সুদেষ্ণা পাল

গোয়ার পানাজিতে অনুষ্ঠিত হতে চলেছে BRICS সামিট। উরি হামলার প্রেক্ষিতে ইসলামাবাদে আয়োজিত SAARC সামিট বাতিল হয়েছে। ভারত, বাংলাদেশ, ভুটান, শ্রীলঙ্কা, আফগানিস্তান, মালদ্বীপ একযোগে সরে দাঁড়ায় সামিট থেকে। আর তাতেই বালিত করতে হয় এই সামিট। এবার ভারতের মাটিতেই BRICS সামিট। যদিও, BRICS গোষ্ঠীভুক্ত দেশগুলির মধ্যে পাকিস্তান নেই। কিন্তু রয়েছে পাকিস্তানের ‘সর্বক্ষণের বন্ধু’ চিন। আর সেখানেই উঠে আসছে নানা প্রশ্ন, নানা সম্ভাবনা।

এক, ভারত এই সামিটে কতটা সুবিধা করতে পারবে? উরি হামলার প্রেক্ষিতে যেভাবে সার্ক গোষ্ঠীভুক্ত দেশগুলির সমর্থন আদায়ে সফল হয়েছিল ভারত, এবার BRICS সামিটেও কি ভারত পারবে পাকিস্তান ও সন্ত্রাসবাদ ইস্যুতে বাকি দেশগুলিকে এককাট্টা করতে? ইতিমধ্যেই উরি হামলার পিছনে পাকিস্তানের হাত রয়েছে বলে ভারত যে অভিযোগ করেছে, তা অযৌক্তিক বলে জানিয়েছে চিন। সেক্ষেত্রে BRICS সামিটে পাকিস্তানের হয়ে চিনের সওয়াল ও ভারত বিরোধিতা যে থাকবে সেটা দিনের আলোর মতই পরিষ্কার।

দুই, BRICS গোষ্ঠীভুক্ত দেশগুলির মধ্যে রয়েছে ব্রাজিল ও দক্ষিণ আফ্রিকার মত অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল দেশ। রাশিয়া একসময় অর্থনৈতিকভাবে যথেষ্ট শক্তিশালী থাকলেও বর্তমানে তা ধুঁকছে। তবে ভারতের সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের সিদ্ধান্তকে সমর্থন জানিয়েছে রাশিয়া। বাকি রইল ব্রাজিল ও দক্ষিণ আফ্রিকা। সেক্ষেত্রে ২০১০ থেকে দক্ষিণ আফ্রিকার সঙ্গে মজবুত অর্থনৈতিক সম্পর্ক রয়েছে ভারতের। দক্ষিণ আফ্রিকার কয়লা রপ্তানির সবচেয়ে বড় মার্কেটটাই হল ভারত (১.৪ বিলিয়ন টন)। দুদেশের মধ্যে রয়েছে সামরিক সহযোগিতাও। পাশাপাশি সাম্প্রতিক সময়ে ব্রাজিলের সঙ্গে ভারতের কূটনৈতিক সম্পর্কও যথেষ্ট মজবুত হয়েছে। বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, ওষুধ, মহাকাশ প্রভৃতি ক্ষেত্রে দুদেশের মধ্যে আদান-প্রদান বেড়েছে। বেড়েছে বাণিজ্যের পরিমাণও। ২০১৪-য় ৬ষ্ঠ BRICS সামিটের সময় দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে অনেকটাই এগিয়ে নিয়ে যান মোদী। এবার BRICS-এর আসরে সেই সম্পর্কেরই অগ্নিপরীক্ষা।

ইতিমধ্যেই সামিটের খসড়া ঘোষণাপত্রে জোর দেওয়া হয়েছে আঞ্চলিক রাজনৈতিক পরিস্থিতির উপর। ৭০ অনুচ্ছেদের ঘোষণাপত্রে বারবারই উঠে এসেছে সাম্প্রতিক অবস্থা।  আয়োজক দেশ হিসেবে ভারতও এদিকে আহ্বান জানিয়েছে পূর্বদিকের প্রতিবেশী দেশগুলিকে। সামিটে উপস্থিত থাকবে BIMSTEC গোষ্ঠীর বাংলাদেশ, মায়ানমার, শ্রীলঙ্কা, থাইল্যান্ড, ভুটান ও নেপাল। এখন ভারতের লক্ষ্য, এই অঞ্চলে পাকিস্তানকে একঘরে করা। (“isolating countries that provide shelter to terror groups and help in arming these groups.”) যারজন্য অন্যতম মঞ্চ অবশ্যই হতে পারে পানাজিতে আয়োজিত BRICS সামিট। কিন্তু আবার সেখানেই ভারতের লক্ষ্যসাধনে পথের কাঁটা হয়ে দাঁড়াতে পারে চিন। অন্যদিকে চিনকে বেশি ঘাঁটালে ভেস্তে যেতে অদূর ভবিষ্যতেও NSG গ্রুপে ভারতের ঢোকার সম্ভাবনা।





Source link

Shares:
Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *