০০০ টাকার বিনিময়ে ভারতীয় হয়ে ওঠে আজাদ শেখ। জাফর আলী শেখ নামে আরেক জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সামনে এসেছে এরকমই বিস্ফোরক তথ্য। বাংলাদেশের ফরিদপুরের বাসিন্দা আজাদ আলী শেখ রাতারাতি কলকাতার বাসিন্দা হয়ে গিয়েছেন। এর পিছনে কাজ করেছে মাত্র ১৫ হাজার টাকা।
একজন বাংলাদেশের ফরিদপুর জেলার বোয়ালমারির বাসিন্দা এবং ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে উত্তর ২৪ পরগনার খাসঙ্কদহে বসবাস করছিল। আরেকজন ন্যাজাটের। দুজনেই এখন পুলিশের হেফাজতে রয়েছেন। ২০২৩ সালের অক্টোবর মাসে উত্তর ২৪ পরগনার একটি সীমান্ত দিয়ে অনুপ্রবেশ করে এই আজাদ। এক দালাল এ ব্যাপারে তাদের সাহায্য করেছিল। আজাদ আলী, জাফর আলীকে ভাই পাতান।
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)
আরও পড়ুন: Chinese Student asked to remove pants while menstrual cycle: ‘প্যান্ট খুলে দেখাও ঋতুস্রাব হয়েছে কি না…’ যন্ত্রণায় কাতর ছাত্রীকে স্কুলের অত্যাচার…
এরপর জাফর আলীর সমস্ত পরিচয় নিজে আত্মস্থ করেন। আধার কার্ড, লাইসেন্স, ভোটার কার্ড সহ জাফর আলীর মা-বাবাকেও নিজের মা বাবা হিসেবে পরিচয় দেন। আয়ুষ্মান ভারতের ভূয়ো কার্ড তিনি বানিয়ে নেন নিজের জন্য।
অর্থাৎ ১৫ হাজার টাকার বিনিময়ে একজন বাংলাদেশী নাগরিক ভারতীয় নাগরিক হয়ে যায়। পুরোটাই হয়েছে প্যাকেজ সিস্টেমে। জাফর আলী শেখকে জেরা করে তদন্তকারীরা জানার চেষ্টা করছে আর কতজনকে এভাবে ভূয়ো নথির মাধ্যমে ভারতের নাগরিকত্ব দেওয়া হয়েছে।
শেখের বিরুদ্ধে কালীঘাট থানায় বিদেশী আইনের ১৪এ(খ) ধারা এবং ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ধারা ২১২-এর অধীনে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদের সময় শেখ জানিয়েছেন যে তিনি একজন মধ্যস্থতার সাহায্যে ভারতে প্রবেশ করেছিলেন, যিনি তাকে নাজাত থানা এলাকার জাফর আলী শেখের সাথে থাকার ব্যবস্থা করেছিলেন, পুলিশ জানিয়েছে।
জাফর আজাদকে তার বড় ভাই হিসেবে পরিচয় করিয়ে দিয়ে জাল আধার কার্ড, রেশন কার্ড, ড্রাইভিং লাইসেন্স এবং প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা কার্ড পেতে সাহায্য করেছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে। জাল নথিতে জাফর তার বাবা-মাকে আজাদের ভাই হিসেবে উল্লেখ করেছেন বলে জানা গেছে। শনিবার রাতে জাল পরিচয়পত্র তৈরির অভিযোগে পুলিশ জাফরকে গ্রেফতার করে।
তদন্তকারীরা জানিয়েছেন যে তারা এখন দেশে বাংলাদেশি নাগরিকের সংখ্যা নিয়ে উদ্বিগ্ন যারা একই চক্রের সাহায্যে অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশ করেছে এবং এমনকি মধ্যস্থতাকারীদের এত কম টাকা দিয়ে অন্যান্য রাজ্যেও পাচার করেছে।
এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) ১৫ এপ্রিল ভারতীয় পরিচয়পত্র জাল করার অভিযোগে পাকিস্তানি নাগরিক আহমেদ হোসেনকে গ্রেপ্তার করেছিল।
হোসেন, প্রথমে নিজেকে বাংলাদেশি বলে দাবি করেছিলেন এবং ভারতীয় পরিচয় দেওয়ার জন্য জাল নথি ব্যবহার করার কথা স্বীকার করেছিলেন, পরে তাকে পাকিস্তানি নাগরিক বলে অভিযোগ করা হয়।