জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: জেনারেল আসীম মুনির (General Asim Munir) কি ভারতের সঙ্গে সংঘর্ষবিরতিতে (ceasefire) মোটেই খুশি হননি? শরিফ সরকারের (Sharif government) সিদ্ধান্তের সঙ্গে একমত নন তিনি? পাকিস্তানে সব ঠিক আছে তো? পাকসেনার উপর থেকে নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছে সেই পাক সরকার? কেন এই কথা কানাঘুষো শোনা যাচ্ছে?
‘ল্যান্ড অফ ক্যু’
আসলে এমনিতেই পাকিস্তানকে ‘ল্যান্ড অফ কনফিউশন’, ‘ল্যান্ড অফ কন্ট্রাডিকশনস’, ‘ল্যান্ড অফ ক্যু’ বলা হয়ে থাকে। শনিবার বিকেলে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে সংঘর্ষবিরতি ঘোষিত হয়। কিন্তু সংঘর্ষবিরতি ঘোষণার ঘণ্টাখানেকের মধ্যেই কাশ্মীর-গুজরাত-সহ দেশের বিভিন্ন অংশে হামলা চালায় পাকিস্তান। ড্রোন অ্যাটাক করে বলেও শোনা যায়। আর এই অ্যাটাকের পরেই ওই প্রশ্নটি উঠে আসে। তবে কি পাকসেনার উপর থেকে নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছে পাকিস্তানের সরকার? পাকসরকারের কথায় আর কান দিচ্ছে না পাকসেনা?
আরও পড়ুন: India Pakistan War: ভয়ংকর ‘সুদর্শন চক্র’ ভারত ছাড়া রয়েছে আর মাত্র দু’টি দেশের হাতে! S-400-র দাম জানেন? শুনলে আঁতকে উঠবেন…
আরও পড়ুন: Baba Vanga Predictions on India Pakistan War: যুদ্ধের অত্যাশ্চর্য ফল! বাবা ভাঙ্গার সঙ্গে মিলে গেল স্বামী যোগেশ্বরানন্দের ভবিষ্যদ্বাণীও! ৩০ মে’র পরেই…
পাক সরকারের কথা আর শুনছে না পাক সেনা?
ভারতের বিদেশসচিব বিক্রম মিশ্রি শনিবার সাংবাদিক মাধ্যমে জানিয়েছিলেন দুপুর ৩টে ৩৫ নাগাদ পাকিস্তানের ডিজিএমও (DGMO) ‘ডিরেক্টরস জেনারেল অফ মিলিটারি অপারেশনস’ (Directors General of Military Operations) ফোন করেছিল ভারতের DGMO-কে। তার পরেই সংঘর্ষবিরতির সিদ্ধান্ত হয়। প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই ডোনাল্ড ট্রাম্প তাঁর এক্স হ্য়ান্ডেলে পোস্ট করে লেখেন দীর্ঘ প্রচেষ্টার পরে সংঘর্ষবিরতিতে রাজি হয়েছে দুই দেশ। পরে পাকিস্তানের বিদেশমন্ত্রকের তরফ থেকেও এক্স-এ একটি পোস্ট করা হয়। পাকিস্তানের আর্জিতেই যে সংঘর্ষবিরতি, স্পষ্ট হয়ে যায় সেটাও।
কিন্তু সেই ঘটনার ঘণ্টাতিনকের মধ্যেই কেন ফের হামলা করল পাকিস্তান? তবে কি পাক সরকারের কথা আর শুনছে না পাক সেনা?
সেনা অভ্যুত্থান
আর ঠিক এখান থেকেই উঠছে পরের ধাপের প্রশ্নটি। ওয়াকিবহাল মহলের একাংশের প্রশ্ন, তবে কি আবার একটা সেনাঅভ্যুত্থান ঘটতে চলেছে ভারতের পড়শিদেশে?
আসলে পাকিস্তানের ক্ষেত্রে এরকম প্রশ্ন ওঠার কারণও আছে। কেননা, এর আগেও বেশ কয়েকবার সেনা অভ্যুত্থান ঘটেছে সেখানে। প্রথম অভ্যুত্থান ঘটেছিল ১৯৫৮ সালের ২৭ অক্টোবর। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী তখন ছিলেন ফিরোজ খান নুন। সেনাপ্রধান জেনারেল মুহাম্মদ আইয়ুব খান এক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে রাষ্ট্রপতি ইস্কান্দার মির্জাকে উৎখাত করেন এবং নিজেই পাকিস্তানের রাষ্ট্রপতি হন। এই অভ্যুত্থানের পরে প্রথমবারের মতো পাকিস্তানে সামরিক আইন জারি করা হয়। দ্বিতীয় অভ্যুত্থান হয় ৫ জুলাই ১৯৭৭। সেই সময়ে জুলফিকার আলি ভুট্টো পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী। জেনারেল মুহাম্মদ জিয়া-উল হক এক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ১৯৭৮ সালে নিজেকে রাষ্ট্রপতি ঘোষণা করেন। তৃতীয় অভ্যুত্থান ঘটে ১৯৯৯ সালের ১২ অক্টোবর। সে সময়ে পাক প্রধানমন্ত্রী ছিলেন নওয়াজ শরিফ। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের দাদা নওয়াজ শরিফ। জেনারেল পারভেজ মোশাররফ এক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে নওয়াজ শরিফকে সরিয়ে নিজেকে প্রধান নির্বাহী ঘোষণা করেন। পরে রাষ্ট্রপতি হিসেবেও ক্ষমতা গ্রহণ করেন তিনি।
ফের কি ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি ঘটবে? এখন কী হয়, সেটাই দেখার জন্য উদগ্রীব সকলে।
অপারেশন সিঁদুর
মঙ্গলের রাতে ভারতের আক্রমণ আছড়ে পড়ে পাকিস্তানের মাটিতে। পাকিস্তান কিছু বুঝে ওঠার আগেই মাত্র ২৫ মিনিটের অপারেশনে কাজ শেষ করে ভারত। ভারতের অপারেশনের পরে পাকিস্তানও পালটা হামলা করে। লাভ হয়নি! ভারতীয় সেনাবাহিনী পাকিস্তানের সব আক্রমণই ব্যর্থ করে দেয় বলে খবর। বুধবার রাতে এবং বৃহস্পতিবার সকালেও ভারতের কয়েকটি জায়গার সেনা ছাউনিতে ড্রোন এবং মিসাইল হামলার ছক কষে পাকিস্তান। ভারতের ১৫টি শহরকে টার্গেট করে তারা। কিন্তু ভারতীয় সেনাবাহিনীর সতর্কতার কারণে তাতেও ব্যর্থ হয় পাকিস্তান! কী করে? ভারতীয় সেনাবাহিনী রাশিয়ার S-400 অর্থাৎ ‘সুদর্শন চক্র এয়ার ডিফেন্স মিসাইল সিস্টেমে’র সাহায্যে পাকিস্তানের সব ক্ষেপণাস্ত্র ধ্বংস করে দেয়।
পাকিস্তান ও ‘পাক অধিকৃত কাশ্মীরে’ হামলা
পরশু রাতে পাকিস্তান ও ‘পাক অধিকৃত কাশ্মীরে’ হামলা চালিয়েছিল ভারত। বেছে বেছে পাকিস্তানের জঙ্গিঘাঁটিগুলি উড়িয়েছে তারা। জৈশ লস্কর, হিজবুল মুজাহিদিনের ডেরায় হামলা চালিয়েছে। বড় রকমের স্ট্রাইক ঘটেছে ভাওয়ালপুর মুরিদকে অঞ্চলে। যেখানে প্রাথমিক ভাবে ২৫ থেকে ৩০ জঙ্গি নিকেশ হয় ভোরের দিকে। মাত্র ২৫ মিনিটে ভারত ঝাঁপিয়ে পড়ে পাকিস্তানের উপর। হামলা মোট ন’টি জায়গায়। ভারত তার আক্রমণে খুবই সংযম দেখিয়েছে। সাধারণ মানুষের বসবাসের কোনও জায়গায় তারা আক্রমণ শানায়নি। সবটাই বেছে-বেছে, জঙ্গিদের ঘাঁটিতে। শীর্ষ সূত্র বলছে, এই স্ট্রাইকে মারা গিয়েছে জৈশ-ই-মহম্মদ, লস্কর-ই-তৈবা, হিজবুল মুজাহিদিনের জঙ্গিরা। খবর তেমন মিলছে না। তবে, যতটুকু জানা যাচ্ছে, পাকিস্তানে ১০০-র কাছাকাছি মৃত্যু ঘটেছে। আর ক্রস-ফায়ারের জেরে ভারতের অন্তত তিনজন মারা গিয়েছেন। পোস্ট-স্ট্রাইক এক বিবৃতি দিয়েছে ভারতীয় সেনা। এক্স হ্যান্ডেলে একটি ভিডিয়োও শেয়ার করেছে তারা এবং লিখেছে ‘জাস্টিস ইজ সার্ভড’! ইনটেলিজেন্স এজেন্সি কতটা ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তার হিসেব করছে। টার্গেট লোকেশনও খুঁজে দেখছে। প্রাথমিক হিসেবে ৮০-৯০ জন জঙ্গি মারা গিয়েছে। তবে অপারেশন সিন্দুরের জেরে মাসুদ আজহারের পরে মারা গিয়েছে আব্দুল মালিক মুদাসসিরের মতো ভয়ংকর জঙ্গিরাও। এদের পোশাকি নাম এইচভিটি– এরা লস্কর-ই-তৈবার হাই ভ্যালু টেররিস্ট।
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)