জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: বাল্য বিবাহ। যা বহু আগে বন্ধ হয়ে যাওয়া উচিত ছিল তা তো হয়ইনি বরং দেশের বিভিন্ন প্রান্তে এই প্রথা রমরমিয়ে চলছে। কেবল ভারত নয়, আরও একটি দেশ এই প্রথা ধরে রেখেছে তা হল আফগানিস্তান। আফগানিস্তানের হেলমান্দ প্রদেশে ৪৫ বছরের এক ব্যক্তি ছয় বছরের মেয়েকে বিয়ে করেন। তবে তালিবানরা এই ঘটনার কথা জানতে পেরে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে বলেই সূত্রের খবর।
আরও পড়ুন, sheikh Hasina: আন্দোলনে গুলি চালানোর অর্ডার দিয়েছিলেন শেখ হাসিনাই: বিবিসি
আফগান সংবাদমাধ্যম Amu.tv সূত্রে জানা গিয়েছে, তালিবানরা এই ঘটনার ছবি দেখে “ভীত ও ক্ষুব্ধ” হয় এবং ওই ব্যক্তিকে শিশুটিকে ঘরে নিয়ে যেতে বাধাও দেয়। তালিবানরা নাকি জানিয়েছে, বাচ্চা মেয়েটির বয়স ৯ বছর হলে তবেই তাকে শ্বশুরবাড়ি নিয়ে যাওয়া যাবে। এই ঘটনা ক্ষোভ তৈরি হলেও বিয়ের বৈধতা নিয়ে কোনও প্রশ্ন ওঠেনি। Hasht-e Subh Daily-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, ওই ব্যক্তি, যার ইতিমধ্যে দুইজন স্ত্রী আছে, শিশুটির পরিবারের কাছ থেকে টাকা দিয়ে তাকে কিনে নেয়।
এমনকী বিয়ের অনুষ্ঠানটি হয় মারজাহ জেলায়। পরে শিশুটির বাবা ও বর—উভয়কেই গ্রেফতার করা হয়েছে। তবে, এখনও পর্যন্ত কারোর বিরুদ্ধেই কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি। ২০২১ সালে ক্ষমতায় ফেরার পর থেকে তালিবান শাসনে আফগানিস্তানে শিশুদের জোরপূর্বক বিয়ের ঘটনা বেপরোয়া হারে বেড়ে গেছে। আফগানিস্তানে বাল্যবিবাহ আগে থেকেই ব্যাপকভাবে প্রচলিত থাকলেও, তালিবানদের নারীদের শিক্ষা ও কর্মসংস্থানে নিষেধাজ্ঞা জারির পর এই পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ রূপ নিয়েছে।
জাতিসংঘের নারী সংস্থা UN Women গত বছর জানিয়েছিল, তালিবানদের এই নিষেধাজ্ঞার কারণে আফগানিস্তানে বাল্যবিবাহের হার ২৫ শতাংশ এবং অপ্রাপ্তবয়স্ক মা হওয়ার হার ৪৫ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে। UNICEF-এর তথ্য অনুযায়ী, আফগানিস্তান বিশ্বে শিশু কনের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি থাকা দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম। আন্তর্জাতিক ক্রিমিনাল আদালত আফগানিস্তানে নারী ও কন্যাশিশুদের ওপর নিপীড়নের অভিযোগে তালিবান শাসনের দুই শীর্ষ নেতার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে।
আদালতের ভাষ্য অনুযায়ী, তালিবান ক্ষমতায় আসার পর থেকে মেয়েদের নিপীড়নের জন্য সর্বোচ্চ নেতা হাইবাতুল্লাহ আখুন্দজাদা এবং প্রধান বিচারপতি আব্দুল হাকিম হাক্কানি–এর বিরুদ্ধে অভিযোগ আনার জন্য যথেষ্ট যুক্তিসঙ্গত প্রমাণ রয়েছে। প্রসঙ্গত, অনেক ক্ষেত্রেই জন্মের সময় থেকেই মেয়েদের ‘নেইমিং’ প্রথার মাধ্যমে পুরুষ আত্মীয়দের সঙ্গে বিয়ে ঠিক করে দেওয়া হয়, যেখানে মেয়েটিকে পরিবারের সম্পত্তি হিসেবে দেখা হয়। এসব বন্দোবস্ত চূড়ান্ত হিসেবে বিবেচিত হয়, যা ভাঙা যায় না। কিছু অঞ্চলে মেয়েদের ‘ওয়ালওয়ার’ নামক প্রথায় বউয়ের দামদর করে বিক্রি করা হয়—যেখানে রূপ, স্বাস্থ্য, ও শিক্ষাগত যোগ্যতার ভিত্তিতে পরিবার সেই অর্থ পায়।
আরও পড়ুন, Bangladesh: দেশজুড়ে চলছে টানা বৃষ্টি, ফুঁসে উঠেছে বাংলাদেশের অধিকাংশ নদী, কী বলছে আবহাওয়া দফতর?
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)