প্রদ্যোৎ সরকার, নদিয়া : আবার প্রকাশ্যে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। আবার মহুয়া মৈত্রর বিরুদ্ধে ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ। এর আগেও মহুযার বিরুদ্ধে নালিশ জানিয়ে তৃণমূল নেত্রীকে চিঠি দিয়েছিলেন তৃণমূলের ছয় বিধায়ক। ২০২৪ সালে কৃষ্ণনগরের তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্রর বিরুদ্ধে অসহযোগিতার অভিযোগ তুলে চিঠি দেন উজ্জ্বল বিশ্বাস, কল্লোল খাঁ, রুকবানুর রহমান, বিমলেন্দু সিংহ রায়, মানিক ভট্টাচার্য, নাসিরুদ্দিনরা। এবার মহুয়ার বিরুদ্ধে অসন্তোষের ছাপ স্পষ্ট হল প্রয়াত বিধায়কের স্মরণসভা ঘিরে। মহুয়ার ডাকা নাসিরউদ্দিন আহমেদের স্মরণসভায় গরহাজির তৃণমূল বিধায়কের পরিবারই।
১ ফেব্রুয়ারি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় কালীগঞ্জের তৃণমূল বিধায়ক নাসিরউদ্দিন আহমেদের। প্রয়াত তৃণমূল বিধায়কের স্মরণে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন সাংসদ মহুয়া মৈত্র। অথচ কৃষ্ণনগর সাংগঠনিক জেলা তৃণমূলের সভাপতি মহুয়া মৈত্রের ডাকে পলাশির ঘোষপাড়া মাঠে এলেন না প্রয়াত তৃণমূল বিধায়কের পরিবারের সদস্যরাই। উপস্থিত ছিলেন না কৃষ্ণনগর সাংগঠনিক জেলা তৃণমূলের অধিকাংশ বিধায়ক। যার জেরে জল্পনা শুরু হয়েছে রাজনৈতিক মহলে।
উল্লেখ্য, কালিগঞ্জ বিধানসভার বিধায়ক নাসিরউদ্দিন আহমেদের মৃত্যুর পর নাসিরউদ্দিন ঘনিষ্ঠ বিধায়করা রাজ্য কমিটির পক্ষ থেকে স্মরণসভার ডাক দেন ৯ ফেব্রুয়ারি। এটির নেতৃত্বে ছিলেন মন্ত্রী উজ্জ্বল বিশ্বাস। এরপর দেখা যায় কৃষ্ণনগরের সাংসদও ১৬ ই ফেব্রুয়ারি আরও একটি স্মরণসভার ডাক দেন। একই ইস্যুতে দু’টি স্মরণসভা ঘিরে স্বাভাবিকভাবেই জটিলতা তৈরি হয়।
তৃণমূল সূত্রে খবর, এরপর উজ্জ্বল বিশ্বাসের সঙ্গে যোগাযোগ করে রাজ্য নেতৃত্ব। তাঁকে বার্তা দেওয়া হয় ৯ তারিখের স্মরণসভা না করার জন্য। শেষ পর্যন্ত রাজ্য কমিটির ডাকা স্মরণ সভার বদলে প্রয়াত বিধায়কের পরিবারের আহ্বানে সেই স্মরণসভা অনুষ্ঠিত হয়। সেই সভায় বিধায়কের পরিবারের সদস্যরা ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রী উজ্জ্বল বিশ্বাস, চাপড়ার বিধায়ক তথা কৃষ্ণনগর সাংগঠনিক জেলা তৃণমূলের চেয়ারম্যান রুকবানুর রহমান, নাকাশিপাড়ার বিধায়ক কল্লোল খাঁ, পলাশিপাড়ার বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্য। কিন্তু সেখানে ছিলেন না মহুয়া মৈত্র। যদিও মহুয়ার দাবি, কোনও গোষ্ঠীকোন্দল নয়, পার্লামেন্টে থাকার জন্যই আগের দিনের স্মরণসভায় থাকতে পারেননি তিনি।
তৃণমূলের বিধায়ক বিমলেন্দু সিংহ রায় জানান, মহুয়ার ডাকা সভায় শরীর খারাপ থাকায় আসতে পারেননি। যদিও তাপস সাহার দাবি বিগত স্মরণ সভায় তাকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। চাপড়ার বিধায়ক তথা কৃষ্ণনগর সাংগঠনিক জেলা তৃণমূলের চেয়ারম্যান রুকবানুর রহমানের দাবি, বিধানসভায় ব্যস্ত থাকায় আসতে পারেননি। বিধায়কের পরিবারের কেউ এ বিষয়ে মুখ খুলতে চাননি।
এই দ্বন্দ্ব আজকের নয়। মহুয়া মৈত্রকে দলীয় সভাপতির পদ থেকে সরানোর জন্য একযোগে দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে নালিশ জানিয়েছিলেন তৃণমূলেরই ছয় বিধায়ক। সেই ঘটনার পর ফের একবার স্মরণসভা ঘিরে নদিয়ায় তৃণমূলে যে গোষ্ঠী কোন্দল প্রকাশ্যে চলে এল।
আরও দেখুন
+ There are no comments
Add yours