কলকাতা: কর্তব্যরত অবস্থায় মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণ-খুন (R G Kar Hospital)। খাস কলকাতার বুকে এই ঘটনায় তোলপাড় রাজ্য রাজনীতি। বিক্ষোভের আঁচ পৌঁছে গিয়েছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। কর্মক্ষেত্রে এহেন নির্মম ঘটনার স্বীকার হওয়ার ঘটনায় শিউরে উঠছে দেশবাসী। প্রশ্ন উঠছে মহিলারা ঠিক কোথায় সুরক্ষিত? এই আবহে এবার রাত দখলের কর্মসূচি নিয়েছে এই শহরের মহিলারা। যে কর্মসূচির আহ্বান ছড়িয়ে পড়েছে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে।
সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া পোস্টারে দেখা যাচ্ছে পোস্টারে লেখা হয়েছে ‘মেয়েরা রাত দখল করো। The Night is Ours।’ জাস্টিস ফর আর জি কর স্লোগান দিয়ে ১৪ অগাস্ট রাত ১১:৫৫ মিনিটে যাদবপুর, কলেজ স্ট্রিট এবং অ্যাকাডেমি চত্বরে জমায়েতের ডাক দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে জেলায় জেলায় এই কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। এই কর্মসূচির আহ্বায়ক সমাজতত্ত্বের গবেষক, প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র রিমঝিম সিনহা। এদিন এবিপি আনন্দের ঘণ্টাখানেক সঙ্গে সুমন অনুষ্ঠানে এসে তিনি বলেন, “আমি সাধারণ মানুষের পক্ষের রাজনীতি করি। ভাবিনি এরকম ভাইরাল হবে।”
‘রাত দখল করো’ কর্মসূচিতে আসার আহ্বান জানিয়ে বলা হয় কোনও রাজনৈতিক দলের পতাকা ছাড়া এই কর্মসূচিতে যোগ দিতে হবে। এপ্রসঙ্গে এদিন রিমঝিম জানান, “ফেসবুকে যখন এই ডাকটা দিই আশা করিনি এরকম ভাইরাল হবে। আশাবাদী ছিলাম যে কলকাতা বুকে অনেক মানুষ আসবেন। এখন যে পর্যায় এই ডাকটা পৌঁছে গিয়েছে ৫০ থেকে ৬০ জন কোঅর্ডিনেটরের সঙ্গে আমি নিজে কথা বলতে পেরেছি। এই কোঅর্ডিনেটরের স্বতঃস্ফূর্তভাবে নিজেদের এলাকায় এই কর্মসূচির ডাক দিয়েছেন। তাঁরা সবাই চাইছেন রাত জাগতে। প্রচুর মহিলা তো বটেই পুরুষরা যোগ দিচ্ছে। একটা ঘটনার পর শুধু বিচার চেয়ে থেমে গেলে এই ধরনের ঘটনা বাড়তে থাকবে। ঔদ্ধত্য বাড়বে। কোনও সিস্টেমের পরিবর্তনের ডাক দেওয়া হলে নানা ধরনের কথা শুনতে হয়। আমাদের মোটামুটি প্রতিদিন প্রমাণ করতে হয় সঠিক নারী হওয়া কাকে বলে। কোন চুলের ছাঁটে, কোন জামাটা পরলে সুশীল নারী হতে পারব সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে সারা রাত বাইরে থাকার পরিকল্পনা নিই, তাহলে কথা শুনতে হবে। যাঁরা এই কর্মসূচিতে যোগ দিচ্ছেন মনে হয় তাঁরা নিজেরাও জানেন, হয়ত তাঁদের পরিজনদের, বাইরের মানুষের থেকে এই ধরনের কথা শুনতে হবে।”
এদিকে এদিন উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী সোশাল মিডিয়ায় পোস্ট করে লিখেছেন, “দিনহাটার কেউ কেউ কাল রাতের দখল নিতে চাইছেন। আমার সমর্থন থাকল। তবে স্বামীর অত্যাচার থেকে বাঁচতে রাতে ফোন করবেন না।” এপ্রসঙ্গে রিমঝিম বলেন, “একটা সামাজিক পরিকাঠামোর মধ্যে আমরা বাস করি। পরিকাঠামোকে টিকিয়ে রাখার পক্ষে প্রচুর মানুষ থাকেন। উল্টো দিকে যখনই কোনও কথা আসে তখন পরিকাঠামোর পক্ষে যাঁরা থাকেন, তাঁরা এই কথাটাই বলেন; এইটার জন্য ফোন করবেন না, আসবেন না। মুশকিল হল যখন তাঁরা দায়িত্বপ্রাপ্ত হচ্ছেন তখন তাঁরা ফোনও নিতে বাধ্য। আজকে আমি নিমিত্ত মাত্র। আমার কাছে প্রচুর ফোন আসছে। সেটাই হওয়ার কথা। কোনও মন্ত্রী বা প্রশাসনিক পদে থাকা কাউকে যদি ডমিস্টিক ভায়োলেন্সের জন্য কেউ ফোন করেন সেটাই স্বাভাবিক।”
আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।
আরও পড়ুন: R G Kar Protest: ‘দেখব তদন্ত কোন দিকে গড়াচ্ছে’ আরজি কর কাণ্ডে CBI নির্দেশ প্রসঙ্গে মন্তব্য আন্দোলনকারীদের
আরও দেখুন