কলকাতা: নাগাড়ে দ্বিতীয় মরশুমে ডুরান্ড কাপ (Durand Cup) জয়ের লক্ষ্যে সেমিফাইনালে বেঙ্গালুরু এফসির মুখোমুখি হয়েছিল মোহনবাগান সুপার জায়ান্ট (Mohun Bagan Super Giant vs Bengaluru FC)। সেই ম্যাচে পেনাল্টি শ্যুট আউটে জয় পেয়ে ডুরান্ড কাপের ফাইনালে সবুজ মেরুন। কোয়ার্টার ফাইনালের মতোই ফের একবার দলের নায়ক গোলরক্ষক বিশাল কায়েথ (Vishal Kaith)।
ম্যাচের প্রথমার্ধে বড় ধাক্কা খায় মোহনবাগান। চোটের কারণে ২৬ মিনিটের মাথায় মাঠ ছাড়তে বাধ্য হন দলের অধিনায়ক শুভাশিস বসু। তাঁর বদলে তরুণ দীপেন্দুকে মাঠে নামানো হয়। দুই দলই প্রথমার্ধে গোলের বেশ কয়েকটি ভাল সুযোগ পায়। লিস্টন কোলাসো দূরপাল্লার শটে গুরপ্রীতকে পরীক্ষা করে দেখেন। ঠিক পরের মুহূর্তে মাঝমাঠে বল ক্লিয়ার করতে গিয়ে হালকা ভুল আর তাতেই বল পেয়ে যান সুনীল ছেত্রী। গোলের বড় সুযোগ পেয়ে গিয়েছিলেন ছেত্রী। তবে দুরন্ত ডিফেন্ডিংয়ে আলবার্তো সেই সুযোগ প্রতিহত করেন। সাহাল মোহনবাগানের হয়ে রক্ষণভেদী পাস বাড়ানোর চেষ্টা করছিলেন বারংবার।
অপরদিকে, বিনীথ ডান উইংয়ে নিজের চোড়া গতিতে বেশ নজর কাড়ছিলেন। তিনি বেঙ্গালুরুর হয়ে এক দুরন্ত রানে গোলের সুবর্ণ সুযোগ করে দেন। তাঁর গতি সামলাতে নাজেহাল লিস্টন কোলাসো বিনীথকে বক্সের মধ্যে ফাউল করায় পেনাল্টি পায় বেঙ্গালুরু। সেই পেনাল্টি থেকে গোল করতে কোনওরকম ভুল করেননি ছেত্রী। পিছিয়ে পড়ার পর তেড়েফুড়ে আক্রমণে যায় মোহনবাগান। দুই দুইবার বারে বল মারেন মোহনবাগান ফুটবলাররা। তবে গোল আসেনি। ০-১ পিছিয়েই মাঠ ছাড়ে সবুজ মেরুন বিগ্রেড।
অবশ্য গতবারের ডুরান্ড সেমিফাইনালেও কিন্তু এফসি গোয়ার বিরুদ্ধে পিছিয়ে ছিল ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন মোহনবাগান। তাই সবুজ মেরুনরা যে হতাশায় ভেঙে পড়বে না, তা বলাই বাহুল্য। তবে দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে এক বড় ভুলে গোলের সামনে বল পেয়ে যান বেঙ্গালুরুর জর্জ পেরেরা। বিশাল কায়েথ বল বাঁচাতে এগিয়ে আসলেও ব্যর্থ হন। পারেরার পাস থেকে ফাঁকা গোলে বল জড়িয়ে বেঙ্গালুরুর লিড দ্বিগুণ করেন বিনীথ। ম্যাচের ঘণ্টাখানেকের মাথায় গোলের বড় সুযোগ পান গ্রেগ স্টুয়ার্ট। তবে গুরপ্রীতের মিসকিক দখলে আনলেও মোহনবাগান ফরোয়ার্ডের হেডার তেকাঠির বাইরে দিয়ে চলে যায়।
কিন্তু ৬৬ মিনিটে ফের একবার সুযোগ আসে। পেনাল্টি বক্সে মনবীরের জার্সি ধরে টানা হলে পেনাল্টি পায় সবুজ মেরুন। সেই পেনাল্টি থেকে দিমিত্রি পেত্রাতোস সবুজ মেরুনের ব্যবধান অর্ধেক করেন। ম্যাচে ফের একবার দুই গোলের ব্যবধানে এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ ছিল বেঙ্গালুরুর কাছে। তবে হোলিচরণ নাজ়রির ফ্রি-কিক থেকে গোলমুখী হেডার মারেন পারেরা। তবে অনবদ্যভাবে সেই শট বাঁচিয়ে মোহনবাগানকে ম্যাচে রাখেন বিশাল কায়েথ। মোহনবাগানের বাড়তি আক্রমণে বেঙ্গালুরু রক্ষণাত্মক ফুটবল খেলার পরিকল্পনাই বেছে নেয়। তবে তা কাজে লাগেনি। ৮৫ মিনিটে পেত্রাতোসরে কর্নার অনিরুদ্ধ থাপার পায়ে গিয়ে পড়ে। বক্সের বাইরে থেকে জোরাল শটে থাপা মোহনবাগানকে সমতায় ফেরান। ম্যাচের নির্ধারিত ৯০ মিনিট ২-২ শেষ হয়। খেলা গড়ায় পেনাল্টিতে।
সেখানে বিশাল কায়েথ পরপর দুই সেভ করে মোহনবাগানকে ফাইনালে পৌঁছে দেন বিশাল কায়েথ। ৪-৩ পেনাল্টি জেতে সবুজ মেরুন। দুই দলের ফুটবলারাই প্রথম তিনটি করে পেনাল্টিতে কোনও ভুল করেননি। দুুরন্ত পেনাল্টি নেন সকলে। তবে চতুর্থ শটে পেত্রাতোস গোল করলেও নাজ়রির শট বাঁচান কায়েথ। তবে পরের শটে গ্রেগ স্টুয়ার্টকে রুখে দিয়ে বেঙ্গালুরুকে লড়াইয়ে টিকিয়ে রাখেন গুরপ্রীত। কিন্তু জোভানোভিচের শটও কায়েথ বাঁচিয়ে দিলে মোহনবাগানের ফাইনালে পৌঁছনো নিশ্চিত হয়ে যায়।
আরও পড়ুন: ‘হয়তো আর দুই, তিন বছর পর…’ নিজের অবসর পরিকল্পনা নিয়ে আপডেট দিলেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো
আরও দেখুন