কলকাতা: RG কর হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসক খুনের ঘটনায় তোলপাড় পড়ে গিয়েছে সর্বত্র। কিন্তু অভিযুক্ত সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় রায় নির্বিকার বলে জানা যাচ্ছে। অপরাধ স্বীকার করলেও, তাঁর কোনও অনুতাপ নেই বলে লালবাজার সূত্রে জানা যাচ্ছে। ফাঁসি দিলে দেওয়া হোক বলেও তিনি মন্তব্য করেছেন বলে খবর। পাশাপাশি, জানা গেল, খুনের আগে মদ্যপান করেছিলেন সঞ্জয়। খুনের পর পুলিশের ব্যারাকে ফিরেও মদ্য়পানও করেন। তার পর ঘুমিয়ে পড়েন। এমনকি পুলিসের সামনেও মদ্যপান করেই হাজির হয়েছিলেন তিনি। (RG Kar Medical Student Death)
তদন্তে জানা গিয়েছে, ঘটনার রাতে হাসপাতালে ঢুকে তরুণী চিকিৎসককে খুনের আগে মদ্য়পান করেছিলেন সঞ্জয়। খুন করে পুলিশ ব্যারাকে ফিরে গিয়ে ফের মদ্যপান করেন তিনি। এর পর ঘুমিয়ে পড়েন। পরদিন সরকারও ভাবলেশহীন ছিলেন তিনি। পুলিশের সামনে যখন হাজির হন, মদ্যপান করেই হাজির হন। সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে সঞ্জয়কে চিহ্নিত করেন এক হোমগার্ড। ডেকে পাঠালেও, নেশাগ্রস্ত অবস্থায় হাজির হন। নেশা করার কথা স্বীকারও করে নেন তিনি। (Medical Student Death)
পুলিশ সূত্রে জানা যাচ্ছে, RG কর হাসপাতালে অবাধ ঘোরাফেরা ছিল সঞ্জয়ের। সিভিক ভলান্টিয়ার হলেও, কাজে অনিয়মিত ছিলেন তিনি। প্রভাব খাটিয়ে কর্মস্থলেও নিয়মিত পাওয়া যেত না তাঁকে। খুব কমই দেখা যেত তাঁকে। এতটাই প্রভাব ছিল সঞ্জয়ের যে তিনি পুলিশ ব্যারাকে থাকতেন, যা সিভিক ভলান্টিয়ারদের পাওয়ার এক্তিয়ারই নেই। বাড়ি ভবানীপুরে হলেও, উল্টোডাঙায় ফোর্থ ব্যাটেলিয়নের ব্যারাকে থাকতে শুরু করেন।
আরও পড়ুন: RG Kar Medical Student Death: প্রশ্নের মুখে RG করের নিরাপত্তা ব্যবস্থা, সাসপেন্ড করা হল ২ নিরাপত্তারক্ষীকে, বসছে সিসি ক্যামেরা
সঞ্জয় পুলিশের মতো মোটরবাইকে চেপেও ঘুরতেন বলে জানা গিয়েছে। এমনকি পুলিশের মোটরবাইক তিনি নিজের নামে অ্যালট করে নেন। পুলিশের কাছে জমা দেওয়া তো দূর, সারাক্ষণ বাইকটি তাঁর কাছেই থাকত। যেখানে ইচ্ছে ঘুরে বেড়াতেন তিনি। এমনকি সংগঠনের কাজে যাচ্ছেন বলে জানিয়ে পুলিশের গাড়িও বাগিয়ে নিতেন বলে জানতে পেরেছে পুলিশ। এতটাই দাপট ছিল যে RG কর হাসপাতালে অবাধ যাতায়াত ছিল তাঁর।
এমনকি গ্রেফতার হওয়ার পরও সঞ্জয় নির্বিকার বলে জানা গিয়েছে। জেরায় অপরাধ স্বীকার করে নিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। তবে এর জন্য তাঁর কোনও অনুতাপ নেই বলে জানা গিয়েছে। সূত্রের খবর, তদন্তকারীদের সঞ্জয় বলেন, “ফাঁসি দিলে দিন”। সেই সঙ্গে, পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে পুলিশের অনুমান, তরুণী চিকিৎসককে শ্বাসরোধ করে খুনের পর ধর্ষণ করেন সঞ্জয়। এই ঘটনায় অন্য কারও যুক্ত থাকার কোনও ইঙ্গিত মেলেনি এখনও পর্যন্ত।
আরও দেখুন