‘ছেলেকে ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়ার বানান, কিন্তু ভাল হিন্দু বানান, ঘরে রাখুন ধারাল অস্ত্র,’ সুকান্ত
কলকাতা: প্রকাশ্য সভায় বিতর্কিত মন্তব্য কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা রাজ্য বিজেপি-র সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের। ধর্মরক্ষায় হিন্দুদের একত্রিত হওয়ার পাশাপাশি, বাড়িতে ধারাল অস্ত্র রাখার নির্দেশ দিলেন তিনি। সেই নিয়ে জোর বিতর্ক শুরু হয়েছে। একজন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী, কোনও দলের রাজ্য সভাপতি হিসেবে সুকান্তর থেকে এমন মন্তব্য কাম্য ছিল না বলে পাল্টা মন্তব্য করেছেন রাজ্যের মন্ত্রী তথা তৃণমূলের শীর্ষ নেতা ফিরহাদ হাকিম। সুকান্ত যে ভাষায় কথা বলেছেন, তার সঙ্গে সন্ত্রাসবাদীদের ভাষার মিল রয়েছে বলে তুলনা টানেন তিনি। (Sukanta Majumdar)
সম্প্রতি একটি প্রকাশ্য সভায় হিন্দুদের একত্রিত হওয়ার বার্তা দেন সুকান্ত। তাঁকে বলতে শোনা যায়, “যদি নিজেদের ধর্ম, সংস্কৃতি এবং আগামী প্রজন্মকে বাঁচাতে চান, ছেলেকে ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়ার যা বানানোর বানান। কিন্তু একই সঙ্গে ভাল হিন্দু বানান, যে নিজের ধর্মের প্রতি সমর্পিত হবে। আর বাড়িতে ধারাল অস্ত্র রাখুন। আপনার ছেলে যদি ধর্ম-সংস্কৃতি রক্ষা করতে না পারে, সে ডাক্তার-অফিসার যা-ই হোক না কেন, ফুটে যাবে। দু’পয়সা দানন থাকবে না। উদ্বাস্তু হয়ে অন্য কোথায় চলে যেতে হবে।” (West Bengal BJP)
সুকান্ত আরও বলেন, “এখনও সময় আছে। নিজের ধর্মরক্ষার অধিকার আছে সবার। তাই ধর্মরক্ষার জন্য একত্রিত হোন। যেখানে যেখানে সম্ভব, ছোট মাপের হোক, মন্দির তৈরি করুন, বজরঙ্গবলির মন্দির তৈরি করুন। আমরা কাউকে আক্রমণ করতে যাব না। হিন্দু সমাজ কখনও কোথাও আক্রমণ করতে যায় না। কিন্তু আক্রমণ হলে আত্মরক্ষার অধিকার তো আছে আমাদের! বাঁচতে তো হবে!”
ঘরে অস্ত্র মজুত রাখার সপক্ষে সুকান্তর যুক্তি, “পুলিশ আসা পর্যন্ত তো বাঁচতে হবে! নরেন্দ্র মোদি BSF নামাবেন, অমিত শাহ নামাবেন। কিন্তু সেই অব্দি তো বাঁচতে হবে! তত ক্ষণ পর্যন্ত কে বাঁচাবে? দিদির পুলিশ বাঁচাবে না। কারণ ওটা ফিরহাদ হাকিম সাহেবের পুলিশ, দিদির পুলিশ বাঁচাবে না কারণ ওটা সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী, শেখ শাহজাহান, সওকত মোল্লার পুলিশ।”
সুকান্তর এই মন্তব্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন ফিরহাদ। তাঁর বক্তব্য, “একজন সন্ত্রাসবাদী যে ভাষায় কথা বলে, কোনও দলের রাজ্য সভাপতি বা কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর সেই ভাষায় কথা বলা উচিত নয়। ‘হিন্দু নয়, মুসলমান ওরা, এ জিজ্ঞাসে কোন জন’? আপনারা প্রথমে ভারতীয় তৈরি করুন, মানুষ তৈরি করুন। এই বার্তা আসা উচিত। আমরা যাঁরা ভারতের মানুষ, তাঁরা সর্বধর্ম সমন্বয়ে বিশ্বাস করি। যাঁরা প্রকৃত হিন্দু, রামকৃষ্ণ পরমহংসদেব বিশ্বাস করতেন, যত মত তত পথ। তাঁর বার্তাই ভারতের বার্তা, সুকান্ত বা ভাগবতের বার্তা ভারতের বার্তা নয়। মানুষ তৈরি করুন, ভারতীয় তৈরি করুন ভারতীয় হিসেবে গর্বিত হই যাতে, সেই কাজ করুন।”
আরও দেখুন