কলকাতা: বছর ঘুরলেই পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা নির্বাচন। রাজ্য বিজেপি-তে তাঁর ভূমিকা নিয়ে তাই জোর চর্চা শুরু হয়েছিল। আর সেই আবহেই ব্যক্তিগত জীবনে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তের জন্য খবরের শিরোনামে উঠে এলেন দিলীপ ঘোষ। তাঁর বিয়ের খবরে এই মুহূর্তে তোলপাড় বঙ্গ রাজনীতি। শুক্রবার বিজেপি-র দক্ষিণ কলকাতার মহিলা মোর্চার নেত্রী রিঙ্কু মজুমদারের সঙ্গে চারহাত এক হচ্ছে তাঁর। (Dilip Ghosh Wedding)
৬১ বছর বয়সে বিয়ে করছেন দিলীপ। পাত্রীর বয়স ৫১ বছর। তিনি বিবাহবিচ্ছিন্না, এক পুত্র রয়েছেন। ছেলের অনুমতি নিয়েই বিয়েতে এগোচ্ছেন রিঙ্কু। অন্য দিকে মায়ের ইচ্ছেকে সম্মান জানিয়ে দিলীপ বিয়েতে রাজি হয়েছেন বলে খবর। শুক্রবার দিলীপের নিউটাউনের বাড়িতে আইনি মতে বিয়ে সারবেন দিলীপ ও রিঙ্কু। পরে সনাতনী রীতি মেনেও বিয়ে হবে বলে খবর মিলেছে। রাজনীতিতে এতদিন জমিয়েই ব্যাটিং করেছেন দিলীপ। মাঝে দাপট কিছুটা কমেছিল যদিও, কিন্তু মেজাজ পাল্টায়নি এতটুকু। এবার তাঁর বিয়ের খবরেও সরগরম রাজ্য রাজনীতি। (Dilip Ghosh News)
জানা গিয়েছে, ২০২১ সালে রিঙ্কুর সঙ্গে পরিচয় দিলীপের। কলকাতার ইকোপার্কে মর্নিং ওয়াকে গিয়েই রিঙ্কুর সঙ্গে আলাপ হয় তাঁর। দিলীপের বিয়ে নিয়ে শোরগোলের যথেষ্ট কারণও রয়েছে। কারণ রাষ্ট্রীয় স্বয়ম সেবক সঙ্ঘের প্রচারক হিসেবেই রাজনীতিতে প্রবেশ দিলীপের। দু’-একটি ব্যতিক্রম থাকলেও, RSS-এর প্রচারকদের সিংহভাগই অবিবাহিত। দিলীপও এতদিন একাকীই জীবন কাটিয়েছেন। এতদিন পর সংসার পাতার সিদ্ধান্ত নিলেন তিনি।
২০১৫ সালে বিজেপি-তে যুক্ত হন দিলীপ। সে বছর ডিসেম্বরে পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি-র সভাপতি হন। ২০১৬ সালে খড়্গপুর থেকে বিধায়ক এবং ২০১৯ সালে মেদিনীপুর থেকে জয়লাভ করে সাংসদ হন। রাজনীতিক হিসেবে গরম সংলাপ, ‘ডোন্ট কেয়ার’ মনোভাবের জন্যই বরাবর পরিচিত দিলীপ। কিন্তু তাঁর জীবনে মেঘ নেমে আসে গত বছর। ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে আচমকা আসন পাল্টে দিলীপকে খড়্গপুর থেকে দুর্গাপুর-বর্ধমান আসনে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। আসনবদলে মনোকষ্ট লুকিয়ে রাখেননি দিলীপ। দলের কিছু নেতার বিরুদ্ধে সেই সময় ষড়যন্ত্রের অভিযোগও তোলেন দিলীপের অনুরাগীরা।
শোনা যাচ্ছে, ২০২৪ সালের নির্বাচনে পরাজিত হওয়ার পর থেকেই কার্যত নিঃসঙ্গ হয়ে পড়েন দিলীপ। সেই সময় তাঁর ক্ষতে মলম লাগাতে এগিয়ে আসেন রিঙ্কু। দিলীপের বিয়ের খবরে RSS-ও জোর ধাক্কা খেয়েছে বলে খবর। এবিপি আনন্দের তরফে যোগাযোগ করা হলে, RSS জানায়, অবাক হলেও, দিলীপকে আর প্রচারক বলে গন্য করা হয় না। কারণ সঙ্ঘের অর্থে, সঙ্ঘের অন্নে আর প্রতিপালিত নন দিলীপ। নিজে রোজগার করেন তিনি। অন্য দিকে, বিজেপি সূত্রে খবর, দিলীপের আমলেই বিজেপি-তে সক্রিয় হয়ে ওঠেন রিঙ্কু। ২০২৬ সালের পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনে তাহলে কি গুরুত্ব পাবেন দিলীপ? প্রশ্ন অনুরাগীদের মধ্যে।
অনেক অভিনন্দন @DilipGhoshBJP দা। মন থেকে খুশি হয়েছি। খুব ভালো হোক। নতুন বৌদি আপনার হাত থেকে তরোয়াল কেড়ে নিয়ে গোলাপ তুলে দিক।
ভালো থাকুন দুজনে। Again Congratulations!
— Debangshu Bhattacharya Dev (@ItsYourDev) April 17, 2025
অন্য দিকে দিলীপকে নতুন জীবনের জন্য শুভেচ্ছা জানিয়েছেন তৃণমূলের দেবাংশু ভট্টাচার্য। তিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় লেখেন, ‘অনেক অভিনন্দন দিলীপদা। মন থেকে খুশি হয়েছি। খুব ভাল হোক। নতুন বৌদী আপনার হাত থেকে তরোয়াল কেড়ে নিয়ে গোলাপ তুলে দিক। ভাল থাকুন দু’জনে। আবারও অভিনন্দন’।
আরও দেখুন