বালি খাদানের টাকার ভাগ নিয়ে গোষ্ঠীর সংঘর্ষ, পরপর বোমাবাজিতে কেঁপে উঠল বীরভূমের কাঁকরতলা !

ভাস্কর মুখোপাধ্যায়, কাঁকরতলা (বীরভূম) : বীরভূমের কাঁকড়তলার জামালপুরে বেআইনি বালি খাদানের টাকার ভাগ নিয়ে দুই গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষ, বোমাবাজি। বালি ঘাটের বখরায় ধুন্ধুমার পরিস্থিতির জেরে ২ জন আহত হয়েছেন। ঘটনায় ৯ জনকে ইতিমধ্যেই আটক করা হয়েছে। দুই পক্ষের সংঘর্ষে দফায় দফায় বোমাবাজি চলে। ঘটনার জেরে চরম উত্তেজনা ছড়ায়। ময়দানে নামতে হয় বীরভূমের জেলাশাসক ও পুলিশ সুপারকে।
ঘটনা নিয়ে গ্রামবাসী এবং বিরোধীদের প্রশ্ন, প্রকাশ্য দিনে কীভাবে এরকম বোমাবাজি হল ? তাহলে কি পুলিশ কোনও খবর রাখেনি। কাঁকরতলা থানার পুলিশ কী করছিল ? কারণ, এই যে বালিঘাট নিয়ে বিতর্ক, সেই বালিঘাটটি হচ্ছে পশ্চিম বর্ধমানে। সেখান থেকে বালি কাটতে কাটতে বীরভূম পর্যন্ত চলে এসেছে বলে অভিযোগ। বীরভূমে রাস্তা করে গ্রামের মধ্যে দিয়ে ট্রাক যাতায়াত করে। এখন নিয়ম হয়েছে, গ্রামের মধ্যে দিয়ে কোনও বালিবোঝাই ট্রাক যায়, তাহলে তাকে টাকা দিতে হবে। সেই টাকার বখর নিয়েই ঝামেলা। কারণ, কোন গোষ্ঠী এই টাকা পাবে সেটা নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরেই ঝামেলা চলছিল। গতকাল রাত থেকে ব্যাপক বোমাবাজি শুরু হয় এলাকায়। আজ সকালেও ব্যাপক বোমাবাজি হয়েছে. পুলিশ সুপার জানিয়েছেন, ঘটনায় দুই জন আহত হয়েছেন। তাঁদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তঁদের আটক করা হয়েছে। একইভাবে ৭ জনকে আটক করা হয়েছে। অর্থাৎ, মোট আটকের সংখ্যা নয়। তিনি জানিয়েছেন, যাঁরা এই ঘটনায় জড়িত তাঁদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কিন্তু, কীভাবে এই ঘটনা ঘটল ? অনুব্রত মণ্ডল স্বীকার করেছেন, বেআইনি বালি খাদান শুধু এই কেষ্টপুর নয়। একইভাবে রয়েছে লাভপুর, নানুর, মহম্মদবাজার এবং সাঁইথিয়ায়। তিনি বলেছেন, জেলাশাসক বলছি, এখনই বিষয়টি বন্ধ করতে হবে।
দেখা গেছে, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের পর জেলাশাসক রাত ৩টের সময় গিয়ে অভিযান চালিয়েছেন। পুলিশ সুপার থেকেছেন সঙ্গে। কিন্তু, তারপরও এই বালিঘাট বন্ধ করা যায়নি।
ঘটনা নিয়ে রাজ্যের শাসক দলের বিরুদ্ধে তীব্র আক্রমণ শানিয়েছে বিজেপি। দুবরাজপুরের বিজেপি বিধায়ক অনুপ সাহা বলেন, “তৃণমূল কংগ্রেসের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে যে ব্যাপক বোমাবাজি, এর মূল কারণ হল…অবৈধ যে বালি চালান চলছে, সেই বালির টাকার কাটমানি খাওয়া। অনুব্রত মণ্ডল ও কাজল শেখের ভাগ বাঁটোয়ারা নিয়ে যে তোলাবাজি …তার বোমাবাজিতে একটা মানুষের পা উড়ে যাচ্ছে। এলাকায় আজ যেভাবে বোমাবাজি হয়েছে, তাতে ধিক্কার জানাই তৃণমূল কংগ্রেসকে।”
আরও দেখুন