সন্দীপ সরকার, কলকাতা: বুধবার কলকাতা নাইট রাইডার্স বনাম চেন্নাই সুপার কিংস (KKR vs CSK) ম্যাচ তখন সবে শেষ হয়েছে। মাঠের ধারে দেখা গেল সিএবি প্রেসিডেন্ট স্নেহাশিস গঙ্গোপাধ্যায়, সচিব নরেশ ওঝারা দাঁড়িয়ে। হাতে একটি উপহারের বাক্স। পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানের পরই মহেন্দ্র সিংহ ধোনিকে (MS Dhoni) দেখা গেল তাঁদের দিকে এগিয়ে গেলেন। তাঁর হাতে স্নেহাশিস তুলে দিলেন স্মারক। কৌতূহলী ধোনিকে দেখা গেল সেটি খুলে দেখছেন। কথা বলছে সিএবি কর্তাদের সঙ্গে।
আইপিএলের ম্যাচ খেলতে কলকাতায় আসা ধোনির জন্য বিশেষ একটি উপহারের ব্যবস্থা করেছিল সিএবি। কী দেওয়া হল ধোনিকে? একটি স্মারক। কাঠের বাক্সের মধ্যে ইডেনে হওয়া সব আন্তর্জাতিক ও আইপিএল ম্যাচের তথ্য। ১৯৩৪ সাল থেকে শুরু করে যে সমস্ত ম্যাচ হয়েছে ইডেনে, সব ম্যাচের নথি। যা দেখে ধোনিও বেশ চমৎকৃত। শিশুসুলভ সারল্যেল জিজ্ঞেস করেন, ‘কোনও ম্যাচ বাদ যায়নি তো?’
কলকাতার সঙ্গে, বাংলার সঙ্গে ধোনির সম্পর্ক বহু পুরনো। একটা সময় রেলে চাকরির সূত্রে দীর্ঘদিন কাটিয়েছেন খড়্গপুরে। ইডেনে খেলেছেন প্রচুর ম্যাচ। ময়দানের অন্যান্য মাঠেও খেলেছেন। সিএবি আয়োজিত পি সেন ট্রফি খেলেছেন শ্যামবাজার ক্লাবের হয়ে। বুধবার ধোনি নিজেও জানিয়েছেন তাঁর কলকাতা কানেকশনের কথা।
ধোনি বলেছেন, ‘আমি শুধু ইডেনেই যে অনেক ম্যাচ খেলেছি তাই নয়, কলকাতার অন্যান্য মাঠেও খেলেছি। এই শহরে এত ভালাবাসা পাই, এত সমর্থন দেখে ভাল লাগে।’ কিংবদন্তি ধোনি কলকাতার জামাইও। কারণ, ধোনির স্ত্রী সাক্ষী সিংহ রাজপুতের বাপের বাড়ি কলকাতায়। সব মিলিয়ে ধোনির একাধিক বং কানেকশন।
আর সেই শহরেই বুধবার শেষ ওভারে ছক্কা মেরে ম্যাচ জিতিয়েছেন ধোনি। সেই সঙ্গে জোরাল ধাক্কা দিয়েছেন কেকেআরের প্লে অফে ওঠার স্বপ্নকে। কেকেআরের কাছে বাকি তিন ম্যাচের তিনটিই মরণ-বাঁচন পরিস্থিতি ছিল। তার মাঝেই বুধবার চেন্নাই সুপার কিংসের কাছে হেরে বসেছে কেকেআর। অজিঙ্ক রাহানেদের প্লে অফে ওঠার স্বপ্নই এখন জটিল অঙ্কের সমীকরণে পড়ে কোণঠাসা।
এই আইপিএলই কি ধোনির শেষ আইপিএল? কেকেআরের বিরুদ্ধে ম্যাচ জেতার পর ধোনিকে সামলাতে হল এই প্রশ্নও। ধোনি অবশ্য ধোঁয়াশা রেখে দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘আমার বয়স এখন ৪৩ এবং আমি বহুদিন ধরে ক্রিকেট খেলছি। দর্শকরা তো সব জায়গায়ই আমায় ভালবাসা দেন, সমর্থন করেন। ওঁরা জানেন না যে, এটাই আমার শেষ বছর হতে চলেছে কি না। আমি তো বছরে দু’মাস খেলি, সেটা অস্বীকার করার জায়গা নেই। আইপিএল শেষ হওয়ার পর আমায় পরবর্তী ছয় থেকে আট মাস কসরত করতে হবে। দেখতে হবে যে, আমার শরীর এই ধকল নিতে পারছে কি না। এখনই কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় আসেনি।’
আরও দেখুন