এক সপ্তাহ ধরে পরিকল্পনা, পায়েসে ওষুধ মেশালেও হয়নি কাজ, ট্যাংরার বাড়িতে কী ঘটেছিল সেই রাতে?

<p><strong>কলকাতা:</strong> ১৭ তারিখ, অর্থাৎ মঙ্গলবার, ওষুধ মেশানো পায়েস খেয়ে আত্মহত্য়ার সিদ্ধান্ত নেয় গোটা পরিবার। কিন্তু, বাড়ির ছোট মেয়ে, প্রিয়ম্বদা ছাড়া আর কারোরই মৃত্য়ু হয়নি। তারপরই ২ বউ ও কিশোরকে খুনের সিদ্ধান্ত। কিন্তু খুনের মুহূর্তে জেগে যায় নাবালক। তারপরই তিনজন বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়েন। রাস্তায় দুর্ঘটনা ঘটিয়ে আত্মহত্য়ার পরিকল্পনা নেন। পুলিশ সূত্রে দাবি, ট্য়াংরাকাণ্ডে জিজ্ঞাসাবাদে এমনটাই দাবি করেছেন দুই ভাই। পুলিশ সূত্রে খবর, ২ ভাই সুস্থ হলেই তাঁদের গ্রেফতার করা হতে পারে।</p>
<p><strong>ট্যাংরার বাড়িতে কী ঘটেছিল সেই রাতে?</strong></p>
<p>ট্য়াংরাকাণ্ডে নিহত ৩ মহিলার ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টে কার্যত স্পষ্ট খুন হয়েছেন তিন জন। এর মধ্য়ে সামনে এসেছে, আরেক চাঞ্চল্য়কর তথ্য়। পুলিশ সূত্রে দাবি, হাসপাতালে ভর্তি দুই ভাইকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা গেছে, এই ঘটনার এক সপ্তাহ আগেই, গোটা পরিবারকে শেষ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল বাড়ির বড়রা। শিউড়ে দেওয়ার মতো বিষয় হল, কীভাবে নিজেদের শেষ করবেন, তা নিয়ে দফায় দফায় নিজেদের মধ্য়ে আলোচনাও করেন দুই ভাই এবং তাঁদের স্ত্রীরা। পুলিশ সূত্রে খবর, ১০ ফেব্রুয়ারি, প্রথম ছোট ভাই প্রসূনকে আত্মহত্য়ার পরিকল্পনা জানায় দাদা প্রণয় দে। ১২ই ফেব্রুয়ারি দুই ভাই, স্ত্রীদের সঙ্গে আলোচনা করে। তারপর ঠিক করে, ঋণের ভার থেকে মুক্তি পেতে, মৃত্য়ু ছাড়া আর কোনও উপায় নেই। পুলিশ সূত্রে দাবি, দুই ভাইয়ের দাবি অনুযায়ী, স্ত্রীরা আত্মহত্য়ার সিদ্ধান্তে সম্মতি দেন। তবে সেই সিদ্ধান্ত জানানো হয়নি বাড়ির ২ ছোট ছেলে-মেয়েকে।</p>
<p>১৭ তারিখ, অর্থাৎ, সোমবার পরিবারের ৬ সদস্য় একসঙ্গে ওষুধ মেশানো পায়েস খেয়ে আত্মহত্য়ার করবে বলে ঠিক করে। ওষুধগুলো বের করে রাংতাগুলোকে নষ্ট করে দেয়। যাতে কেউ টের না পায়। কাগজে রাখা হয় মেডিসিন। কিন্তু, পায়েসে ওষুধের গন্ধ থাকায় তা খেতে চায়নি প্রণয় ও প্রসূনের সন্তান, দুই ভাই-বোন। বাড়ির বড়রা তখন সবাইকে শেষ করে দিতে মরিয়া। তাই পায়েসে মেশানো হয় তুলসি পাতা ও নিমপাতা। পুলিশ সূত্রে দাবি, আহত প্রণয় ও প্রসূন জানিয়েছেন, সেই পায়েস বাড়ির সবাই খায়। এরপর রাতে, একটি ঘরে প্রণয়, তাঁর স্ত্রী ও নাবালক ছেলে ঘুমিয়ে পড়ে। আরেকটি ঘরে ঘুমোতে যান প্রসূন ও তাঁর স্ত্রী রোমি। তাঁদের মেয়ে প্রিয়ম্বদা ঘুমোয় আরেকটি ঘরে। <br /><br />১৮ তারিখ, অর্থাৎ, মঙ্গলবার সকালে ঘুম ভেঙে যায় বড় ভাই প্রণয়ের। তিনি শৌচাগারের দিকে যেতে গিয়ে দেখেন, ছোট ভাই জেগে। তিনি জানান, তাঁর মেয়ের মৃত্য়ু হয়েছে। স্ত্রী রোমি ঘুমে অচেতন। তাঁর মৃত্য়ু হয়নি। একই অবস্থা ছিল প্রণয়ের স্ত্রী সুদেষ্ণা ও তাঁদের ছেলের। তাঁরা ঘুমে অচেতন ছিলেন। পুলিশ সূত্রে দাবি, হাসপাতালে থাকা প্রণয় এবং প্রসূনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা গেছে, এরপর দুই ভাই মিলে ঠিক করে, স্ত্রীদের দু’হাতের শিরা ও নলি কেটে দেবে। ততক্ষণে প্রসূন ও রোমির মেয়ে প্রিয়ম্বদার মৃত্য়ু হয়েছিল। তাও, মৃত্য়ু নিশ্চিত করতে তাঁর শ্বাসরোধ করা হয়। সেই কারণেই তাঁর ঠোঁটের ওপর কালশিটের দাগ পাওয়া গেছে। নাবালক কিশোরকেও, একইভাবে হাতের শিরা কেটে শেষ করে দেওয়ার চেষ্টা হয়েছিল। কিন্তু, সেই সময়ই ঘুম ভেঙে যায় কিশোরের। তখন তাকে নিয়ে ২ ভাই ও নাবালক পুত্র চলে যায় বাড়ির তিনতলায়। বন্ধ করে দেওয়া হয় ঘরের সব আলো, মোবাইল ফোন। <br /><br />পুলিশ সূত্রে খবর, এক ভাই জানিয়েছেন, ফোন বন্ধ করার আগে এক পাওনাদার ফোন করেন। বাড়িতে আসবেব বলে জানান। দুই ভাই তাঁকে বলেন, তাঁদের কাছে খবর আছে, বাড়িতে রেড হবে। এই কথা বলে পাওনাদারকে আসতে বারণ করা হয়। এরপর থেকেই অন্ধকারে ডুবে যায় গোটা বাড়ি। এরপর মঙ্গলবার গভীর রাতে ই এম বাইপাসে, অভিষিক্তা মোড়ের কাছে মেট্রো পিলারে গাডির ধাক্কা। সামনে আসে ট্য়াংরার ভয়াবহ ঘটনা। </p>
<p><strong>আরও পড়ুন: <a title="NRS New Notification: বহিরাগত প্রবেশ রুখতে কড়া পদক্ষেপ, NRS-এ চালু হচ্ছে হাজিরার নতুন নিয়ম" href="https://bengali.abplive.com/district/kolkata-nrs-new-notification-strict-measures-to-prevent-outside-entry-1121602" target="_self">NRS New Notification: বহিরাগত প্রবেশ রুখতে কড়া পদক্ষেপ, NRS-এ চালু হচ্ছে হাজিরার নতুন নিয়ম</a></strong></p>
Source link